Bardhaman News : ডেঙ্গির বাড়াবাড়ির মধ্যেই ফের কোভিডের হানা রাজ্যে! বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে কোভিডে মৃত্যু হল দুই প্রৌঢ়ের

0
456


দেশের সময় , বর্ধমান : বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সন্ধ্যায় ভাতারের ৬০ বছরের এক প্রৌঢ় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। হাসপাতালে কোভিড পরীক্ষার পর তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। রবিবার সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। অন্যদিকে, সোমবার সকালে মারা যান দেওয়ানদিঘি থানা এলাকার বাসিন্দা ৬১ বছরের এক প্রৌঢ়। তিনি কয়েকদিন আগে বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি হন। পরবর্তী সময়ে তাঁর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে।

পরপর দু’দিনের মধ্যেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হল কোভিড (Covid death) আক্রান্ত দুজনের।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যে দুজন মারা গিয়েছেন তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে অন্য রোগে ভুগছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন রবিবার সন্ধ্যায় ও অন্যজন সোমবার সকালে মারা যান। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছেন আরও কয়েকজন।

হাসপাতালসূত্রে খবর, বর্তমানে ১৪ জন রোগী ভর্তি আছেন এখানে। তাদের চিকিৎসা চলছে। এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত না হওয়ার আবেদন করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ বলেন, “সম্প্রতি যে দুজন করোনায় মারা গেছেন তাঁদের অন্যান্য শারীরিক সমস্যা খুবই জটিল ছিল। সেই কারণে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। তাই এটা নিয়ে আতঙ্কের কোনও জায়গা নেই। কারণ হাসপাতালে কোভিডের সঙ্গে লড়াইয়ের পরিকাঠামো তৈরি রয়েছে।”

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রাধারানি ওয়ার্ডে কোভিডের চিকিৎসা হয়। কোভিডের ভরা মরশুমে পুরো রাধারানি ওয়ার্ডটিই কোভিড ওয়ার্ড করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে সংক্রমণ কমতেই এই ওয়ার্ডের কিছুটা অংশ অন্য চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়। কারণ বাকি ওয়ার্ডে কোভিডের চিকিৎসা হলেও রোগীর সংখ্যা ছিল একেবারেই হাতে গোনা।

হাসপাতালের দাবি, বর্তমানে কোভিড ওয়ার্ডে ১৪ জন রোগী ভর্তি আছেন। একটি পুরুষ এবং একটি মহিলা বিভাগে রেখে তাঁদের চিকিৎসা হচ্ছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ কৌস্তভ নায়েক বলেন, “এখনও জেলায় কোভিড ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করেনি। তবে হাসপাতালের পরিকাঠামো তৈরি রাখা হচ্ছে। কয়েকমাস আগে বায়ো মেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়াররা মকড্রিল করেন। ভেন্টিলেটর, বায়োপাপ মেশিন, অক্সিজেনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সমস্ত ব্যবস্থা তৈরি।”

উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসে সারা রাজ্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজেও কোভিডের মকড্রিল হয়। পাশাপাশি, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কোভিড নিয়ে আলোচনা হয়। দেশে করোনা ফের কিছুটা মাথাচাড়া দিচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে কোভিড বৃদ্ধি পেলে কীভাবে মোকাবিলা করা যাবে সেই নিয়েই আলোচনা হয়।

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ বলেন, তাঁরা যে কোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি। শতাধিক কোভিড বেডের পাশাপাশি কোভিড আইসিইউ, সিসিইউ-সহ সমস্ত ব্যবস্থা তৈরি রাখা হয়েছে। হাসপাতালের দুটি নিজস্ব অক্সিজেন প্ল্যান্ট থাকায় অক্সিজেন সরবরাহ নিয়েও সমস্যা হবে না। তাই কোভিড নিয়ে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য মানুষকে আবেদন করেন। তিনি বলেন, “শুধু সতর্ক থাকতে হবে। এই সময় জ্বর-জ্বালা হচ্ছে, তাই বাড়তি সতর্কতা থাকা দরকার।”

তবে ডেঙ্গির বাড়াবাড়ির মধ্যেই ফের কোভিডের হানা দেওয়ায় ইতি মধ্যেই অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর৷

কোভিডের ভয়াবহতা দেখেছে গোটা বিশ্ব। দেখেছে বাংলাও। মহামারি থেকে অতিমারি, লকডাউন, গৃহবন্দি জীবন, নিজের ঘরেই নিভৃতবাসে পর্যন্ত থাকতে হয়েছে। যদিও সেসব কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে মানবজীবন। নতুন করে কোভিডের সংক্রমণের খবর আবারও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। বিশেষ করে যাঁরা বয়স্ক, কোভিড তাঁদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কার্যত নষ্ট করে ছেড়েছে। যার ফলে সামান্য কিছুতেই কাবু হয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। শরীরে বিভিন্ন সময়ে নিউমোনিয়া বা অন্যান্য সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে। তার সঙ্গে নতুন করে দোসর হচ্ছে করোনা ভাইরাস।

Previous articleMusic therapy : মিউজিক থেরাপির যাদুতে দূর করুন মনের অবসাদ দেখুন ভিডিও
Next articleWeather Update:বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ, ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা দক্ষিণবঙ্গে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here