দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বাংলাদেশের চট্টগ্রামে ভয়ঙ্কর গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্য়ু হল ১১ জনের। ছাত্রদের নিয়ে গাড়িটি যাচ্ছিল মিরসরাইয়ের দিকে।
নেই কোনও সিগন্যাল, থাকে না রক্ষীও। তাই অবাধে রেললাইনের উপর দিয়েই চলে গাড়ি চলাচল। রক্ষীবিহীন রেল ক্রসিং পার করতে গিয়েই ঘটল ভয়াবহ দুর্ঘটনা। সজোরে গাড়িতে ধাক্কা মারল ট্রেন। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ১১ জনের। গুরুতর আহত আরও ৫ জন। শুক্রবার দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী একটি ট্রেনের সঙ্গেই ধাক্কা লাগে একটি বড় গাড়ির। ট্রেনের সঙ্গে আটকে, ঘষা খেতে খেতে প্রায় এক কিলোমিটার এগিয়ে যায় গাড়িটি।
ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়ে যায় সেই গাড়ি। মৃত্যু হয় ছাত্র ও শিক্ষক মিলিয়ে ১১ জনের। আহত অন্তত ৫ জন। মিরসরাই দমকল বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে।
চট্টগ্রামের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুর দেড়টা নাগাদ চট্টগ্রামের মিরসরাই বড়তাকিয়া এলাকায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লাগে একটি ছোট বাসের। ওই বাসের সকলেই পড়ুয়া ছিল। তারা কোচিং সেন্টারের শিক্ষকদের সঙ্গে খৈয়াছড়া ঝর্ণায় ঘুরতে গিয়েছিল। বাড়ি ফেরার সময়ই দুর্ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ১১ জনের। গুরুতর আহত আরও ৫।
বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, পড়ুয়াবোঝাই ওই মাইক্রোবাসটি দ্রুতগতিতে আসছিল। সোজা রেললাইনে উঠে পড়ে গাড়িটি। এদিকে সেই সময়ই লাইন দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী ট্রেনটি যে আসছে, তা দেখতে পাননি গাড়ির চালক। লাইন পার করার আগেই ট্রেনটি সজোরে ধাক্কা মারে গাড়িটিতে। দুমড়ে-মুচড়ে যায় গাড়িটি। প্রায় এক কিলোমিটার ট্রেনের সঙ্গেই ধাক্কা খেতে খেতে এগিয়ে যায় গাড়িটি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মিরসরাইয়ের কাছে ওই অংশে ট্রেনলাইনে কোনও সিগন্যালের ব্যবস্থা নেই। দুর্ঘটনার সময়ে কোনও রক্ষীও ছিল না। ট্রেন লাইনের উপরে গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে ভরসা শুধু একটি বাঁশ। শুক্রবার দুপুরে ওই গাড়িটি লেভেল ক্রসিংয়ে যে বাঁশ রাখা ছিল, তা টপকে রেললাইনে উঠতেই ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লাগে গাড়িটির। দুর্ঘটনার পরই রেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় ওই লাইনে। দুর্ঘটনার তদন্ত করতে ৫ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে এক রেল আধিকারিক জানান, ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর রেলগেটের পাহারাদার সাদ্দাম হোসেন পালিয়ে যাননি। তাঁর দাবি, ট্রেন আসতে দেখে তিনি গেট নামিয়ে যানবাহন আটকে দিয়েছিলেন। কিন্তু গাড়িটি যাওয়ার জন্য কেউ গেট তুলে দিয়েছিল।
মিরসরাই রেলওয়ে থানার ওসি নাজিমউদ্দিন জানান, এই ঘটনায় সাদ্দামকে আটক করেছে রেলওয়ে পুলিশ। পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পরই আসল ঘটনা জানা যাবে। প্রসঙ্গত, দুর্ঘটনায় নিহত ১১ জনের মৃতদেহ শুক্রবারই রাত ১০টা নাগাদ তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দেয় পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে মৃতদেহগুলি খন্দকিয়া গ্রামে নিয়ে আসে প্রশাসন।