দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ছাত্র আন্দোলনে ফুটছে বাংলাদেশ। নতুন করে ছাত্র বিক্ষোভ ঢাকায়। রাতভর উত্তেজনা, হামলা বিক্ষোভকারীদের উপরে। পাল্টা ইউনূস সরকারকেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। আজ সকালেই আন্দোলনকারীরা হুমকি দেয় যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য মামুন আহমেদের পদত্যাগ সহ ৬ দাবি পূরণ করতে হবে। এর জন্য ৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। দাবি পূরণ না হলে, আরও চরম পথে এগোবে বলেই হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ সাতটি কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিরোধ চরমে। গতকাল ঢাকার নীলক্ষেত মোড়ে দফায় দফায় অশান্তি, সংঘর্ষ হয়। দুই পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন বলেই খবর। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ, বিজিবি নামানো হয়।
এরপরই এ দিন সকালে ৭টি কলেজের পড়ুয়ারা সাংবাদিক বৈঠক করে জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদকে ক্ষমা চাইতে হবে এবং ইস্তফা দিতে হবে। এছাড়া গতকালের হামলার জন্য নিউমার্কেট থানা এলাকার ওসি, এসি সহ আধিকারিকদের কাজ থেকে বরখাস্ত করতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে হবে।
৬ দফা দাবি পূরণ করার জন্য মাত্র ৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে তারা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
এই পরিস্থিতিতে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত ক্লাস বন্ধ রাখা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ৭ কলেজেও পরীক্ষা স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার সুত্রপাাত রবিবার রাতে। রাজধানীর সাতটি নামজাদা কলেজ বহু বছর ধরেই স্বশাসন দাবি করে আসছে। তাদের বক্তব্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকায় কলেজের শিক্ষার মান কমে যাচ্ছে। রবিবার সন্ধ্যায় সাত কলেজের কয়েকশো শিক্ষার্থী পাঁচ দফা দাবি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য মামুন আহমেদের কাছে স্মারকলিপি দিতে গেলে তিনি দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। এর প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে-বাইরে কলেজ ছাত্ররা অবরোধ করে।
সাত কলেজের ছাত্রদের দাবি, স্বশাসন না দেওয়া পর্যন্ত কলেজগুলিতে ছাত্র ভর্তিতে চলতি কোটা ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে। ক্লাসে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না। ভর্তি পরীক্ষায় ভুল উত্তরের জন্য নম্বর কাটতে হবে এবং সাত কলেজের ভর্তি ফি’তে স্বচ্ছতা আনতে হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, ইট-পাথরের আঘাতে বহু ছাত্র এবং পুলিশ ও বিজিবি সদস্য আহত হয়েছে। আহত অনেক ছাত্র গেফতারির ভয়ে সরকারি হাসপাতালে যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত বছরের জুলাই-অগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতন হয়েছিল এবং মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়েছিল। কিন্তু যত সময় এগোচ্ছে, ততই ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বেড়ে চলেছে। এই আন্দোলনও ফের একবার বাংলাদেশের পট পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যায় কি না, তাই-ই এখন দেখার।