দেশের সময়, ঢাকা:সরকারি দফতরে হিন্দু কর্মচারীর সংখ্যা কত? গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের এহেন বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরে শোরগোল পড়ে গেছে সেদেশে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এহেন বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে সরকারের তরফে এখনও কোনও ব্যাখ্যা না দেওয়ায় সেদেশের সংখ্যালঘু এবং প্রগতিশীল মহল অত্যন্ত বিচলিত।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এর উদ্দেশ্য যাই হোক না কেন, এভাবে বিশেষ একটি ধর্মাবলম্বী মানুষজনকে এভাবে চিহ্নিত করার জন্য সরকারি বিজ্ঞপ্তির দৃষ্টান্ত এর আগে বাংলাদেশে নেই। এমনকী এই উপ মহাদেশেও অতীতে এই ধরনের সরকারি চিঠির নজির নেই।
ঘটনার সূত্রপাত, গত ২৯ অগস্ট গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। চিঠির বিষয়বস্ততে পরিষ্কার বাংলা ভাষায় লেখা হয়েছে, ঢাকায় কর্মরত হিন্দু ধর্মাবলম্বী মুখ্যসচিব/সমমর্যাদা সম্পন্ন ও তদুর্ধ কর্মকর্তাগণের নামের তালিকা আগামী ২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের সিনিয়র সহকারী সচিব মহম্মদ জাহাঙ্গির আলমের ওই চিঠি ঘিরেই বিচলিত সেদেশের সংখ্যালঘু এবং প্রগতিশীল মহল। তাঁদের বক্তব্য, এই ধরনের চিঠির উদ্দেশ্য কী তা স্পষ্ট নয়। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশে ছাত্র জনতার যে বিপ্লব তার পরে সংখ্যালঘুদের ওপরে যে আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে তা ভয়াবহ ও নজিরবিহীন। ফলে এই সরকারি চিঠি ঘিরে নতুন করে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে তাঁদের মধ্যে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এ ব্যাপারে যথেষ্ট নিন্দার ঝড় বইলেও প্রকাশ্যে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না কেউই। এর কারণ অবশ্য সরকার নয়, বরং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দলনের নেতৃত্ব। কারণ, তাঁদের গণ আন্দোলনের জেরে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন সেদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই মুহূর্তে মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে চলছে অন্তর্বর্তী সরকার। অভিযোগ, সরকারের বিরোধিতা শুনলেই দেশদ্রোহী তকমা সাঁটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাই কেউই প্রকাশ্যে বিরোধিতা করার সাহস দেখানোর ঝুঁকি নিচ্ছেন না।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাঁদের তরফে কোনও বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে না। স্বভাবতই সবাই খুব চিন্তিত যে আলাদা করে শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা জানতে চেয়ে কেন এই চিঠি।