দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে রোগীদেরও দেওয়া হচ্ছে ওপার বাংলার ওষুধ! এমনই অভিযোগ উঠেছে কাঁথি মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক শোরগোল পড়েছে কাঁথি শহরে। এদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি‘ সংবাদমাধ্যমকে জানান, “আজ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কে বলেছি তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে। এই রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই কোনও মন্তব্য করব।”
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে আসেন রোগীরা। তাঁদের প্রেসক্রিপশন লিখে দেন চিকিৎসকরা। আর সেই প্রেসক্রিপশন দেখে হাসপাতাল থেকে দেওয়া হয় বাংলাদেশি ওষুধ, অভিযোগ এমনটাই। এদিকে, প্রতিটি ওষুধেরই পাউচের গায়ে সাঁটানো স্টিকারে লেখা রয়েছে, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সম্পদ, ক্রয়-বিক্রয় আইনগত দণ্ডনীয় অপরাধ।’
কিন্তু, ‘গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সম্পদ, ক্রয়-বিক্রয় আইনগত দণ্ডনীয় অপরাধ’ স্টিকার দেওয়া সত্ত্বেও সেই ওষুধ কীভাবে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে পৌঁছাল? তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই বিষয়ে কিছু জানা নেই বলে দাবি প্রশাসনের। কিন্তু প্রশাসন না জানলে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা কীভাবে প্রেসক্রিপশনে সেই ওষুধ লিখলেন? তা নিয়েও একাধিক প্রশ্ন উঠছে। যদিও ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা, সূত্রের খবর এমনটাই ৷
স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্বে থাকা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, বাংলাদেশের ওষুধ কীভাবে কাঁথি সহ পূর্ব মেদিনীপুরে এল সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে। আমরা কেবল তমলুকের স্টোর থেকে ওষুধগুলি বিভিন্ন এলাকায় পাঠিয়েছিলাম। এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।” অন্যদিকে, এই ঘটনায় প্রশাসনের তরফে অবশ্য কেউ মুখ খোলেননি
তবে বাংলাদেশের ওষুধ এভাবে রাজ্যে আসার ঘটনায় সরব হয়েছে বিজ্ঞান মঞ্চ কর্তৃপক্ষ। প্রতিবেশী রাজ্যের ওষুধ এভাবে রাজ্যে আসা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং এই ঘটনায় জড়িতদের কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিজ্ঞান মঞ্চের সহ সভাপতি তথা চিকিৎসক সুব্রত মাইতি।
এই ওষুধ খেয়ে অসুস্থও হতে পারে মানুষ, দাবি করেছেন তিনি। তাঁর কথায় বিষয়টি সম্পূর্ণ বেআইনি। তিনি বলেন, কীভাবে এই ধরনের ওষুধ আমাদের রাজ্যে এল, তা খতিয়ে দেখে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার দরকার রয়েছে। যারা এই ধরনের কাজ করছে তাদের চিহ্নিত করে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত। না হলে এই ধরনের কাজ করা কিছু মানুষের জন্য সমস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।