দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃশ্রীলঙ্কার পর এবার বিক্ষোভে উত্তাল বাংলাদেশ। পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদের আঁচ ক্রমেই বাড়ছে। রবিবার দফায় দফায় অশান্তির খবর এসেছে ঢাকা-সহ দেশের একাধিক জায়গা থেকে। ঢাকায় পুলিশের উপর হামলারও অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাথর বৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ। জ্বালানি দ্রব্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি ঘিরে পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ হচ্ছে বাংলাদেশে। ঢাকার পল্টনে এদিন আওয়ামি লিগের দফতরেও ঝামেলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

একধাক্কায় বিপুল হারে বাড়ল জ্বালানির দাম। আর তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন আমজনতা। পেট্রল, ডিজেল এবং অকটেন থেকে কেরোসিনের মাত্রাতিরিক্ত দামবৃদ্ধির জেরে বিপর্যস্ত জনজীবন। এর আগে গত নভেম্বরেই জ্বালানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জেরে বাস, স্টিমারের ভাড়া অস্বাভাবিকহারে বাড়ানো হয়েছিল। এবারও তেমন কিছু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে জনতা। ইতিমধ্যেই রাস্তায় কমেছে বাসের সংখ্যা। ফলে দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে মানুষের ৷

গত শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকে নতুন বর্ধিত দাম কার্যকর করা হয়েছে। পেট্রোল, ডিজেলের সঙ্গে দাম বাড়ানো হয়েছে কেরোসিন এবং অকটেনেরও। পেট্রোলের দাম এক লাফে প্রতি লিটারে ৪৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে, বর্তমানে পেট্রোলের দাম ১৩০ টাকা হয়েছে ৮৬ টাকা থেকে। অন্যদিকে ডিজেলের দাম বেড়েছে ৩৪ টাকা। যেখানে আগে ডিজেলের দাম ছিল ৮০ টাকা, এখন সেটাই হয়েছে ১২৪ টাকা। অকটেনের দাম বেড়ে হয়েছে ১৩৫ টাকা, আগে ছিল ৮৯ টাকা। জ্বালানি তেলের ভর্তুকি তুলে দিল বাংলাদেশ সরকার। তার জেরেই এভাবে এক লাফে অনেকটাই দাম বেড়েছে জ্বালানি তেলের ৷

গত বছরের নভেম্বর মাসে পেট্রোল ডিজেলের দাম ১৫ টাকা করে বেড়েছিল প্রতি লিটারে। পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধির কথা ঘোষণা হতেই শুক্রবার রাতে ফিলিং স্টেশনগুলোর বাইরে লম্বা লাইন পড়ে যায়। সেদিনের পর আর তেমন পেট্রোল পাম্প বা ফিলিং স্টেশনগুলোর সামনে ভিড় চোখে পড়েনি।

এদিকে পেট্রল ডিজেলের দাম বাড়তেই রাস্তায় চোখে পড়ার মতো কমে গিয়েছে বাস। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও বাস পাচ্ছেন না যাত্রীরা ফলে চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের । অল্প সংখ্যায় বাস থাকায় নির্ধারিত মূল্যের থেকে অনেক বেশি দাম দিয়ে বেরোতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। স্থানীয় পরিবহন সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে যেখানে দিনে ৬০টি বাস চলে সেটাই এখন ১০টি চলছে।

বাসভাড়া কী হবে সেটা ঠিক না করে এভাবে হুট করে দাম বাড়ানোর কারণেই বাস মালিকরা কম সংখ্যক বাস পথে নামাচ্ছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে এভাবে দীর্ঘদিন চলতে থাকলে সাধারণ যাত্রী এবং বাসের কন্ডাকটর, ড্রাইভারের সঙ্গে মারপিট শুরু হতে পারে। পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে। এর থেকে মুক্তি কী করে মিলবে তা জানা নেই কারোরই। উল্লেখ্য, এমনিতেই বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনও মহামারীর প্রকোপ কাটিয়ে উঠতে পারেনি, তার মধ্যেই জ্বালানি বৃদ্ধির চাপ।

কেন হঠাৎ বাংলাদেশে এই পরিস্থিতি হল? সে দেশের সরকার বিভিন্ন জ্বালানি দ্রব্যের দাম প্রায় ৫২ শতাংশ বাড়িয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশে জ্বালানি দ্রব্যের এটি রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধি। এরপরই শহরের বিভিন্ন গ্যাস স্টেশনগুলিতে বিক্ষোভ দেখান প্রতিবাদীরা। যদিও এই মূল্যবৃদ্ধির জন্য আন্তর্জাতিক বাজারকে কাঠগড়ায় তুলছে সে দেশের সরকার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here