মাধ্যমিক পাস তরুণীকে শিক্ষিকার চাকরি! তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ৬ লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগ বনগাঁয়!
দেশের সময় , বনগাঁ : স্কুল শিক্ষকের চাকরি দেওয়ার নাম করে আর্থিক প্রতারণা! এবারও সেই উত্তর ২৪ পরগনা জেলা। এবার উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলে চাকরি দেওয়ার নাম করে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। ওই স্কুল শিক্ষক এলাকায় পরিচিত তৃণমূল নেতা হিসাবেই। তিনি মাধ্যমিক পাশ এক তরুণীকে স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি দেওয়ার নাম করে ৬ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ।
প্রাথমিকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের ওই আদিবাসী নেতার বিরুদ্ধে। গোটা ঘটনায় বনগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
বুধবার তাঁর বিরুদ্ধে বনগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন প্রতারিত তরুণী ও তাঁর বাবা। যদিও অভিযুক্তের হদিশ নেই। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বনগাঁ থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, স্কুল শিক্ষকের চাকরি দেওয়ার নাম করে আর্থিক প্রতারণায় অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম সুকান্ত ওরফে গোপাল মাহাতো। বনগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুকান্ত মাহাতোর বিরুদ্ধে ৬ লক্ষ টাকা আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। বনগাঁ শিমুলতলার বাসিন্দা প্রশান্ত কুণ্ডু তাঁর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ শিমুলতলার বাসিন্দা, প্রতারিত তরুণী পারমিতা দাস মাধ্যমিক পাশ। তাঁকে বনগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুকান্ত মাহাতো প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। পারমিতা জানান, “চাকরি দেওয়ার জন্য সুকান্ত মাহাতোকে নগদ ৬ লক্ষ টাকা ও নথিপত্র দিয়েছিলেন ২০২১ সালে। কিন্তু এখনও চাকরি হয়নি। এখন টাকা ফেরৎ চাইলে বাবাকে প্রাণে মারার হুমকি দিচ্ছে।”
এলাকার তৃণমূল নেতা হিসাবে পরিচিত সুকান্ত মাহাতো। পারমিতার বাবা প্রশান্ত কুণ্ডু বলেন,আমায় ব্ল্যাঙ্ক চেক দিয়েছে। একটা স্ট্যাম্প পেপারে লিখিত দিয়েছে। কিন্তু টাকা চাওয়ার পরও আমায় টাকা দিচ্ছে না। টাকা চাইলে উল্টে হুমকি দিচ্ছে।”তাঁর (সুকান্ত মাহাতো) সঙ্গে অনেক বড় বড় নেতার ওঠা-বসা আছে। সেজন্য ভরসা করেছিলাম। মেয়েকে চাকরি করে দেওয়ার জন্য ধার-দেনা করে ৬ লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম।” বছর ঘুরে গেলেও আদতে কোনও চাকরি হয়নি পারমিতার। এখন টাকা চাইলে সুকান্ত মাহাতো তাঁকে হুমকি দিচ্ছেন বলেও তাঁর অভিযোগ।
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগে স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম উঠে এসেছিল বাগদার বাসিন্দা ও তৃণমূল নেতা হিসাবে পরিচিত চন্দন মণ্ডলের। তারপরই বনগাঁর ছয়ঘরিয়ার বাসিন্দা এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলে চাকরি দেওয়া এবং অন্য স্কুলে বদলির নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। এবার সেই তালিকায় আরও এক তৃণমূল নেতার নাম সংযোজন হল।
এবিষয়ে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা বনগাঁর পুরপ্রধান গোপাল শেঠ বলেন,“অভিযোগ হলে সেটা বিচারাধীন বিষয়। বিচারক বিচার করে সে অপরাধী কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এই বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।” তবে যে দোষ করে তার কোনও রাজনৈতিক রং থাকে না। যদি কেউ টাকা নেয়। তার বিচার হবে। বিচার ব্যবস্থার উপর ভরসা আছে। দোষ করলে সে আমাদের কেউ হলেও বিচার ব্যবস্থার ঊর্ধ্বে নয়।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপি তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বনগাঁ সংগঠনিক জেলা বিজেপি সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল বলেন, “শুধুমাত্র চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়া নয়, চাকরির বদলি করে দেওয়ার নাম করেও টাকা নিয়েছে তৃণমূলের এই নেতা।” ঘটনার বিষয়ে সুকান্ত মাহাতোকে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ।