দেশের সময় বনগাঁ: প্রথম বিয়ে ভেঙে গিয়েছিল। ন’বছরের ছেলেকে নিয়ে বাপেরবাড়িতেই এসে উঠেছিলেন বছর তিরিশের গৃহবধূ। মাঝে এলাকারই এক যুবকের সঙ্গে প্রেম হয় তাঁর। বাড়ির লোক সে খবর জানতেন না। হঠাই ওই যুবককে বিয়ে করে সটান বাড়িতে হাজির মেয়ে। মেয়ের কপালে সিঁদুর আর নতুন জামাইকে দেখা মাত্রই ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটিয়ে বসলেন বাবা।

ধারালো অস্ত্র দিয়ে মেয়ের মাথায় কোপ দেওয়ার অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে। জামাইকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপান বলে অভিযোগ। ততক্ষণে আর্তনাদ শুনে পড়শিরা ছুটে এসেছেন, তারই ফাঁকে অস্ত্র ফেলে চম্পট দিয়েছেন বাবা। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে কাতরাচ্ছিলেন মেয়ে-জামাই। চাঞ্চল্যকর ঘটনা বনগাঁর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের নয়া কামারগ্রাম এলাকায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুজনই স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, মেয়ের প্রেমের সম্পর্কে বাড়ির মত ছিল না। তবু ভালবাসার মানুষটিকেই বিয়ে করে বাড়ি ফিরছিলেন মেয়ে। কিন্তু বাড়ি ফেরার রাস্তাতেই আক্রমণ। আর সেই আক্রমণকারী খোদ তাঁর বাবা!অভিযোগ, মেয়ের শরীরে দা দিয়ে কোপ মারেন তিনি। ছাড় পাননি জামাইও।

স্থানীয় সূত্রের খবর, রবিবার রাতে অরুণ সরকারের ছোটো মেয়ে জিনিয়া মিস্ত্রি দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। প্রথমপক্ষের বিয়ে ভেঙে গিয়েছিল তাঁর। কিন্তু একই এলাকার ছেলেকে কেন বিয়ে করল মেয়ে, তা নিয়েই ভীষণ রেগে যান অরুণ। প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজনের বয়ান অনুযায়ী, মেয়ে ও নতুন জামাইকে বাড়ির বাইরে দাঁড় করিয়ে, ঘরে চলে যান অরুণ।

চোখের নিমেশে ঘর থেকে একটা দাঁ নিয়ে এসে মেয়ে ও জামাইয়ের মাথায় কোপ মারেন। স্থানীয়দের আকস্মিকতার ঘোর কাটিয়ে ওঠার আগেই পালিয়ে যান অরুণ। স্থানীয়রা দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করান। ঘটনায় অরুণের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়।

গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বনগাঁ থানার পুলিশ। অরুণের বড় মেয়ে বলেন, “বোন তো দোষ করেছে এটা ঠিক। না জানিয়ে কেন বিয়ে করতে গেল? কিন্তু বাবা ঠিক কাজ করেনি। বাবার শাস্তি হওয়া দরকার। এর আগে আমার ওপরেও এভাবে আমাকে কোপাতে এসেছিল।” ঘটনার পর থেকে অরুণ পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।

অরুণের ছোটো মেয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়েই বললেন, “বুঝলামই না কেন এত রাগ হল? শুধু বলল, এলাকা ছেলেকেই বিয়ে করলি? বলেই ঘরে চলে যায়। তারপরই তো দাঁ নিয়ে এসে মারল আমাদের।”

বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় বনগাঁ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মেয়ে। তাঁর স্বামীর প্রাথমিক চিকিৎসা করার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। মেয়ে নিজেই বাবার শাস্তির দাবি তুলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘যার সঙ্গে ঝামেলা হয় তাকেই এ ভাবে মারধর করে বাবা।’’ এই গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বনগাঁ থানার পুলিশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here