দেশের সময়, বনগাঁ: তৃণমূল থেকে কেউ নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়লে তাকে দলে স্থান দেওয়া হবে না। তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এমন ঘোষণার পরই বনগাঁর তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে নির্দল হয়ে দাঁড়ানো তরুন সরকার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন।
শুক্রবার বনগাঁ পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী তরুন সরকারকে বাটামোড় এলাকার দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে এসে স্থানীয় নেতৃত্বের উপস্থিতিতে তার প্রার্থী পদে না লড়ার কথা ঘোষণা করান বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস৷
ভুল বোঝাবুঝির কারণে তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্দল হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। ভুল বুঝতে পেরে এখন নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচারে বের হবেন। মানুষকে বোঝাতে প্রচারপত্রও বিলি করবেন। সাংবাদিক বৈঠক করে এই ঘোষনা করলেন বনগাঁ পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী তরুন সরকার।
এদিন বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসের বনগাঁর কার্যালয়ে দলীয় নেতৃত্বের উপস্থিতিতে তরুন সরকার সাংবাদিকদেরকে জানান, সমস্ত ভুল বোঝাবুঝি মিটে গেছে। তাই তিনি প্রার্থী হিসেবে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে লিফলেট বিলি করে ওয়ার্ডের মানুষকে তৃণমূল প্রার্থী সুরজিৎ দাসকে ভোট দেওয়ার জন্য আবেদন জানাবেন।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের পুরসভা নির্বাচনে বনগাঁ পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়াই করেছিলেন তরুণ সরকার। জয়ী হবার পর পরবর্তীতে তিনি তৃণমূলে যোগদান করেন। এরপর থেকে এলাকায় তৃণমূল নেতা হিসেবে পরিচিত হয়ে কাজ শুরু করেন। এবারের পুর নির্বাচনে তিনি ২১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের প্রার্থী হবার দাবিদার ছিলেন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁর বদলে প্রার্থী করে এই ওয়ার্ডের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক নেতা সাধন দাসের ছেলে সুরজিৎ দাসকে। আর তাতেই ক্ষুব্ধ হন তরুন বাবু৷ এরপর তিনি তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্দল হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। দেওয়াল লিখনও শুরু করেন।
এদিকে, তরুন সরকারের মতো রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতারা টিকিট না পেয়ে নির্দলে দাঁড়িয়ে যান। আর তাদের বিরুদ্ধে কড়া মনোভাব নেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি নির্দেশ দেন, নির্দল প্রার্থী হিসেবে যেসব নেতা, কর্মী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, তারা যেন তা প্রত্যাহার করে নেন। এই কড়া বার্তা পাওয়ার পর এদিন নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন তরুন সরকার।
নির্দল প্রার্থীর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তৃণমূল প্রার্থী সুরজিৎ দাস বলেন, কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি ও অভিমান থেকে তরুন সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি অবশেষে নিজের ভুল বুঝতে পেরে তার অবস্থান থেকে সরে আসায় আমরা খুশি।
সবশেষে এদিন একে অপরকে মিষ্টিমুখ করিয়ে সব মান অভিমানের পালা সাঙ্গ করে একসঙ্গে পুরনির্বাচনে প্রচারে নামার অঙ্গীকার করলেন। গোটা বিষয়টি বাস্তবায়িত করেছেন বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। এদিন উপস্থিত ছিলেন ছয়ঘরিয়া পঞ্চায়েত প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষ , তৃণমূলনেতা গোপাল শেঠ, তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা নারায়ণ ঘোষ সহ বহু কর্মী সমর্থক৷