দেশের সময়, ওয়েবডেস্কঃ ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় নির্মীয়মান রাম মন্দিরে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে। তার আগে পূজা শুরু হয়ে গিয়েছে মন্দির প্রাঙ্গণে। বুধবার, মন্দির চত্বরে নিয়ে আসা হয় রামলালার মূর্তি। সন্ধ্যা নাগাদ, ক্রেনের সাহায্যে তুলে, রাম মন্দিরের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয় প্রতিমাটিকে। ৫১ ইঞ্চি দীর্ঘ রামলালার মূর্তিটি তৈরি করেছেন মহীসুরের ভাস্কর অরুণ যোগী।
বৃহস্পতিবার গর্ভগৃহে স্থাপন করা হয় মূর্তিটি। এবার সামনে এল রামমন্দিরের গর্ভগৃহে স্থাপিত রামলালার প্রতিমার প্রথম ছবি। ছবিগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিডিয়া ইনচার্জ শরদ শর্মা। তবে, প্রাণ প্রতিষ্ঠার আগে রামলালার মূর্তির মুখ এখনও ঢাকা রয়েছে।
আগে ঠিক ছিল প্রধানমন্ত্রী সোমবার সকালে দিল্লি থেকে অযোধ্যায় আসবেন। মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা পর্ব শুরু হওয়ার কথা বেলা ১২’টায়।
এখন শোনা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী আগের দিন, রবিবার দুপুরের পর অযোধ্যা পৌঁছে যেতে পারেন। কারণ, রোজই কুয়াশার কারণে দিল্লি থেকে বিমান চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। অযোধ্যাতেও বিমান ওঠানামা স্বাভাবিক নয়। ঘন কুয়াশায় ছেয়ে থাকছে শহর। তাই ঝুঁকি এড়াতে প্রধানমন্ত্রী একদিন আগেই চলে আসতে পারেন। অযোধ্যায় পুজোয় বসার আগে তাঁর সরযূ নদীতে স্নান করার কথা।
Take a look at idol of Lord Ram inside Ayodhya temple's sanctum sanctorum
— ANI Digital (@ani_digital) January 18, 2024
Read @ANI Story | https://t.co/MSbha3ACQA#RamMandirPranPratishta #RamLalla #ayodhya pic.twitter.com/19PhJehGef
গর্ভগৃহে স্থাপিত রামলালার মূর্তিটি আপাতত সারা বিশ্বের দৃষ্টির আড়ালেই থাকবে। ২২ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে রামলালার অভিষেক অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরই আবরণ খোলা হবে।গর্ভগৃহের দরজায় উত্তর প্রদেশ পুলি্শের কমান্ডোরা মোতায়েন আছেন। মাছিটিও গলার উপায় নেই। মন্দির চত্বরে মোবাইল ফোন নিয়ে যাওয়াও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রায় ৪ ঘণ্টার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার পর বৃহস্পতিবার গর্ভগৃহের বেদিতে তাঁর মূর্তি স্থাপন করা হয়। রাম মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানের আগে শুক্রবারও বেশ কিছু আচার-অনুষ্ঠান চলবে। বৃহস্পতিবার গণেশ ও বরুণদেবের পুজো হয়েছে।
মূর্তিটি গর্ভগৃহে বসানোর আগে চার ঘণ্টা ধরে চলে পূজাপাঠ। খুব সকালে সাধুরা সরযূ নদীতে স্নান সেরে এসে পুজোয় বসেন। মূর্তি প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠান দেখতে বিপুল ভক্ত সমাগম হয়।
এই পর্ব ঘিরে সামান্য বিতর্কও দেখা দিয়েছে। সাধু-সমাজের একাংশ প্রশ্ন তুলেছে অস্থায়ী মন্দিরে আসীন আসল রামলালার মূর্তিটির কী হবে। সেটিকেই গর্ভগৃহে প্রতিষ্ঠা করা উচিত ছিল, মনে করেন তাঁদের কেউ কেউ। মন্দির কমিটি জানিয়েছে, আসল মূর্তিটি আয়তনে ছোট সেটি মন্দিরের উপরের তলায় রাখা হবে।
এদিকে, মঙ্গলবার থেকেই অযোধ্যায় পূণ্যার্থীরা দল বেঁধে আসতে শুরু করেছেন। শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আট-নয় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। পূণ্যার্থীর ভিড় দেখে বোঝার উপায় নেই কেমন শৈত্যপ্রবাহ চলছে।
থাকার জাগয়া নিয়ে রীতিমতো হাহাকার চললেও খাওয়া নিয়ে চিন্তা নেই। শহর জুড়ে চলছে ভাণ্ডারা। তিন বেলা খাওয়া ফ্রি।
এদিকে, রাম মন্দির প্রাণ প্রতিষ্ঠা উপলক্ষে, ২২ জানুয়ারি সমস্ত কেন্দ্রীয় সরকারি অফিস, কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান এবং কেন্দ্রীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলিতে অর্ধদিবস ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বলেছেন, জনগণের বিপুল উৎসাহের প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। বৃহস্পতিবার, রাম মন্দির সংক্রান্ত ৬টি বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেছেন। একটি স্ট্যাম্প বইও প্রকাশ করেছেন। আমেরিকা, নিউজিল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া এবং সিঙ্গাপুর-সহ বিশ্বের ২০টিরও বেশি দেশে এই ডাকটিকিটগুলি পাওয়া যাবে।
প্রাণ প্রতিষ্ঠার সময় সাইবার হামলার হুমকিও রয়েছে। এই হামলা ঠেকাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এক উচ্চ স্তরের সাইবার বিশেষজ্ঞ দলকে অযোধ্যায় পাঠিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রক, সিইআরটি-র কর্তা এবং অন্যান্য সাইবার বিশেষজ্ঞরা। নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে ভারত-নেপাল সীমান্তেও। সীমান্তে পুলিশ ও এসএসবি জওয়ানরা কড়া চেকিং করছেন। ডগ স্কোয়াড ও মেটাল ডিটেক্টরের সাহায্যে চেকিংও করা হচ্ছে।