দেশের সময় , বীরভূম ২৫ মাস পর ঘরের ছেলে ঘরে ফিরছে।
সিউড়ি, বোলপুর, নানুর-সহ গোটা বীরভূম থুড়ি কেষ্টভূমে সাজো সাজো রব। দু’বছর দুর্গাপুজোয় ছিলেন না অনুব্রত। এবার পুজোর আগেই বোলপুরে নিজের বাড়ি ফিরলেন অনুব্রত মণ্ডল। গত সপ্তাহেই গরুপাচার মামলায় জামিন মঞ্জুর হয় তাঁর।
আইনি প্রক্রিয়ার জন্য জেলমুক্তিতে দেরি হয়। সোমবার রাতে তিহাড় থেকে মুক্তি পেয়ে মঙ্গলবার ভোরের বিমানেই কলকাতায় এসে পৌঁছন কেষ্ট। সেখান থেকে সোজা বীরভূমের উদ্দেশে রওনা দেন। বাবার সঙ্গেই ছিলেন সদ্য জামিন পাওয়া অনুব্রতকন্যা সুকন্যা। দেখুন ভিডিও
ঘরের ছেলে ফেরার খবর পেতেই সিউড়ি দলীয় কার্যালয় পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়। বসানো হয় ফ্লেক্স, তাঁর নামাঙ্কিত বোর্ড। কার্যালয়ের তাঁর বসার ঘরও সাজানোর হয়েছে। হাওয়ায় সবুজ আবির উড়েছে। শুধু তাই নয়, মাংস ভাত খাওয়া হয় পাড়ায় পাড়ায়। ঢাক, বাতাসা, কালা ঝঙ্কার তাসায় এখন উৎসব উৎসব পরিবেশ বীরভূমে।
নিচুপট্টিতে প্রিয় নেতার বাড়ির সামনে অনুগামীদের ভিড়। স্লোগান উঠল ‘অনুব্রত মণ্ডল জিন্দাবাদ’।
জেলায় অনুব্রতর প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় সকাল থেকেই বোলপুরে নিচুপট্টির বাড়ির সামনে ভিড় জমতে শুরু করেছিল দলীয় কর্মী-সমর্থকদের। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ভিড় বৃদ্ধি পেয়েছে। বাড়িতে প্রবেশের সময় দৃশ্যত ছলছল চোখ ছিল অনুব্রতর। বাড়ির এক তলায় দলীয় কার্যালয়ে বসে কথা বলতে বলতে একটি পর্যায় কেঁদেও ফেলেন তিনি।
বীরভূমে ফেরার পথে বর্ধমান পার করে একটি জায়গায় কিছু ক্ষণের জন্য থামে অনুব্রতর গাড়ি। সেই সময় গাড়ির কাচ নামিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অনুব্রত। তিনি জানান শারীরিক সমস্যার কথা। পায়ে ও কোমরে ব্যথার কথাও জানান। তিনি বললেন, “আমি আদালতকে সম্মান করি, আইন মেনে চলি।” সঙ্গে এ কথাও বললেন, “দিদির জন্য আছি, বরাবরই থাকব।” মুখ্যমন্ত্রী এবং গোটা রাজ্যবাসীকে শারদীয়ার শুভেচ্ছাও জানান তিনি।
অনুব্রতর গ্রেফতারির পর মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “কেষ্টকে বীরের সম্মান দিয়ে ফিরিয়ে আনব।” ঘটনাচক্রে মমতারও মঙ্গলবার বীরভূম জেলায় প্রশাসনিক কর্মসূচি রয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আবহে বীরভূমে প্রশাসনিক বৈঠক করার কথা রয়েছে তাঁর। ঠিক সেই দিনেই কারামুক্তির পর বীরভূমে ফিরছেন অনুব্রত। দলনেত্রীর সঙ্গে কি মঙ্গলবার সাক্ষাৎ হবে অনুব্রতর? তা নিয়েও চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে। অনুব্রতকে সে প্রসঙ্গে প্রশ্ন করায় তিনি জানান, শরীর ভাল থাকলে দেখা হবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে।
অনুব্রতর জামিন নিশ্চিত হতেই বেশ সাজ সাজ রব ধরা পড়েছিল বীরভূমের নিচুপট্টি এলাকায়। দুই বছর দুর্গাপুজো তিনি ছিলেন না এই বাড়িতে। তবে এ বার পুজোর আগেই বোলপুরের বাড়িতে ফিরছেন তিনি। দিল্লির রাউস এভিনিউ কোর্ট থেকে জামিন নিশ্চিত হতেই অনুব্রতর বাড়িতে শুরু হয়েছিল রং করার কাজ, ঝাড়পোঁছ, আগাছা সাফাই।