দেশের সময়: আগামীকাল শনিবার অনুব্রত মণ্ডলের দশদিনের সিবিআই হেফাজত শেষ হচ্ছে। তার আগে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির আরও তথ্য প্রমাণ জোগাড় করতে মরিয়া সিবিআই।
আজ শুক্রবার সকালেই সিবিআইয়ের চার প্রতিনিধি হানা দেয় বীরভূমে অনুব্রত মণ্ডলের ভোলে বোম রাইস মিলে। ভোলে বোম নামে ওই রাইস মিলের গেটের চাবি ছিল না। ফলে সিবিআই আধিকারিকদের প্রায় ৪০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয় বাইরে। ভিতরে ঢুকতেই অবাক কাণ্ড। দেখা যায়, রাইস মিলের মধ্যে সার দেওয়া গ্যারেজ।
অন্তত ছ’টি গ্যারেজ রয়েছে ওই রাইস মিলের ভিতরে। সেখানে দাঁড় করানো হয়েছে একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি। কিন্তু সেই গাড়িগুলি কার? তা নিয়ে কিন্তু রাইস মিলের কর্মীরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। সিবিআই সূত্রের খবর, ওই রাইস মিলের অন্যতম অংশীদার অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল। তাঁর ৫০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। বাকি ৫০ শতাংশ শেয়ার অনুব্রত মণ্ডলের প্রয়াত স্ত্রী ছবি মণ্ডলের নামে। সিবিআই সূত্রে আরও জানা যাচ্ছে, এই রাইস মিলের ঠিকানা ব্যবহার করেই দু’টি কোম্পানি খোলা হয়েছে।
তার মধ্যে একটি ডেভেলপার কোম্পানি। রাইস মিলের ঠিকানায় কী করে একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানি তৈরি হতে পারে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মনে করা হচ্ছে, আসলে দু’টি কোম্পানিই ভুয়ো। এনিয়ে খতিয়ে দেখছেন সিবিআই আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, ওই কোম্পানিগুলির কর্তা অনুব্রত ঘনিষ্ঠরা। অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের অ্যাকাউন্টে যে বিপুল অর্থের হদিশ পাওয়া গিয়েছে, যে বিপুল সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, সেগুলিই এখন খতিয়ে দেখছে সিবিআই।
সেইসব সম্পত্তির টাকার উৎস খোঁজাটাই এখন তাঁদের অন্যতম লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে, অনুব্রত মণ্ডল একাধিকবার ব্যাঙ্কের অফিসারদের ফোন করে টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। কিন্তু ব্যাঙ্কের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, আইনি পদ্ধতি ছাড়া এভাবে এক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে সরানো যায় না।
জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা মনে করছে, স্ত্রীর নামে যে বিপুল সম্পত্তি রয়েছে, তা আড়াল করতেই অনুব্রত মণ্ডল টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা সরাতে চেয়েছিলেন। যদিও শেষমেশ তা সম্ভব হয়নি। চাপের মুখেও ব্যাঙ্ক কর্তারা অনুব্রতর প্রস্তাব মেনে নেননি। জানা যাচ্ছে, ২০১১ সালে জনৈক হারাধন মণ্ডলের কাছ থেকে ভোলে বোম রাইস মিলটি কেনেন অনুব্রত মণ্ডল।