দেশের সময়: ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে ২০১৪ সাল থেকে রকেট গতিতে সম্পত্তি বৃদ্ধি পেতে থাকে অনুব্রত মণ্ডলের। ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি নামে-বেনামে বীরভূম ও কলকাতায় প্রচুর সম্পত্তি কেনেন।
জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের অনুমান, গরু পাচারে যে কমিশন পাওয়া যেত, সেই টাকা দিয়েই অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট এই বিপুল সম্পত্তির মালিক হন। তবে তিনি যে সবটাই নিজের নামে বা নিজের পরিবারের নামে কিনেছেন তা নয়। সিবিআইয়ের রিপোর্টে উঠে এসেছে, অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে যাঁরা কাজ করতেন, বা তাঁর সঙ্গে সবসময় যাঁরা থাকতেন, তাঁদের নামেও প্রচুর সম্পত্তি কেনেন অনুব্রত।
শুধু রাইস মিল নয়, গরু পাচারের টাকায় পাথর ক্র্যাশার, হোটেল, বাড়ি, জমি কেনা হয়েছে বলে সিবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে। এই মর্মে তারা আদালতে রিপোর্টও জমা দিয়েছে। এখন অনুব্রতর সেইসব নামে-বেনামে সম্পত্তির খোঁজেই তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই।
ভোলে বোম, শঙ্কর রাইস মিলের পর আজ সকাল থেকে সিবিআই আধিকারিকরা বোলপুরে শিবশম্ভু নামে আরও একটি রাইস মিলে হানা দিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন খাদ্য দফতরের আধিকারিকরা। এই রাইস মিলটির মালিকানা কার, সেটাই জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। সিবিআই সূত্রে খবর, শিবশম্ভু রাইস মিলটির মালিক হিসেবে পাল পদবীর দু’জনের নাম থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা আসেন না।
পরিবর্তে অনুব্রত মণ্ডলের এক ভাগ্নেকে মাঝেমধ্যেই এখানে আসতে দেখা যায়। তিনি এই রাইস মিলের অন্যতম অংশীদার বলে সূত্রের খবর। এদিকে, বেনামি সম্পত্তির খোঁজে সিবিআই ইতিমধ্যেই বীরভূমের আটটি ব্যাঙ্কে চিঠি দিয়েছে। তাদের স্ক্যানারে রয়েছে ১৮টি অ্যাকাউন্ট। ওই সব অ্যাকাউন্টে ঘুরপথে গরু পাচারের টাকা ঢুকেছে বলে সন্দেহ করছেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা।
সিবিআই সূত্রের খবর, গরু পাচারে প্রোটেকশন হিসেবে অনুব্রতর কাছে মোটা অঙ্কের কমিশনের টাকা ঢুকত। আর সেই টাকাতেই একের পর এক সম্পত্তি কেনেন তিনি। এখনও পর্যন্ত যে ক’টি সম্পত্তির হদিশ পেয়েছেন সিবিআই আধিকারিকরা, সবক’টি ক্ষেত্রেই একটি বিষয় উল্লেখযোগ্য, আর তা হল ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে সম্পত্তিগুলি কেনা হয়েছে। গত শুক্রবার সিবিআই আধিকারিকরা বোলপুরের ভোলে বোম রাইস মিলে হানা দেন।
প্রথমে সেখানে তাদের বাধার মুখে পড়তে হয়। চাবি নেই, এই অজুহাতে গেট খুলতে দেরি করা হয়। প্রায় ৪০ মিনিট বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন সিবিআই আধিকারিকরা। পরে রাইস মিলের ভিতরে ঢুকতেই তাজ্জব বনে যান তাঁরা। দেখা যায়, রাইস মিলের ভিতরে অন্তত ছ’টি গ্যারাজ রয়েছে। সেখানে সার দিয়ে রাখা রয়েছে দামী গাড়ি। রাইস মিলের মধ্যে এত দামী গাড়ি কেন রাখা, গাড়িগুলির মালিক কে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সবমিলিয়ে সিবিআই আধিকারিকরা এখন একটাই জিনিস জানতে চাইছেন, রাইস মিলের আড়ালে কী কাজ হত, সেসব কাজে কারা যুক্ত?