দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রীরের খারাপের সহস্র কারণ দেখিয়েও শেষরক্ষা হল না। গরু পাচার কাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল । বাড়ি থেকে গাড়িতে তোলা হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলকে।
বৃহস্পতিবার ভোরে তাঁর বোলপুরের বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। তাঁরা কেষ্ট মণ্ডলের বাড়িতে তল্লাশি চালান, সেই সঙ্গে জেরা করা হয় তাঁকে। তারপর বেলা ১১ টা নাগাদ তাঁকে গ্রেফতার করেন সিবিআই আধিকারিকরা।
কেষ্ট মণ্ডলকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন সিবিআই অফিসাররা। এদিনই তাঁকে আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে পেশ করা হবে নাকি তাঁকে প্রথমে কোনও হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে সেটা এখনও স্পষ্ট নয়।
সুত্রের খবর, অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে দুর্গাপুরের সিবিআই ক্যাম্প অফিসে যাচ্ছেন আধিকারিকরা। সেখানে ফের তাঁকে জেরা করা হবে বলেই জানা গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার তৃণমূলের জেলা সভাপতির বাড়িতে সাত সকালেই হাজির হয়েছিল সিবিআইয়ের ৮-১০ জনের একটি দল। সঙ্গে ছিলেন সিআরপিএফ জওয়ানরাও। অনুব্রতর বোলপুরের বাড়ি চারদিক দিয়ে ঘিরে ফেলে সিআরপিএফ। তারপর বাড়ির দোতলায় উঠে তল্লাশি ও জেরা শুরু করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী ও পুলিশকেও বাড়ির ভিতরে ঢুকতে নিষেধ করা হয়।
অনুব্রতকে মোট ১০ বার নোটিস পাঠিয়েছিল সিবিআই। প্রথমে তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে রক্ষাকবচ পাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু উচ্চ আদালত তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয়। তার পর অনুব্রত বেশ কিছুদিন এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন। পরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে একবার সিবিআই জেরার মুখোমুখি হন তিনি। তার পর ফের নিজামে যাওয়া নিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন।
এহেন পরিস্থিতিতে অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতার হওয়ার সম্ভাবনা ক্রমশ অনিবার্য হয়ে উঠছিল। অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তার কাছে প্রচুর সম্পত্তির হদিশ পাওয়া গিয়েছে। তা ছাড়া সম্প্রতি অনুব্রত ঘনিষ্ঠ তিন ব্যবসায়ীর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর নথি ও ১৭ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি।
বস্তুত সায়গল হোসেনকে গ্রেফতারের পর সিবিআই আদালতে যে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দিয়েছে তাতেও অনুব্রত মণ্ডলের নাম রয়েছে। এদিন তাঁর বাড়িতে পৌঁছে সিবিআই প্রথমে ৪১এ ধারায় নোটিস দেয়। তাঁকে বলা হয় এখনই জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হবে। কিন্তু অনুব্রত বলেন, তিনি অসুস্থ। তবে সিবিআই অফিসাররা তা আর শুনতে রাজি হননি।
কিছুক্ষণ পরেই বাড়ি থেকে সোজা গাড়িতে তোলা হয় তৃণমূল নেতাকে। সূত্রের খবর, দুর্গাপুরের সিবিআই ক্যাম্প অফিসে নিয়ে গিয়ে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে তৃণমূল নেতাকে।