রিয়াদাস, পেট্রাপোল:বনগাঁ পেট্রাপোল সীমান্তে দ্বিতীয় কার্গো গেট শিলান্যাস অনুষ্ঠানে দেশের আর্থিক উন্নতি প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ভারতের আর্থিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রয়েছে পেট্রাপোল স্থল বন্দরের। পেট্রাপোল সীমান্তে বাণিজ্যের অঙ্ক বেড়েছে।
মঙ্গলবার বনগাঁ পেট্রাপোল সীমান্তে দ্বিতীয় কার্গো গেটের শিলান্যাস এবং পেট্রাপোল থানার নতুন ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে হাজির হন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কার্গো গেটের শিলান্যাস অনুষ্ঠান থেকে ভারতের আন্তঃদেশীয় বাণিজ্যে সুবৃদ্ধির জন্য এই গেটের উপকারিতার কথা তুলে ধরেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী এদিন জানান, অনেক ক্ষেত্রেই সীমান্তে ট্রাক চলাচলে নানারকম অসুবিধা, ভিড়-ভাট্টা, দেরি হওয়ার সমস্যার কথা উঠে আসত। নতুন আরেকটি কার্গো গেট চালু হলে সেই সমস্যার অনেকটা নিরসন হবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, “স্থল বন্দর অথরিটি শুধুমাত্র দেশের আর্থিক সমৃদ্ধিতে সহায়তা করে না, পাশাপাশি, ভারতের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশের মৈত্রী স্থাপনের রাজদূত হিসাবে কাজ করে এটি।”
বনগাঁ পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৭০০ ট্রাক যাতায়াত করে। মন্ত্রী এদিন জানান, ২০১৬ সালে এই বন্দর দিয়ে ১৮ হাজার কোটি টাকার ব্যবসায়িক লেনদেন হতো, সেটি বর্তমানে বেড়ে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা হয়েছে। পাশাপাশি, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক, বাণিজ্যিক, ভাষার যে সম্পর্ক রয়েছে, সে বিষয়টিও তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দেখুন ভিডিও
কার্গো গেটের পাশাপাশি পেট্রাপোল থানা নতুন ভবনের এদিন উদ্বোধন হয়। থানাটি এতদিন ছিল ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি কর্তৃপক্ষের একটি ভবনে। থানার জন্য এবার পেট্রাপোল বন্দরের যশোর রোডের পাশে নতুন করে ভবন তৈরি করা হয়েছে।
নতুন কার্গো গেট নির্মাণের ফলে আগামী দিনে বৈদেশিক বাণিজ্যের অনেকটা উন্নতি হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। নতুন গেট তৈরি হলে আমদানি-রপ্তানিতে গতি আসবে। রপ্তানির পরিমাণ বাড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা। নতুন প্রকল্প উদ্বোধনের পাশাপশি এদিন এশিয়ায় বৃহত্তম স্থল বন্দর পরিদর্শন করে দেখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এদিন মঞ্চ থেকে তিনি বাংলার সরকারকে ধন্যবাদ জানান ৷ সমস্ত কর্মযজ্ঞ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য বাংলার সরকারের তরফে যে সাহায্য করা হয়েছে, তার জন্যে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ধন্যবাদ বার্তা উঠে আসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের মুখে। যদিও এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চে বাংলার সরকারের কোনও প্রতিনিধিকে এদিন দেখা যায়নি।
আগে সীমান্তে নিরাপত্তা ছিল না। সীমান্তে পরিকাঠামো ছিল না। যোগাযোগ ব্যবস্থা কম ছিল। মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ কম ছিল। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলির উন্নয়ন হয়নি বলে তোপ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর।
সীমান্তবর্তী গ্রাম দেশের প্রথম গ্রাম হিসাবে উঠে এসেছে
আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সীমান্তের পরিকাঠামো ভাল হয়েছে জানিয়ে শাহ বলেন, আজ সীমান্তে যোগাযোগের উন্নতি হয়েছে। মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ হয়েছে। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলির পরিকাঠামো এতটাই উন্নয়ন হয়েছে যে সেটা দেশের প্রথম গ্রাম হিসাবে উঠে এসেছে। দেশের অন্যান্য গ্রামের মতো সীমান্তবর্তী গ্রামের উন্নয়ন করতে চাই।
মন্ত্রীর কথায়,প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে যোগাযোগে স্থলবন্দর বিশেষ ভূমিকা পালন করে ৷ প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে স্থলবন্দর বিশেষ ভূমিকা পালন করে। নেপাল হোক, বাংলাদেশ বা ভুটান – সব দেশের সঙ্গে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সফরকালীন এদিন বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত-বাণিজ্য বন্ধ রাখা হয়। অনুষ্ঠানের সময়ে দু’দশের মধ্যে হেঁটে পারাপার নিয়ন্ত্রণ করা হয় বলেও পুলিশের সূত্রে জানা যায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে পেট্রাপোল বন্দর এলাকার নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করা হয়।