দেশের সময় , পেট্রাপোল: বাংলায় তাঁর দু’দিনের সফরে বৃহস্পতিবার প্রথম দিনেই রাজনৈতিক তরজায় নামলেন কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ । তারজন্য বেছে নিলেন, সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মঞ্চ।

উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় বিএসএফের অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে অমিত শাহ বলেন, ‘চোরা চালান, অনুপ্রবেশের মতো অপরাধ স্থানীয় প্রশাসনের সাহায্য ছাড়া আটকানো যায় না।’ এরপরই খানিক হুঁশিয়ারির সুরে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু খুব শিগগির সেই রাজনৈতিক পরিস্থিতিও তৈরি হয়ে যাবে।’ আরও বলেন, ‘আমরা সাংবিধানিক পথেই আমাদের সীমান্তরে দুর্ভেদ্য বানাব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সীমান্ত সুরক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছেন।’

বাংলার চলতি রাজনৈতিক বিতর্ক এবং রাজ্য বিজেপির দাবিদাওয়ার প্রেক্ষিতে অমিত শাহের এদিনের বক্তব্যকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। গরু পাচার চক্র নিয়ে সিবিআই ও ইডির তদন্তে বাংলার শাসক দলের একাধিক ক্ষমতাধর নেতার নাম জড়িয়েছে। অন্যদিকে, দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশের কথা বলে আসছে বিজেপি। তাদের অভিযোগ, তৃণমূলের প্রশ্রয়ে বাংলাদেশিরা এদেশে আশ্রয় পাচ্ছে। পাশাপাশি ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়েও সরব বিজেপি।

এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সাংবিধানিক পথে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছে রাজ্য বিজেপি। দিন কয়েক আগে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দ্য ওয়াল-কে বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে ধাক্কা দিয়ে সরাতে হবে। পরের বিধানসভা ভোট পর্যন্ত অপেক্ষা করার অর্থ রাজ্যের সর্বনাশ করা। সূত্রের খবর, দিলীপের ব্যক্তিগত অভিমতকে এবার দলীয় সিলমোহর দিয়ে অমিত শাহের দরবারে পেশ করা হবে আগামীকাল। শুক্রবার কলকাতায় তিনি দলের সাংসদ, বিধায়ক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

অমিত শাহের আজকের সফরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সঙ্গী হয়েছেন। বনগাঁয় অমিত শাহ বলেন, ‘বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আমাকে অনুপ্রবেশের সমস্যা নিয়ে বলেছেন। আমি বলছি, স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া অনুপ্রবেশ, চোরাচালান ইত্যাদি আটকানো কঠিন।’

এদিন বনগাঁয় ভরত–বাংলাদেশ মৈত্রী সংগ্রহালয়ের শিলান্যাসও করেন অমিত শাহ। তিনি এও বলেন, যে সীমান্তরক্ষীদের ত্যাগ, সমস্যা বিষয়ে অবহিত প্রধানমন্ত্রী। সীমান্তরক্ষীর সমস্যা যাতে কমানো যায় তা তিনি নিশ্চিত করতে চান। তাঁর কথায়, ‘‌কঠিনতম পরিস্থিতিতে সীমান্ত রক্ষা করে চলেছে বিএসএফ’‌।

বনগাঁ পেট্রাপোল সীমান্তের অনুষ্ঠানে এদিন উপস্থিত ছিলেন বনগাঁ লোকসভার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, গাইঘাটা বিধান সভার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর , বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া এবং বনগাঁ পৌরসভার কাউন্সিলর দেবদাস মন্ডল, প্রমুখ। এদিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা শান্তনু ঠাকুরকে সিএএ নিয়ে প্রশ্ল করলে তিনি বলেন আগামী ২৪ সালের আগেই সিএএ হবেই৷

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারেবারেই বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। তাদের নজর এড়িয়ে কীভাবে পাচার, চোরাচালান চলতে পারছে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here