দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ : নিয়োগ কেলেঙ্কারি থেকে কয়লা-গরু পাচার, বিগত কয়েক বছরে একের পর এক ইস্যুতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। মাঠে নেমেছে ইডি । গারদে ঠাঁই হয়েছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডলের মতো তাবড় তাবড় নেতাদের। অস্বস্তি বেড়েছে শাসকদল তৃণমূলের ৷ বাংলায় ভোটে হেরে প্রতিহিংসার রাজনীতি করতেই এসব করেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। বিতর্কের আবহে এ কথা বলেই গলা চড়াতে দেখা গিয়েছে ঘাসফুল শিবিরের নেতাদের।
এবার কলকাতা আসতেই একই সুর শোনা গেল সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবের গলাতেও। তাঁর দাবি, উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির উপরেই সবথেকে বেশি ইডি-সিবিআই লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
চব্বিশের লোকসভা ভোটে বিজেপিকে ঠেকাতে তৃতীয় ফ্রন্ট তৈরি হবে কি না, জোটে থাকবে কারা, নেতৃত্বে কোন দল থাকবে, অখিলেশ কলকাতায় আসতেই এই প্রশ্নগুলিই ফের জোরালো হতে শুরু করেছে।
কলকাতায় পা দিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে অখিলেশ বলেন, “ ২০২৪ সালে মোদীকে কীভাবে আটকানো যাবে, রণকৌশল কী হবে তা আমরা শীঘ্রই ঠিক করে ফেলব।” এরপরই ইডি-সিবিআই তদন্ত নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। এক হাত নেন কংগ্রেসকেও। বলেন, “ইডি-সিবিআই এই প্রথমবার তদন্ত করছে এমন নয়। এর আগে এই সংস্থাগুলিকে কংগ্রেসও ব্যবহার করেছে। এখন ভারতীয় জনতা পার্টি এই সংস্থাগুলির ব্যবহার করছে।”একইসঙ্গে হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, “ইতিহাস বলছে যে পার্টিই ক্ষমতায় এসে ইডি-সিবিআইয়ের ব্যবহার করেছে তাঁদেরই হেরে যেতে হয়েছে দিনের শেষে। দিল্লি থেকে চলে যেতে হয়েছে। বাংলায়, বিহারে, তেলেঙ্গানায়, অন্ধ্রপ্রদেশে, তামিলনাড়ুতে, উত্তরপ্রদেশে বিরোধী দলের নেতাদের উপর প্রায়শই মিথ্যা মামলা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।” বাংলার রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতিতে অখিলেশের এ মন্তব্য তৃণমূলকে নতুন করে অক্সিজেন দেবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অখিলেশের কথায়, “আমাদের ভোট দিতে হবে সংবিধানকে বাঁচাতে। বাংলায় বিজেপিকে ঠেকানো সম্ভব হলে উত্তরপ্রদেশেও বিজেপিকে আটকানো যাবে। উত্তরপ্রদেশে বিজেপি না জিতলে আজকে দেশে বিজেপি জিততে পারত না। ওখানে আমাদের লড়াইটা অনেক বড় শক্তির সঙ্গে।” এখানেই না থেমে অখিলেশের স্পষ্ট দাবি, উত্তরপ্রদেশে বিজেপিকে হারাতে পারলে দেশের বাকি জায়গা থেকেও বিজেপিকে সরানো সম্ভব হবে। আর সে কারণেই একজোট হয়ে লড়াইয়ের ডাক দিলেন তিনি। এখানেই না থেমে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর সপ্তমে তুলে সপা প্রধান বলেন, “গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হবে। যাতে আগামী প্রজন্ম বুক বাজিয়ে বলতে পারে বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বদাই লড়াইয়ের ময়দানে ছিল সমাজবাদী পার্টি।বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে যে কাজ করছেন আমরাও উত্তরপ্রদেশে বিজেপিকে ঠেকাতেই সেই কাজই করছি।”
প্রসঙ্গত , আগামীকাল থেকে কলকাতায় শুরু হতে চলেছে সমাজবাদী পাটির জাতীয় কর্মসমিতির দুদিনের বৈঠক। তাতে যোগ দিতে ও তৃণমূল সুপ্রিমো এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজনৈতিক বৈঠক করতে শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো ও উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ সিং যাদব । আর এখানে এসেই তৃণমূল কংগ্রেসের ভূয়সী প্রশংসা করলেন তিনি। সেই সঙ্গে বিজেপিকে হারিয়ে রাজ্যে ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে ক্ষমতায় আনার জন্য কলকাতার মানুষকে অভিনন্দনও জানান।