দেশের সময় , কলকাতা : নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে ইডির জিজ্ঞাসাবাদের জবাব দিতে ইডি দফতরে পৌঁছলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় তাঁকে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি দফতরে পৌঁছতে বলা হয়েছিল। দেখা গেল সময় মতোই পৌঁছে গিয়েছেন অভিষেক।
এর আগে গত ৩ অক্টোবর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইডি দফতরে ডাকা হয়েছিল। ওই দিন দিল্লিতে তাঁর ধর্না কর্মসূচি থাকায় অপারগতার কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন অভিষেক। তবে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক ১০ অক্টোবরের মধ্যে তাঁর আয় ব্যয়ের হিসাব পেশ করেছিলেন তিনি।
তৃণমূলের অভিযোগ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই বারবার অভিষেককে তলব করা হচ্ছে। এবং একই প্রশ্ন করা হচ্ছে। শেষ বার ইডি দফতর থেকে বেরিয়ে একই কথা বলেছিলেন অভিষেকও। তাঁর কথায়, লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের অ্যাকাউন্টে যে লেনদেনকে কয়লা পাচারের সঙ্গে জোড়ার চেষ্টা করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি, সেই টাকাই আবার নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে জোড়ার চেষ্টা করছে তারা। অভিষেক দাবি করেছিলেন, নিয়োগ দুর্নীতির ১০ পয়সাও তাঁর অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে বলে প্রমাণ করতে পারবে না ইডি।
তবে অভিষেক এও বলেছিলেন, এখানকার ইডি অফিসারদের প্রতি তাঁর কোনও অসন্তোষ নেই। তাঁদের খুব কিছু করণীয় নেই। দিল্লি থেকে যা নির্দেশ আসছে তাই করতে হচ্ছে।
মন্ত্রী শিশু পাঁজা বলেছেন, “অভিষেকের জন্ম দিনের দিনই উপহার স্বরূপ সমন পাঠিয়েছে যে বৃহস্পতিবার ইডি অফিসে হাজিরা দিতে হবে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্যই যাবেন। সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেবেন।”
প্রসঙ্গত, গত ছ’মাসে অভিষেককে একাধিকবার তলব করে ইডি সিবিআই। এর আগে ২০ মে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তলব করে সিবিআই। এরপর নবজোয়ার যাত্রার মধ্যেই তৃণমূল ‘সেনাপতিকে’ ডেকে পাঠায় ইডি। দিনটা ছিল ১৩ জুন।
এরপর তিন মাস ছেড়ে গত ১৩ই সেপ্টেম্বর ইন্ডিয়া জোটে সমন্বয় কমিটির বৈঠকের দিন ফের অভিষেককে তলব করে ইডি। ওই দিন বৈঠকে প্রতিবাদ স্বরূপ অভিষেকের চেয়ার ফাঁকা রাখা হয়। এরপর গত ৩ অক্টোবর দিল্লিতে তৃণমূলের ধরনা ছিল। সে দিনই অভিষেককে আবার ডেকে পাঠান ইডি আধিকারিকরা। তবে ওই দিন হাজিরা দেননি তৃণমূল সাংসদ। তারপর ৯ অক্টোবর আবারও তলব করে ইডি।
সেই নোটিশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে যান তিনি। আদালত সম্পত্তির নথি ইডির কাছে জমা দিতে বলে। ১০ অক্টোবর অভিষেক ইডিকে সেই নথি জমা দেন। প্রসঙ্গত, তৃণমূল কংগ্রেসের বিভিন্ন নেতাদের ক্ষেত্রে অনেকাংশে দেখা যায় তারা বিভিন্ন সময়ে তলব এড়িয়েছেন। সেখানে অভিষেককে যতবারই কেন্দ্রীয় এজেন্সি ডেকেছে বেশিরভাগ সময়ই তিনি তদন্তে সহযোগিতা করতে হাজিরা দিয়েছেন। ফলত, দলের নেতা-নেত্রীদের একাংশ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তদন্ত সহযোগিতা করার মনোভাবকে তাঁদের বক্তৃতায় তুলে ধরেছেন বারেবারে।