Mamata Banerjee’s photo on indoor stage ইন্ডোরের তৃণমূলের মঞ্চে শুধুই দিদির ছবি , ‘বাদ’ অভিষেক

0
7

বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেসের কনভেনশন রয়েছে। ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বুথ স্তরের কর্মীদের নিয়ে এই সভা করতে চলেছেন সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কারণে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম সেজে উঠেছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে মূল মঞ্চে সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি থাকলেও নেই সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও ছবি। নেই তাঁর নামও। আর তারপরই ছড়িয়েছে জল্পনা।

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের বিশেষ সম্মেলনে দলের সমস্ত অঞ্চল সভাপতি থেকে জাতীয় কর্মসমিতির সদস্যদের উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন জোড়াফুল নেতৃত্ব। তৃণমূলের সমস্ত শাখা সংগঠনের নেতৃত্বকেও উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। আগামিকাল, বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূলের বিশেষ সম্মেলনে যত প্রতিনিধি আসতে চলেছেন, তাতে স্টেডিয়াম উপচে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন জোড়াফুলের একাধিক নেতা। এই পরিস্থিতিতে শাখা সংগঠনের প্রতিনিধিদের জন্য দরকার হলে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে বসার ব্যবস্থা করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর।

বুধবার  সন্ধেয় দেখা গেল, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মঞ্চ সজ্জার কাজ জোরকদমে চলছে। তবে মঞ্চের ছবিতে শুধুই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ছবিতে অভিষেক নেই। কর্মিসভার পোস্টার, ব্যানারে অভিষেকের ছবি থাকছে না। 

এর আগে শেষবার নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূলের বর্ধিত কর্মিসভা হয়েছিল ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে। তার পর থেকে ১ বছর ৩ মাস অতিবাহিত। ঘটনাচক্রে সেই সভাতেও অভিষেকের কোনও ছবি ছিল না। বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছিলেন না।

দিদি জানিয়েছিলেন অভিষেকের চোখে একটি ক্ষত হয়েছে। রক্ত বেরোচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়েছে। 

ঠিকই জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চোখের কনট্যাক্ট লেন্স এমনভাবে জুড়ে গেছিল যে খুলতে গিয়ে রক্ত বেরিয়ে যায়। তবে সে ব্যতিরেকেও ওই সভার পর থেকে দিদি ও অভিষেকের মতান্তর ও মনান্তরের একটা আপাত ছবি দেখা যায়। যা চলে লোকসভা ভোটের প্রায় দোরগোড়া পর্যন্ত।

কৌতূহলের বিষয় হল, এবারও যে অভিষেকের ছবি নেই, তা কি কোনও বার্তাবহণ করছে?

কালীঘাটের ঘনিষ্ঠ সূত্রে বলা হচ্ছে, যে মতান্তরের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছিল, তার পুরোটা ঠিক না হলেও কিছু বিষয়ে দুজনেই সহমত হয়েছেন। এ ব্যাপারে গত পক্ষকালে একাধিকবার মমতা-অভিষেকের বৈঠক হয়েছে। মাঝে গত সপ্তাহে একবার আই-প্যাকের প্রতীক জৈনকে ডেকেও কথা বলেছেন দিদি। তার পরই নেতাজি ইন্ডোরের মিটিং ডাকা হয়েছে।

তাই এই মিটিংয়ে অভিষেক ও মমতার বক্তৃতার মধ্যে একটা তালমিলও দেখা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। দুজনেই সংগঠনের খামতির কথা বলবেন। দুজনেই বেপরোয়াদের উদ্দেশে বার্তা দেবেন। দুজনেই ভোটার তালিকায় ভুতুড়ে ভোট নিয়ে সতর্ক করতে পারেন দলকে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বানে নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূলের বিশেষ সম্মেলন নিয়ে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী জেলায় একাধিক নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন। তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের বক্তব্য, অঞ্চল প্রধান, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে সব প্রতিনিধিকে কাল নেতাজি ইন্ডোরে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এই স্টেডিয়ামে মেরেকেটে ১৩ হাজার লোক ধরে। তাই বিশেষ সম্মেলনে কারা প্রতিনিধি হিসেবে থাকবেন, তা নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বকে অনেক ভাবনাচিন্তা করতে হচ্ছে।

নেতাজি ইন্ডোরে বৃহস্পতিবার সকালে এসে সমস্ত প্রতিনিধিকে ডেলিগেট কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। কলকাতা পুরসভা এলাকায় সমস্ত ওয়ার্ড সভাপতি এই বিশেষ সম্মেলনে থাকবেন। তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলার সভাপতির পাশাপাশি এসসি–ওবিসি সেল, এসটি সেল, সংখ্যালঘু সেল, কিষান–খেতমজুর সেলের জেলা সভাপতিদেরও ইন্ডোরে হাজির থাকতে হবে। মহিলা তৃণমূল, যুব তৃণমূল, আইএনটিটিইউসি, টিএমসিপি–র মতো দলের প্রধান শাখা সংগঠনগুলির রাজ্য কমিটির সদস্যরাও থাকবেন ইন্ডোরে।

এই সম্মেলন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে কী রোডম্যাপ তুলে ধরেন, সেই দিকে এখন তাকিয়ে রয়েছেন তৃণমূলের নেতারা। কিন্তু সাংগঠনিক রদবদল কতটা হবে, কোন স্তরে হবে, বা আদৌ হবে কি না— জোড়াফুলের নেতাদের মধ্যে এমন অনেক প্রশ্ন রয়েছে। সাংগঠনিক দায়িত্ব থাকা তৃণমূলের প্রথম সারির এক সাংসদের কথায়, ‘এই সভায় সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বদল হবে বলে মনে হচ্ছে না। রাজ্য কমিটি স্তরে হয়তো কিছু সংযোজন–বিয়োজন হতে পারে।’ তৃণমূলের শাখা সংগঠনের নেতৃত্বে থাকা এক পোড়খাওয়া নেতার বক্তব্য, ‘ফ্রন্টাল অর্গানাইজে়শনে অদলবদল হবে বলে অনেক দিন ধরে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু নেতাজি ইন্ডোরে হবে কি না, এখনও স্পষ্ট নয়।’

তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদলের সম্ভাবনা নিয়ে নেতাদের মধ্যে ধোঁয়াশা থাকলেও ২০২৬ সালের ভোটের দিকে তাকিয়ে এই সম্মেলনের পর থেকে নেতা–কর্মীদের ময়দানে নেমে যাওয়ার নির্দেশ দিতে পারেন সর্বোচ্চ নেতৃত্ব— এমনই মনে করছেন অধিকাংশ নেতা। এই সম্মেলনের পর জোড়াফুলের পরবর্তী বড় ইভেন্ট হবে ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ। এই দুই ইভেন্টের মধ্যবর্তী পর্যায়ে জনসংযোগ ও প্রচারের কর্মসূচি ঘোষিত হতে পারে নেতাজি ইন্ডোরে।

Previous articleAbhishek Banerjee-CBI নিয়োগ দুর্নীতিতে জনৈক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১৫ কোটি টাকা দাবি, ‘কাকু’র কণ্ঠ পরীক্ষা করে  চার্জশিটে- উল্লেখ  সিবিআই-এর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here