![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2025/02/DESHER-SAMAY_20240806150717214-1-150x150.jpg)
বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত বাণিজ্যে গতি আনতে এশিয়ার বৃহত্তম স্থলবন্দর পেট্রাপোলের সুসংহত চেকপোস্টের সাফল্যের কথা গত বছর ‘মৈত্রী দুয়ার’ উদ্বোধন করার সময়ই উল্লেখ করেছিলেন অমিত শাহ নিজেও। সুসংহত চেকপোস্টের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও জানান , বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলপথে বাণিজ্যের ৭০ শতাংশই যে এই বন্দর দিয়ে হয়, তা-ও উল্লেখ করেন শাহ।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পরিসংখ্যান দিয়ে দাবি করে, ‘‘২০১৬-১৭ সালে পেট্রাপোল দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।’’ অর্থাৎ গত বছরেই এই পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ সাড়ে ৩০ হাজার কোটি ছাড়িয়েছে।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2025/02/1677_202502111720476605053242914877794767-150x150.jpg)
এই স্থল বন্দরে ‘মৈত্রী দুয়ার’ চালু হওয়ার পরে ২০২৫ সালের প্রথম দু’মাসে আরও ‘বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে’ বলে দাবি করেন পেট্রাপোল ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার ম্যানেজার কমলেশ সাইননি । তাঁর কথায় ‘মৈত্রী দুয়ার’ চালু হওয়ার পরে রফতানি বেড়েছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ট্রাকের চলাচল দ্রুত ও মসৃণ হওয়াতেই এই সাফল্য এসেছে ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ২০১১ সালের অগস্টে পেট্রাপোল বন্দরে সুসংহত চেকপোস্ট তৈরির শিলান্যাস করেছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম। ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বাণিজ্যের জন্য আধুনিক পরিকাঠামো থাকা সুসংহত চেকপোস্টটি চালু হয় ২০১৬ সালে।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2025/02/img-20241220-wa0177-150x1503781803415791793837-1.jpg)
পেট্রাপোল সীমান্ত বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত সিয়াম লজিষ্টিক প্রাইভেট লিমিটেড – এর কর্ণধার সুমন রায় বলেন, ‘‘মৈত্রী দুয়ার চালু হওয়ার পরে দু’দেশের মধ্যে পণ্য রফতানি ও আমদানি ট্রাকের চলাচল দ্রুত ও মসৃণ হয়েছে। আগে গড়ে ৩৫০-৪০০টি ট্রাক পণ্য রফতানি হত। এখন প্রায় ৪৫০ টি ট্রাক রফতানি করছে।’’
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2025/02/desher-samay_20240507131845910-150x1508804295830892244825-1.jpg)
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্থলপথে বাণিজ্যে আরও গতি আনতে গত বছর অক্টোবর মাসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পেট্রাপোল সুসংহত চেকপোস্টে এসে মৈত্রী দুয়ারের উদ্বোধন করেন। চেকপোস্টের মধ্যে পণ্য রফতানি ও আমদানি ট্রাক চলাচলের জন্য চারটি চওড়া রাস্তা নিয়ে তৈরি এই মৈত্রী দুয়ার। দু’টি রাস্তা দিয়ে রফতানি ও দু’টি রাস্তা দিয়ে আমদানির ট্রাক চলাচল করছে। আগে চেকপোস্টের মধ্যে থাকা দু’টি রাস্তা দিয়ে রফতানি ও আমদানির ট্রাক চলাচল করত। ফলে সময় তুলনায় বেশি লাগত। কোনও কারণে পথে ট্রাক খারাপ হয়ে গেলে মেরামত না হওয়া পর্যন্ত সব ট্রাকের চলাচল বন্ধ হয়ে যেত। দীর্ঘ লাইন পড়ত। যানজট হত। হঠাৎ কোনও ট্রাকের পণ্য পরীক্ষার প্রয়োজন হলেও ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকত। এখন সে সমস্যা মিটেছে। বাণিজেও গতি বেড়েছে।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2025/02/img-20241221-wa0017-150x1504570599335760822629-1.jpg)
পেট্রাপোল এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সমিতির সদস্য রামকৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন,বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সত্যিই আমরা উদ্বিগ্ন। তবে এখনও পর্যন্ত সীমান্ত বাণিজ্যে এর তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি। বাংলাদেশে চারটি ব্যাঙ্কে সমস্যা তৈরি হয়েছে। আমরা ওপার বাংলায় যাদের সামগ্রী পাঠাচ্ছি, তাদের স্পষ্ট বলে দিচ্ছি, যে ব্যাঙ্কে সমস্যা হবে না, তার মাধ্যমেই যেন লেনদেন করা হয়। তাঁরা সেইমতো ব্যবস্থা করছেন। ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তা তো আছেই, কিন্তু সেকথা ভেবে হাতগুটিয়ে বসে থাকলে তো না খেয়ে মরতে হবে। তাই ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে ‘মৈত্রী দুয়ার’ চালু হওয়া বিশেষ সুবিধা হয়েছে বাণিজ্যে। রামকৃষ্ণর দাবি, বাংলাদেশে কাঁচামালের জোগানে কিছুটা ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সেকারণে ওপার বাংলা থেকে আসা পণ্যের পরিমাণ কমেছে। কিন্তু এপার থেকে যাওয়া সামগ্রীর পরিমাণ বেড়েছে।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2025/02/ei_1739274058196-removebg-preview8784447855638776069-150x150.png)
পেট্রাপোল এক্সপোর্ট এন্ড ইমপোর্ট ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন এর সম্পাদক প্রদীপ দে জানান , বাংলাদেশের পরিস্থিতির কারণে মাঝে কিছু দিন রফতানি কমলেও এখন পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে দৈনিক গড়ে ৪৫০ ও বেশি ট্রাক পণ্য রফতানি করছে। ফলে ‘মৈত্রী দুয়ার’ এর চালু হওয়ায় ব্যাবসায়ীরা উপকৃত এবং খুশি ।