দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ শাড়ি পরা এক মহিলা রাতের অন্ধকারে হাঁটাচলা করছেন। পায়ে বাঁধা রয়েছে ঘুঙুর। কাঁদতে কাঁদতে পায়ে বাঁধা ঘুঙুরের আওয়াজ করছেন তিনি। তিনি মানুষ নন, ‘ভূত’। এমনই কিছু ভিডিয়ো ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে।
রাতের অন্ধকারে ওই মহিলাকে দেখা যাচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের কদম্বগাছির রাস্তায় । ‘ভূত’ নিয়ে গুজব রটতে শুরু করেছে এলাকায়। তা নিয়ে সতর্ক বার্তা দিচ্ছে প্রশাসন।
হাবড়ার বাণীপুরের পরে এ বার জেলা সদর বারাসতের কদম্বগাছিতে ভূতের আতঙ্ক। গুজব বলা হলেও কিছু সংখ্যক মানুষ এই ঘটনায় যথেষ্ট আতঙ্কিত। ‘ছেলেধরা’ গুজবে কয়েকমাস আগেই ত্রাহি ত্রাহি রব ওঠে বারাসতে। সদর শহর লাগোয়া বেশ কয়েকটি গ্রামে এ বার ‘ভূত’- এর আতঙ্ক। শীতকাল পড়তে না পড়তেই বিকাল ৫ টার পর কার্যত গৃহবন্দি হয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। রাত হলেই অত্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউই বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না।
বারাসত শহর লাগোয়া কদম্বগাছি পঞ্চায়েত। পঞ্চায়েতের অধীনে রয়েছে উলা, বয়রা, কালসারা, কাঁঠালিয়া, জাগুলি-সহ একাধিক গ্রাম। মূলত এই গ্রামে বিঘার পর বিঘা জমিতে আম চাষ হয়। এমনকী জমির পাশে পাশে রয়েছে বাঁশবাগানও। সন্ধ্যার পর এমনিতেই নিরিবিলি বিস্তীর্ণ এলাকা। ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকা না হলেও বহু মানুষেরই যাতায়াত রয়েছে এই এলাকা দিয়ে। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে একাধিক ভিডিয়ো। দাবি করা হচ্ছে সেগুলি এই এলাকারই।
স্থানীয়রাও এই ভিডিয়োর কথা জানেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ আবার ভূতের কথা মানতে নারাজ। স্রেফ গুজব বলেও ধরে নিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা অদুত আলি, মির্তাজুল বলেন, ‘সপ্তাহখানেক ধরে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এই দানব। প্রায় সবার ফোনে এই ভিডিয়োটি রয়েছে। এটা সত্যি না মিথ্যা তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়।’ অনেকে বলছেন, দু’বছর আগেও এই ধরনের ভিডিয়ো ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
পশ্চিমবঙ্গ যুক্তিবাদী মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক প্রদীপ সরকার বলেন, ‘সমস্তটাই মানুষকে বিভ্রান্ত ও অন্যপথে পরিচালিত করতে এটা রটানো হচ্ছে। এই ধরনের কোনও বিষয় নেই।’ গুজব ছড়ানোর বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে প্রশাসনের তরফেও।
বারাসত এসডিপিও অজিঙ্ক অনন্ত বলেন, ‘বিষয়টি আজ সকালেই শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। গোটাটাই গুজব, কেউ রিল বানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়েছে। কে বা কারা এই ভিডিয়ো বানিয়েছে, কাদের প্রোফাইল থেকে এমন ভিডিয়ো ভাইরাল হচ্ছে, খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। যাঁরা এমন কাজ করেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’