পেট্রাপোল : বাজারে গিয়ে ইলিশের সম্ভার দেখলেও মন ভরছিল না বাঙালির। অনেকেই ভাবতে বসেছিলেন, কলকাতাবাসীর কি এবার পদ্মার ইলিশ খাওয়া হবে না? দাম দিতে হলেও পদ্মার ইলিশ চেখে দেখতে প্রতিবারই ইলিশ প্রিয় বাঙালির বিশেষ উৎসাহ থাকে। তবে এবার ইলিশ নিয়ে জটিলতা চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। অবশেষে গত বুধবার ভারতে ইলিশ রফতানিতে ছাড়পত্র দিয়েছে অন্তর্বর্তিকালীন বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এই অনুমতির মেয়াদ আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত। এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে মোট চব্বিশশো কুড়ি মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে মুহাম্মদ ইউনূস সরকার। দেখুন ভিডিও
সমস্ত প্রস্তুতি শেষ করে পুজোর আগে এরাজ্যে ঢুকতে শুরু করল বাংলাদেশের ইলিশ মাছ। বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তর ২৪ পরগণার পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করল ইলিশ বোঝাই ট্রাক। এদিন বাংলাদেশের রূপালি শস্য নিয়ে ভারতে প্রবেশ করে প্রথম দুটি ট্রাক। এদিন সন্ধ্যাতেই ইলিশ পাইকারি বাজার থেকে পৌঁছে যাবে রাজ্যের বিভিন্ন খুচরো বাজারে।
যদিও কত দামে বিক্রি হবে সে সম্পর্কে এখনও কিছু নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না এরাজ্যের পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তাঁদের মতে যোগান কম থাকায় এবার চড়া হতে পারে বাংলাদেশের ইলিশ মাছের দাম। ওয়েস্ট বেঙ্গল ফিস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেন, ‘এবছর গতবারের থেকেও কম ইলিশ আমদানির অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু যা খবর পাচ্ছি তাতে সেই পরিমাণ মাছও এবছর পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। কারণ, বাংলাদেশের নদীতেও সেভাবে মাছ ধরা পড়ছে না। ফলে অনুমতি থাকলেও সেই পরিমাণ ইলিশ সে দেশের ব্যবসায়ীরা পাঠাতে পারবে কিনা সে সম্পর্কে আমরা খুবই সন্দিহান।’ ইলিশ উৎসব শুরু দেখুন ভিডিও
মাছের দাম কীরকম হতে পারে? সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ জানিয়েছেন, ‘পাইকারি বাজারে মাছ নিলাম করে বিক্রি হয়। যা অবস্থা তাতে আমাদের ধারণা সেখানেই মাছ কেজি প্রতি ১৪০০ টাকা দামে বিক্রি হবে। এরপর খুচরো বাজারে যে যেরকম পারবে বিক্রি করবে।’ স্বাভাবিকভাবেই পাইকারি বিক্রির দাম থেকে এই ইঙ্গিতই পাওয়া যায় প্রতিবেশী রাজ্যের ইলিশ এবছর খুচরো বাজারে চড়া দামে বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
এর আগে বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর আদৌ বাংলাদেশের ইলিশ এরাজ্যের মৎস্যপ্রেমীরা পুজোর সময় পাবেন কিনা সেই নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। শেষপর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার পুজোর আগে ভারতের জন্য ২৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়। যেটা বাংলাদেশের ৪৯টি রপ্তানি সংস্থা ভারতে রপ্তানি করবে বলে স্থির হয়। আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশের নদীতে মাছ ধরা হবে। তারপর ইলিশ ধরার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি হবে। সেই হিসেবে অনুমতি অনুযায়ী শেষপর্যন্ত কত মাছ এদেশে আসে তা এখনও কিছু নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না বলেই পেট্রাপোল সীমান্তের ব্যবসায়ীরাও জানিয়েছেন।
এদিন প্রথম দফায় দুটি ট্রাকে ৯ টনের কাছাকাছি ইলিশ নিয়ে আসা হয়েছে বলে পেট্রাপোল সূত্রে জানা গিয়েছে। ধাপে ধাপে আরও ট্রাক ভর্তি ইলিশ ভারতে নিয়ে আসা হবে।