দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ তখন বিকেল সাড়ে ৪টে। দক্ষিণ কলকাতার ভবানিপুরের মিত্র স্কুলে ভোট দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের বাসভবন থেকে সরাসরি হরিশ মুখার্জি রোড ধরে তিনি আসেন স্কুলে। আর তাঁকে দেখার জন্য দুপুর থেকে অনেক মানুষ অপেক্ষা করছিলেন ভবানিপুর এলাকায়৷ তিনি যখন ভোট দিতে এলেন, তখন চারদিক থেকে দিদি, দিদি বলে ডাকলেন অনেকেই৷
তবে ভোট দেওয়ার পর বিভিন্ন লোকসভা কেন্দ্রে যেভাবে বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী হামলা চালিয়েছে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তৃণমূলনেত্রী। ভোট দিয়ে বেরিয়ে আসার পর তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর প্রচার নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এখানে প্রচার করতে আসিনি। প্রচার করার বিষয়ে কিছু বলব না। তবে গোটা দিন আমাদের কর্মীর ওপর যেভাবে হামলা চালিয়েছে বিজেপি’র সদস্যরা এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী তা আমি আগে কখনও দেখিনি।’ অর্থাৎ গোটা দিন রাজ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলি সম্পর্কে খবর রেখেছিলেন বোঝাই যায়। তাঁর এই ক্ষোভ প্রকাশের মধ্যে দিয়ে বিষয়টি তিনি যে ভালভাবে নিলেন না তা বুঝিয়ে দিলেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
এই প্রথম ভোট দিলেন না বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য এবং মেয়ে সুচেতনা ভট্টাচার্য বালিগঞ্জ পাঠভবন স্কুলে ভোট দিতে গেলেও, গৃহবন্দিই রইলেন বুদ্ধবাবু।
পার্টি অফিসে আসেন না প্রায় দেড় বছর। মাঝে চোখের অসুখে কাবু হয়ে গিয়েছিলেন সিপিএমের প্রাক্তন পলিটব্যুরোর সদস্য। চোখে আলো পড়লে জ্বলা করত। তা কিছুটা কাটলেও শ্বাসকষ্টই এখন বুদ্ধবাবুর একমাত্র অসুখ। প্রায় সারাক্ষণই অক্সিজেন সিলিন্ডার রাখতে হয় সামনে। এর মধ্যেও গত ৩ ফেব্রুয়ারি বামেদের ব্রিগেডে মিনিট পনেরোর জন্য গিয়েছিলেন। গাড়ি থেকে নামেননি। মঞ্চের নীচ থেকেই ফিরে আসেন পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে।
গত সপ্তাহে বুদ্ধবাবুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। সীতারাম আবেদন করেছিলেন শেষ দফার ভোটের আগে একটি ভিডিও বার্তা দিতে। কিন্তু রাজি হননি অসুস্থ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কথা দিয়েছিলেন চেষ্টা করবেন ভোট দিতে যাওয়ার। প্রতিবার স্ত্রী মেয়ের সঙ্গে ভোট দিয়ে পার্টি অফিসে যাওয়া ছিল রুটিন। ষোলর ভোটে প্রায় মৃত্যু পথযাত্রী অশোক মিত্র বুথে গিয়েছিলেন ভোট দিতে। কিন্তু ভোট দিতে পারলেন না বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।তবে তিনি স্ত্রী ও মেয়েকে পাঠিয়ে ছিলেন গণতন্ত্রের উৎসবে সামিল হওয়ার জন্য।