দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আরজি কর কাণ্ডে দ্রুত বিচারের দাবিতে পথে নেমেছিলেন কলকাতার মানুষ। মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অসন্তোষ এতটাই তীব্র যে জুনিয়র ডাক্তার থেকে শুরু করে বড় অংশের মানুষ এ ব্যাপারে যেন অপেক্ষা করতে চান না। খুব স্বাভাবিক কারণেই অসহিষ্ণু হয়ে পড়ছেন তাঁরা।
কিন্তু মঙ্গলবার আরজি কর মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূ়ড় জানিয়ে দিলেন, সিবিআইকে সময় বেঁধে তদন্ত শেষ করতে বলা ঠিক হবে না।
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, ‘চিঠিতে মৃতার বাবার উদ্বেগ ধরা পড়েছে। উনি যেটা জরুরি বলে মনে করছেন সেটাই জানিয়েছেন। সিবিআই এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি খতিয়ে দেখবে। স্ট্যাটাস রিপোর্টে যা বলা হয়েছে তা ভয়াবহ। আমরা উদ্বিগ্ন।’
সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে এদিন সিবিআই আরজি কর তদন্তে দ্বিতীয় স্ট্যাটাস রিপোর্ট পেশ করেছে। তা পড়ে দেখেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূ়ড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্র। তার পর প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা স্ট্যাটাস রিপোর্ট পড়ে দেখেছি। সিবিআই তদন্ত নিয়ে ঘুমিয়ে নেই। তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে বা সময় বেঁধে তদন্ত শেষ করতে বললে প্রকৃত উদ্দেশ্য সিদ্ধ হবে না। সুতরাং সিবিআইকেও তদন্তের জন্য সময় দিতে হবে।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, সর্বোচ্চ আদালত যে যে বিষয়গুলি প্রশ্ন তুলেছিল, সিবিআই সেই বিষয়গুলিতে নজর দিয়েছে। এমনকি স্ট্যাটাস রিপোর্টে ময়নাতদন্তের চালানের ব্যাপারে উল্লেখ রয়েছে।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, সিবিআই যে রিপোর্ট দিয়েছে তা প্রকাশ করছি না। তবে তারা রিপোর্টে যা যা লিখেছে তা খুবই উদ্বেগজনক।
জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশে আদালত
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট জানায়, আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার দিন অকুস্থলে কারা ছিলেন, সেই সব নাম জমা দিতে পারবেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। একই সঙ্গে তদন্তকারী সংস্থাকে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, তদন্তের স্বার্থে ওই বিষয়গুলি নিয়ে সিবিআইকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে।
‘জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে না’
চিকিৎসকদের সংগঠন ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস ওয়েস্ট বেঙ্গলের’ আইনজীবী করুণা নন্দী সুপ্রিম কোর্টে বলেন, “জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে বলে বলা হয়েছে। এটা ঠিক নয়। সিনিয়র ডাক্তারেরা কাজ করছেন।”
নির্যাতিতার নাম মুছে ফেলতে হবে উইকিপিডিয়াকে
উইকিপিডিয়াকে নির্যাতিতার নাম মুছে ফেলতে হবে। নির্দেশ শীর্ষ আদালতের।
নির্যাতিতার বাবার বক্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ আদালতের
প্রধান বিচারপতি বলেন, “নির্যাতিতার বাবা যে সব বিষয় তুলেছেন, সিবিআইয়ের সেগুলি দেখা উচিত।”
কত ক্ষণের ফুটেজ দেওয়া হয়েছে? রাজ্য বলছে সাত থেকে আট ঘণ্টা, সিবিআই বলছে মাত্র ২৭ মিনিটের
কত ক্ষণের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ? আদালতে পরস্পরবিরোধী দাবি রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, সাত-আট ঘণ্টার ফুটেজ দেওয়া হয়েছে সিবিআইকে। প্রধান বিচারপতি রাজ্যের উদ্দেশে বলেন, “তা হলে সিবিআই কেন বলছে, ২৭ মিনিটের ফুটেজ দেওয়া হয়েছে? এখানে বলা হচ্ছে একটি ক্যামেরার ফুটেজ দেওয়া হয়েছে।”
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে প্রশ্ন ফিরোজ এডুলজির
জনস্বার্থ মামলাকারী বিজয়কুমার সিঙ্ঘলের আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি আদালতে বলেন, “কলকাতা পুলিশ কেন ২৭ মিনিটের ফুটেজ দিল? বাকি ফুটেজ দিল না কেন?” তাঁর অভিযোগ, সিজ়ার লিস্টে নির্যাতিতার জিন্স এবং অন্তর্বাস নেওয়া হয়নি। একই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, নমুনা কবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হল? এডুলজির দাবি, সিসি ক্যামেরার ডিভাইস ব্লক করা হয়ে থাকতে পারে।