রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত তিন অভিযুক্ত,শঙ্কর আঢ্য , বাকিবুর রহমান, এবং বিশ্বজিৎ দাসের জামিনের আবেদন মঞ্জুর হল। মঙ্গলবার বিশেষ ইডি আদালত ৫০ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তিন জনের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছে।
দেশের সময়, কলকাতা: অবশেষে জামিনে মুক্ত রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত তিনজন শংকর আঢ্য, বিশ্বজিৎ দাস,বাকিবুর রহমান। মঙ্গলবার দুপুরে ইডির মামলায় তাঁদের জামিন মঞ্জুর করল ব্যাঙ্কশাল কোর্ট। নিয়মকানুন শেষে আগামিকাল সম্ভবত বাড়ি ফিরবেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, ইডি উপযুক্ত প্রমাণ দিতে পারেনি। সেই কারণেই এই তিনজনের জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। তাতেই প্রশ্নের মুখে ইডির ভূমিকা।
রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে গতবছর প্রথমে ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে ইডি। তাঁকে জেরা করে পাওয়া তথ্য ও নথির উপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে গ্রেপ্তার করা হয় বিশ্বজিৎ দাস, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও শংকর আঢ্য, বাকিবুর রহমান ও বিশ্বজিৎ দাসকে কে। অভিযুক্তদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছিল ইডি। মঙ্গলবার ধৃতদের মধ্যে শংকর আঢ্য, বাকিবুর রহমান ও বিশ্বজিৎ দাসকে তোলা হয় ব্যাঙ্কশাল কোর্টে। যথাযথ প্রমাণ না মেলায় বাকিবুর রহমান, বিশ্বজিৎ দাস ও শংকর আঢ্যর জামিন মঞ্জুর করে আদালত।
রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে গত ১৩ অক্টোবরে গ্রেফতার হয়েছিলেন বাকিবুর। তার আগে তাঁর কলকাতার কৈখালির ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। ইডি সূত্রে দাবি, অনেক প্রভাবশালীর সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করেছিলেন বাকিবুর। তিনি রাজ্যের রেশন ‘দুর্নীতি’র সঙ্গে জড়িত বলেও দাবি ইডির। বাকিবুরের বাড়ি থেকে পাওয়া নথির সূত্র ধরেই গ্রেফতার হয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, যথাযথ প্রমাণ ছাড়া কোনও মামলায় কাউকে দীর্ঘদিন আটকে রাখা যায় না। এদিন আদালতে ওঠে সেই প্রসঙ্গ। জানা গিয়েছে, ধৃতদের বিরুদ্ধে ইডি রেশন দুর্নীতিতে জড়িত থাকার পর্যাপ্ত প্রমাণ দিতে পারেনি বলেই খবর। দুর্নীতির টাকা ব্যবসায় ব্যবহার করা হয়েছে বলেও প্রমাণ মেলেনি। সেই কারণেই এদিন মঞ্জুর করা হয়েছে জামিন।
অন্য দিকে, রেশন দুর্নীতি মামলায় টানা জিজ্ঞাসাবাদের পর জ্যোতিপ্রিয়ের ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা তথা বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর ওরফে ডাকুকে গত ৬ জানুয়ারি গ্রেফতার করেছিল ইডি। যখন ইডি গ্রেফতার করে তখন রাত প্রায় সাড়ে ১২টা। ওই মধ্যরাতেও বাধার মুখে পড়েছিলেন ইডির আধিকারিকেরা। তদন্তকারীদের উদ্দেশে গালিগালাজ করা হয়। সে দিনই শাহজাহান শেখকে গ্রেফতার করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন ইডির আধিকারিকেরা। সন্দেশখালির মতো বনগাঁতেও ইডিকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন মহিলারা। ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দাসকে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে হাওয়ালার মাধ্যমে রেশন দুর্নীতির টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, এদিন জামিনের খবর বনগাঁয় পৌঁছতেই উল্লাসে ফেটে পড়েন শংকর অনুগামীরা। মিষ্টিমুখের মধ্যদিয়ে উৎসবে মাতেন তাঁরা। তৃণমূল কর্মীরা জানিয়েছেন, তাঁদের নেতা যেদিন ফিরবেন বনগাঁয় তাকে নিয়ে একটি বড় বিজয় মিছিল করা হবে।