Bangla Bandh on Wednesdayবুধবার বাংলায় ১২ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক বিজেপির, অভিযোগ, নবান্ন অভিযানে ‘সন্ত্রাস চালিয়েছে পুলিশ

0
191

দেশের সময়, কলকাতা:মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ। আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে যে নবান্ন অভিযান চলে তাতে  ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরী হয়। দেখুন ভিডিও

কলকাতা সহ একাধিক জায়গায় পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাঁধে আন্দোলনকারীদের।এরই মধ্যে নবান্নের ১০০ মিটার দূরত্বে পৌঁছে যায় কয়েকজন বিক্ষোভকারী। তাঁদের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পদত্যাগ চেয়ে স্লোগান তোলা হয়। মিনিট তিনেকের বিক্ষোভের পর বিক্ষোভকারীদের ওই চত্বর থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। 

এদিন ছাত্রসমাজের পাশে দাঁড়াতে বুধবার রাজ্যব্যাপী ১২ ঘণ্টা বন্‌ধের ডাক দিল বিজেপি। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বাংলা বন্‌‌ধের কথা ঘোষণা করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। জানালেন, বুধবার সকাল ছ’টা থেকে সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত চলবে ‘সাধারণ ধর্মঘট’।

মঙ্গলবার দুপুরেও নবান্ন অভিযান নিয়ে মুখ খোলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিধানসভার বাইরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “বহু জায়গা থেকে অত্যাচারের খবর আসছে।” রাজ্য পুলিশ এবং কলকাতা পুলিশকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে দমনপীড়ন না চালানোর আর্জিও জানান তিনি। অন্যথায়, বুধবার ‘রাজ্য স্তব্ধ করে দেওয়ার’ হুঁশিয়ারিও দেন বিরোধী দলনেতা।

মঙ্গলবার নবান্ন অভিযান ঘিরে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় হাওড়া ব্রিজের উপরেও।  আন্দোলনকারীদের সামাল দিতে জল কামান ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে শুরু করে পুলিশ। ধোঁয়া ও জলের তোড়ে কিছুটা ছত্রভঙ্গ হলেও পরক্ষণেই ফের এককাট্টা হয়ে ব্যারিকেড ভাঙতে উদ্দত হয় জনতা।

জনতার ছোড়া ইটে মাথা ফাটে চণ্ডীতলার আইসির। মাথায় গুরুতর চোট পান ব়্যাফের এক জওয়ানও। বেলা যত গড়াতে থাকে ততই বেড়েছে আন্দোলনের ঝাঁঝ। জানা গেছে,বেলা সাড়ে তিনটেতেও পুলিশের বাধা টপকে নবান্নের দিকে এগোনোর চেষ্টা করছে আন্দোলনকারীরা।

রাজ্য পুলিশের কাছে খবর ছিল, এই নবান্ন অভিযানে সামনে মহিলা এবং ছাত্রদের রেখে পিছন থেকে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হতে পারে। এমনকি, পুলিশকে প্ররোচিত করে বলপ্রয়োগে বাধ্য করা হতে পারে বলেও জানিয়েছিলেন রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। এর পরেই শহর জুড়ে কড়া নিরাপত্তা জারি করে পুলিশ।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই নবান্ন চত্বরে ছিল নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ঘেরাটোপ। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বসানো হয় ঝালাই করা গার্ডরেল এবং কন্টেনার। কিন্তু বেলা বাড়তেই একে একে বাড়তে থাকে মানুষের ভিড়। সাঁতরাগাছি, হাওড়া সেতুতে ব্যারিকেড ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা। স্লোগান ওঠে, ‘‘দফা এক, দাবি এক, মমতার পদত্যাগ।’’ পরিস্থিতি সামাল দিতে জলকামান চালানো শুরু করে পুলিশ। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও। ছত্রভঙ্গ হতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা।

ছাত্র সমাজের নবান্ন অভিযানকে বাইরে থেকে সমর্থন জানানোর কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু। সোমবার রাতে যখন নবান্ন অভিযানের আহ্বায়ক ছাত্র সমাজের চার নেতাকে গ্রেফতার করা হয়, তখনও শুভেন্দু আশ্বাস দিয়েছিলেন, যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের ছাড়ানোর ব্যবস্থা করবেন তিনি। জানিয়েছিলেন, এ জন্য যা যা আইনি পদক্ষেপ প্রয়োজন এবং যত অর্থ খরচ হয়, সব বহন করবে তাঁর দল।

সুকান্তের ঘোষণার পরেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘এটা ছাত্রদের আন্দোলন? না সমাজবিরোধীদের আন্দোলন? এরা ছাত্র? সবাই দেখেছে কারা ব্যারিকেড ভাঙতে গিয়েছে। উন্মত্ত জনতাকে আটকাতে যে টুকু করা দরকার সে টুকুই করেছে। পুলিশ কোনও দমনপীড়ন চালায়নি। আবার এর পর পরই বাংলা বন্‌‌ধের ডাক দিয়েছে বিজেপি! ওদের মুখোশ খুলে গিয়েছে। এটা বাংলার বিরুদ্ধে চক্রান্ত। কোনও ফাঁদে পা দেবেন না।আগামিকাল পশ্চিমবঙ্গের বুকে কোনও বাংলা বন্‌‌ধ হবে না। জনজীবন স্বাভাবিক থাকবে। বিজেপির ডাকা বাংলা বন্‌‌ধ ব্যর্থ করুন।’’

এদিকে বিজেপি ১২ ঘন্টা বনধ ঘোষণার আধ ঘণ্টার মধ্যেই বিজেপির ডাকা বাংলা বন্‌ধ পালন করতে নিষেধ করল নবান্ন। নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেনএ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের তরফে স্পষ্ট বার্তায় বাংলার জনগণকে বলা হয়েছে, তাাঁরা যেন বন্‌ধ পালন না করেন। তাঁরা যেন জনজীবন স্বাভাবিক রাখেন। পুজোর বিকিকিনি চলছে যে সমস্ত দোকান-বাজারে, তা যেন খোলা রাখা হয়। রাজ্য জানিয়েছে, তার জন্য কোনওরকম ক্ষতি যদি তাঁদের হয়, সেই ক্ষতিপূরণের দায়িত্ব নেবে রাজ্য সরকার। একই সঙ্গে নবান্ন জানিয়েছে, তারা সমস্ত পরিববহণের স্বাভাবিক চলাচল বজায় রাখার জন্য সমস্ত আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।বাংলাকে স্তব্ধ করার যে প্রয়াস হল এবং হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ অসমর্থনীয়। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা, পরীক্ষা আছে এবং চলছে। শারোদৎসবের বেচাকেনা শুরু হয়ে গিয়েছে। ব্যবসায়ী , কর্মজীবী, পেশাজীবী, বৃত্তিজীবী বৃহৎ সংখ্যক মানুষের ভবিষ্যৎ এতে বিপন্ন হচ্ছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য-সহ সমস্ত আপৎকালীন পরিষেবা বিপন্ন। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার জানাচ্ছে আগামী কালের প্রস্তাবিত বন্‌ধকে মেনে নেওয়া হবে না। সকলের কাছে অনুরোধ এই বন্‌‌ধে অংশ নেবেন না।’’

Previous articleNabanna Rally for R G Kar Protest Live: নবান্ন অভিযানে ধুন্ধুমার ! অশান্তির ভরকেন্দ্র এ বার হেস্টিংস, বিক্ষোভকারীদের কাঁদানে গ্যাস ছুড়ল পুলিশ,তুমুল অশান্তি: দেখুন ভিডিও
Next articleRation Scam জামিনে মুক্ত  শংকর আঢ্য- বিশ্বজিৎদাস ও  বাকিবুর রহমান, বনগাঁয় উল্লাস শংকর অনুগামীদের

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here