পূর্বাভাস ছিল, রবিবার থেকে বৃষ্টি নামবে জেলায় জেলায়। ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিমি বেগে বইবে কালবৈশাখীর ঝোড়ো হাওয়া। রবির সকাল থেকেই বদলাচ্ছে আবহাওয়ার মেজাজ।
এদিন সকাল থেকেই রাজ্যের সব প্রান্তে সব জেলার আকাশের মুখ ভার। হাওয়া অফিস বলেছে এদিন গোটা রাজ্যেই থাকছে কালবৈশাখীর পূর্বাভাস। সব জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড় ও বৃষ্টির সম্ভাবনা। কালবৈশাখী হতে পারে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলাতে। ৪০-৫০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝড়ো হাওয়ার দেখা মিলতে পারে। কিছু কিছু জায়গায় কালবৈশাখীর বেগ আরও বেশি হতে পারে।
আকাশ কালো করে ইতিমধ্যে হুগলি, বর্ধমান, উত্তর ২৪ পরগনা-সহ একাধিক জেলায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আগামী কয়েকঘণ্টার মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাতেও। শনিবার থেকে বৃষ্টি হচ্ছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও। সবমিলিয়ে কালবৈশাখীর আগমনে এক ধাক্কায় তাপমাত্রা নামল অনেকখানি। ফলে গরমের সেই অস্বস্তিকর পরিবেশ থেকে মুক্তি পেয়ে হাফ ছেড়ে বাঁচছেন জনতা।
গত কয়েকদিন ধরে তীব্র দাবদাহে হাঁসফাঁস করা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল রাজ্যের৷ বেশিরভাগ জেলায় তাপপ্রবাহে কাবু হয়ে পড়েছিলেন সাধারণ মানুষ৷ ৪০ ছুঁইছুঁই তাপমাত্রার সঙ্গে তাপপ্রবাহে নাজেহাল অবস্থা তৈরি হয়েছিল।
রবিবার দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। কোথাও কোথাও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিও হতে পারে। রবিবার বেশি ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে দুই বর্ধমান ও দুই মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে। দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টির পূর্বাভাস মিলেছে। ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়াও বইতে পারে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, রবিবার কলকাতাতেও বৃষ্টি হতে পারে। এক ধাক্কায় পারদ অনেকখানি নেমে যাওয়ায় সাময়িক স্বস্তি রাজ্যজুড়ে। রবিবার সকালে কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৮.৫ ডিগ্রি। শনিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৪ ডিগ্রি। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৫০ থেকে ৮৫ শতাংশ।
হাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৯ এপ্রিল বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে। যা ১০ এপ্রিল থাকবে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে। ফলে সেখান থেকে প্রচুর পরিমাণ জলীয় বাষ্প গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করবে।
এত দিন বাতাসে জলীয় বাষ্পের অভাবে এবং শুষ্ক এবং গরম বায়ুর প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ তৈরি হচ্ছে না বলে জানিয়েছিল হাওয়া অফিস। কিন্তু ঘূর্ণাবর্তের জেরে সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহবিদরা।
আগামী চারদিন দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গেও রয়েছে বৃষ্টির পূর্বাভাস। উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই রবিবার বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি এবং ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এবং উত্তর দিনাজপুর জেলায় বৃষ্টি ঝড়ের সম্ভাবনা বেশি। দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের পার্বত্য এলাকায় শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সঙ্গে ঝড়ের গতিবেগ ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার হতে পারে।
এদিন ভোর থেকেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হয়েছে জেলায় জেলায়। ত্রাতা বঙ্গোপসাগরের বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত। এদিন সকালে হাওড়া, নদিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব বর্ধমান, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি জেলাতে বৃষ্টি হয়েছে। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। রবিবারের পাশাপাশি সোমবারও রাজ্য জুড়ে রয়েছে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস। রবিবার দক্ষিণবঙ্গের ৭ জেলায় জারি কমলা সতর্কতা।
হাওয়া অফিস বলছে বর্তমানে বাংলাদেশ এবং অসমে রয়েছে ঘূর্ণাবর্ত। পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ঢুকতে পারে ১০ এপ্রিল বুধবার। আপাতত শুষ্ক পশ্চিমের হাওয়ার দাপট কমছে বাংলায়।