দেশের সময় , কলকাতা: মঙ্গলবার সল্টলেকের অরণ্য ভবনে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের অফিসে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চেম্বারে তল্লাশি চালিয়ে মন্ত্রীর নামে থাকা ১০ কোটি টাকার ফিক্স ডিপোজিট ও জীবন বিমার নথি পাওয়া গিয়েছে।
শুধু তাই নয় বনমন্ত্রীর অফিস থেকে মিলেছে বিপুল সম্পত্তির একাধিক নথি। যার মধ্যে বেশ কিছু নথি রয়েছে মন্ত্রীর নামে। বাকিগুলি বেনামী সম্পত্তি বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। এছাড়াও ৬০০ বেশি ব্ল্যাঙ্ক স্ট্যাম্প পেপার মিলেছে মন্ত্রীর চেম্বার থেকে। বুধবার এ ব্যাপারে আদালতে ইডি বেশ কিছু নতুন তথ্য পেশ করতে পারে বলে সূত্রের খবর।
রেশন দুর্নীতির অভিযোগে ম্যারাথন জেরার পর গত ২৬ অক্টোবর গভীর রাতে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করেছিল ইডি। জ্যোতিপ্রিয়র বাড়ি এবং বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে রেশন দুর্নীতির একাধিক তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে আগেই আদালতে জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
সম্প্রতি রেশন দুর্নীতি মামলায় আদালতে চার্জশিটও জমা দিয়েছে ইডি। আদালতে তদন্তকারী সংস্থার দাবি, রেশনের কয়েক’শ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, গ্রেফতারের আগে শেষ এক বছর নিয়মিত সল্টলেকের অরণ্যভবনে বসতেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়।
ওই অরণ্যভবন থেকেই জ্যোতিপ্রিয় খাদ্য দফতরের দুর্নীতি চালাচ্ছিলেন বলে সূত্র মারফৎ জানতে পারেন ইডির আধিকারিকরা। তারই ভিত্তিতে মঙ্গলবার সল্টলেকে বন দফতরের অফিসে হানা দিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। তারই ভিত্তিতে এবার জ্যোতিপ্রিয়র আরও সম্পত্তির খোঁজ মিলল বলে দাবি ইডির।
ইতিমধ্যে রেশন দুর্নীতির তদন্তে নেমে বাকিবুর রহমান সহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে ইডি। চার্জশিটে কয়েকশ কোটি টাকার দুর্নীতির কথা বললেও ইডি এখন দুর্নীতির পরিমাণ জানাচ্ছে, হাজার কোটি টাকা। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, রেশনে কয়েক হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়ে থাকতে পারে। বিগত এক দশক ধরে এই দুর্নীতি চলছিল বলে তদন্তকারীদের দাবি।
প্রসঙ্গত, পুরনিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে রেশন দুর্নীতির খোঁজ পায় ইডি। এরপর গ্রেফতার হয় বাকিবুর রহমান। তাঁকে জেরা করতেই উঠে আসনে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়র নাম। কয়েকদিন আগে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে যে চার্জশিট ইডি জমা দিয়েছে, সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, এই খাদ্য দুর্নীতি অর্থাৎ একদিকে বণ্টন, অন্যদিকে ধান কেনা নিয়ে দুর্নীতি চলছিল ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত। অর্থাৎ ২০২১ সালে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দফতর বদলের পরও এই দুর্নীতি রমরমিয়ে চলছিল।