দেশের সময় : কামারহাটি রথ তলায় তৈরি ৩০ ফুটের ১৬ চাকা বিশিষ্ট জগন্নাথ দেবের রথ, ২৮ ফুটের ১৪ চাকার বিশিষ্ট বলরাম দেবের রথ এবং ২৭ ফুটের ১২ চাকা বিশিষ্ট সুভদ্রা দেবীর রথ।
মঙ্গলবার ২০ জুন রথযাত্রা। বেলঘরিয়া রথতলা ফ্রেন্ডস অফ সোসাইটির সেই রথযাত্রার সভাপতি কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র(Madan Mitra)।
পুজোও হবে পুরীর মন্দিরের সমস্ত নিয়ম মেনে। মন্দির তৈরির কাঠ আনা হয়েছে ওড়িশার কটক, রাউরকেল্লার গন্ধমাদন জঙ্গল, অসম আর ধৌরা থেকে। জাঁকজমকে কোনও খামতি নেই।
রথ কামারহাটি থেকে বেরিয়ে বিটি রোড ধরে যাওয়ার কথা বারাকপুরের দিকে। আবার ফিরবে সেই পথেই। ৩৫ ফুট চওড়া রাস্তায় এমন তিনটি রথের পাশাপাশি অন্যতম আকর্ষণ মদন মিত্র নিজে। তা ছাড়া রাস্তা যতই চড়াও হোক, তার পুরো অংশটা তো আর ব্যবহার করা যায় না। প্রশাসনের ধারণা, রথের দিন যে পথে রথ যাবে, সেই পথে একেক জায়গায় ৪০ হাজার লোকের সমাগম হতে পারে।
সেই কারণেই বাড়তি সতর্কতা। এই রথযাত্রা নিয়ে আকর্ষণ দীর্ঘদিনের। মদনের তা নিয়ে সংযোজন, “মানুষ একটু রথের রশি টানতে চান। রথের কাছে ক’জন পৌঁছতে পারবেন জানি না। তবে রশি অনেক লম্বা করা হচ্ছে। যাতে বহু মানুষ অন্তত সেটুকু ছুঁতে পারেন।”
উল্লেখ্য, ২০০ বছরের প্রাচীন ইতিহাস সমৃদ্ধ এই রথ ৷
রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব বেলঘরিয়ার রথ তলার মতিলাল সেন ঠাকুরবাড়ির রথ দর্শনে এসেছিলেন সেই সময়।
সেই মতিলাল সেন ঠাকুরবাড়ির রথ একসময় বন্ধ হয়ে যায়।
বেলঘরিয়া নিবাসী এক মহিলা ছোট্ট একটি লোহার রথ দেন বেলঘরিয়ার স্থানীয় একটি ক্লাবে। আড়িয়াদহ রথ তলা থেকে দেড় ফুটের জগন্নাথ দেব সেই রথে চড়েই রথের দিন মাসির বাড়ি যেতেন। সেই রথ আজও চলে বেলঘরিয়ার রথতলায়। তখন থেকেই বসত রথ তলার এই অতি প্রাচীন রথের মেলা।
পুরীর মন্দিরের দালান থেকে চার ফুটের আনা জগন্নাথ আজ তিনি হেভি ওয়েট। ওজন প্রায় আড়াইশো কেজি।
এই রথ তলার জগন্নাথ দেবের রথের কাঠ এবছর এসেছে গন্ধমাধভ পাহাড় থেকে। ৩৩ ফুট উচ্চতার এই তিন রথ চেপে এবছর রথ তলা থেকে মাসির বাড়ি ফিরবেন হেভিওয়েটের জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রা।
এবছর দু টনের উপর ফুলের সাজে সাজবেন জগন্নাথ।
রথের আগের দিন বেলঘড়িয়া রথতলার জগন্নাথের নবযৌবন দর্শন।
রথতলা কমিটি সূত্রে পুরীর (Puri) রথ যে কাঠ দিয়ে তৈরি হয়, সেই শাল,অসন এবং ধৌরা কাঠ দিয়েই বেলঘড়িয়ার রথতলার রথ তৈরি করা হয়। একেবারে পুরীর রথের আদলে শাল,অসন এবং ধৌরা কাঠ দিয়ে এই রথ তৈরি করতে সময় লাগে টানা তিন মাস। পুরীর রথ তৈরি করতে যে পরিমাণ কাঠ থাকে বা যে মাপের কাঠ দিয়ে তৈরি হয় তার থেকে বেশি উচ্চতার বেলঘড়িয়ার রথ তৈরি করা হয় বলে রথতলা কমিটির দাবি।
ভৌগলিক অবস্থান টুকু বাদ দিলে কামারহাটির রথ তলার রথ যাত্রার ধারে পুরীর রথের সমকক্ষ। তাই স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গুপ্তিপাড়া বা মাহেশের পাশাপাশি এবার কামারহাটি রথযাত্রাকে তুলে আনতে চান রাজ্যের প্রথম সারির রথ যাত্রার পংতিতে ৷ ভোগে থাকে নানা পদের আয়োজন পোলাও খিচুড়ি সাদা ভাত থেকে পটলের দোরমা এঁচোড়ের তরকারি পনিরের তরকারি আরো বিভিন্ন রকমারি পদ ৷