দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন ও সংবহন সংস্থার কর্মীদের ২০১৯ সাল পর্যন্ত বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মেটানোর জন্য সংস্থার তরফে পাঁচশো কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে আগেই জানানো হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টকে। কিন্তু তার পরেও মেটেনি রাজ্য বিদ্যুৎ সংস্থার কর্মীদের বকেয়া ডিএ। এই মামলার শুনানিতে রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে ফের ক্ষোভ প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট।
শুক্রবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে বকেয়া ডিএ সবটা না মেটানোর অভিযোগ উত্থাপন করেন কর্মীদের আইনজীবী সৌম্য মজুমদার। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলও।
এদিন এজি বলেন, ‘বকেয়া মেটানো নিয়ে আগের রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে আবেদন করা হয়েছে। এই মামলার শুনানি হতে চলেছে ১৪ ডিসেম্বর।’ প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই ২০২০ সাল থেকে নতুন হারে বকেয়া ডিএ মেটানো নিয়ে আদালতের দেওয়া নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হয়েছে সংস্থার পক্ষ থেকে। এ কথা শুনে বিচারপতির পাল্টা জবাব ছিল, ‘রিভিউ পিটিশন করলেই পুরনো টাকা মেটানোর নির্দেশ কার্যকর না করার সুযোগ তৈরি হয় না।’
এদিন আদালত স্পষ্ট নির্দেশ দেয়, আগের বকেয়া মেটাতেই হবে এবং তা ৬ জানুয়ারির মধ্যে। কারণ আগের রায়ের প্রেক্ষিতে করা রিভিউ পিটিশন মামলার পরবর্তী শুনানি হতে চলেছে ৬ জানুয়ারি। তার আগেই মেটাতে হবে আগের বকেয়া ডিএ।
এদিন বিচারপতি মান্থা বলেন, ‘ডিএ কর্মীদের অধিকার, দয়া নয়। এটা স্পষ্ট করে বুঝতে হবে। কর্মীরা আছে বলেই প্রতিষ্ঠান আছে, না হলে প্রতিষ্ঠান থাকত না। এভাবে চলতে পারে না। আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টও এই ডিএ মেটানো নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে।’
এজি এদিন আদালতে আরও জানান, ৫১০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে কর্মীদের। কিন্তু একথা শোনার পরেও আদালতের স্পষ্ট মন্তব্য, ‘কোনওভাবেই কর্মীদের বঞ্চিত করে যাবে না। এটা তাদের কষ্টের দাম। কতদিন এই ভাবে বঞ্চিত থাকবেন তাঁরা?’
উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে এসেছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। হাইকোর্টের রায় রাজ্য সরকারি কর্মীদের পক্ষেই গিয়েছিল। ইতিমধ্যেই এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য। আগামী সোমবার মামলার শুনানি হতে চলেছে। তার আগে কলকাতা হাইকোর্টের এই পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।