“এরা” বিউটি টিপস’
রং খেলব না তা আবার হয় না কি? রং-ও খেলব আবার সাফসুতরোও থাকব, এমনই যদি আপনার ইচ্ছা হয়, তা হলে রং খেলার সময় একটু সতর্ক থাকলেই চলবে। দোলের সময় জোর করে রং মাখানোর একটা প্রবণতা থাকে, আর এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে চোখ ও চুল।
রং খেলার সময় এবং তার পরে, চুলের যত্ন কিন্তু নিতেই হবে, নইলে মাথার ত্বকে সংক্রমণ থেকে শুরু করে চুল পড়ে যাওয়া, অকালে টাক নানা সমস্যায় জেরবার হতে হবে। আজকাল প্রায় সব রংই সিন্থেটিক। চুলের উপর এদের ক্ষতিকর প্রভাবও বেশি। সতর্ক থাকাটাই তাই একমাত্র উপায়।
দেখে নিন রং খেলার আগে ও পরে কী ভাবে যত্ন নেবেন চুলের।
তেল মেখে চুল বেঁধে রং খেলতে নামুন। এতে চুলে রং বসে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে অনেকটাই।
তেল মাখার পর টুপি বা শাওয়ার ক্যাপে ঢেকে দিন মাথা। তার পর রং খেলুন। চুল বাঁচাতে এটাও একটা অন্যতম উপায়।
রং খেলার পর
রং খেলার পর নরম কোনও শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। তেল মেখে রং খেললে প্রথম বারের শ্যাম্পুতেই রং উঠে যাওয়ার কথা। তবে তার পরেও যদি রং থেকে যায়, এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই গন ঘন শ্যাম্পু না করে বার দুই করেই ক্ষান্ত হোন। যেটুকু রং থেকে গেল তা ধীরে ধীরে দিন কয়েকের মধ্যেই উঠে যাবে।
তবে অনেকেই এক দিনে সব রং তুলে ফেলার চেষ্টা করেন, এতে চুলের ক্ষতি হয় বেশি। বরং সময় নিয়ে রং উঠুক, তাতে সমস্যা বাড়বে না। প্রতি বার শ্যাম্পুর পর কন্ডিশনিং করুন চুল, নইলে তা রুক্ষ হয়ে যাবে। ক্ষার যুক্ত শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার দেবেন না। অনেকেই রং তুলতে শ্যাম্পুর সঙ্গে সামান্য ডিটারজেন্ট ব্যবহার করেন, এটা অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই এ সবের প্রয়োজন নেই।
তা ছাড়া অনেক ক্ষণ স্নানে ঠান্ডা লাগার প্রবণতাও থাকে, সে দিকের কথাও মাথায় রাখতে হবে বইকি! তাই ভাল করে বার দুই শ্যাম্পু করে নেওয়াই যথেষ্ট। দিন কয়েক বাদে রং উঠে গেলে একটা হেয়ার স্পা করিয়ে নিতে পারলে আরও ভাল হয়।
এবার রং তোলার পালা। আর সবচেয়ে বেশি সাবধানতা মেনে চলতে হবে এই সময়টাতেই। কারণ রং খেলার পরে আমাদের ত্বক অতিরিক্ত সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। অনেক সময় রং ত্বকের গভীরে বসে গেলে সহজে উঠতে চায় না এবং বেশি ঘষাঘষিতে ত্বক শুকনো ও বিবর্ণ হয়ে যেতে পারে। কোমল ফেসওয়াশ আর বডিওয়াশ দিয়ে প্রথমে সমস্ত রং আর রাসায়নিক শরীর থেকে ধুয়ে ফেলতে হবে। একইভাবে শ্যাম্পু দিয়ে চুল আর স্ক্যাল্প ভালো করে ধোওয়ার পরে কন্ডিশনার লাগাতে হবে। স্নানের পর সারা শরীরে হাইড্রেটিং ময়শ্চারাইজ়ার মেখে নিন, চুলে লাগান ভিটামিন ই সমৃদ্ধ হেয়ার সিরাম।
এ তো গেল রং পরিষ্কার করার পর্ব। কিন্তু সারাদিনের রং মাখামাখিতে ত্বক আর চুলের যে ক্ষতি হয়েছে, সেটা পুষিয়ে দেওয়ার জন্য আপনার দরকার আরও বাড়তি কিছু। ঘরোয়া ফেস প্যাক আর হেয়ার মাস্ক দিয়ে সেই ঘাটতি আপনি পূরণ করতে পারেন। রইল তেমনই কিছু প্যাক আর মাস্কের হদিশ।
রং তোলার পর ঘরোয়া প্যাক ব্যবহার করলে একদিকে যেমন রোমছিদ্রগুলো পরিষ্কার হয়, তেমনই ত্বকে আর্দ্রতারও জোগান দেয়।
অ. আপনার তেলতেলে ত্বক হলে বেসন, হলুদ গুঁড়ো আর দই দিয়ে প্যাক বানিয়ে সারা শরীরে মাখুন। দশ মিনিট ঘষে তারপর ধুয়ে ফেলুন।
আ. স্বাভাবিক থেকে শুষ্ক ত্বকের জন্য চন্দনবাটা, হলুদ আর গোলাপজল একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে মেখে নিন। দশ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন।
ই. মুলতানি মাটিও যে কোনও ধরনের ত্বকের পক্ষে খুবই উপযোগী। মুলতানি মাটিতে গোলাপজল মিশিয়ে মেখে নিন। শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
চুলের জন্য
দোলের রঙে আপনার চুল রুক্ষ আর বিবর্ণ হয়ে যেতে পারে। চুল সুরক্ষিত রাখতে নিচের পদ্ধতিগুলো মেনে চলতে পারেন।
ক. চুলে জবজবে করে নারকেল তেল মেখে নিন। অন্তত দু’ঘণ্টা তেলটা চুলে বসতে দিতে হবে।
খ. বাড়তি সুরক্ষার জন্য ডিম, মধু আর টক দইয়ের একটা হেয়ার মাস্ক চুলে মাখতে পারেন। তেল মাখা চুলেই এই মাস্কটা লাগানো যায়। কুড়ি থেকে তিরিশ মিনিট রেখে তারপর শ্যাম্পু করে নেবেন।
গ. দোলের পর অন্তত কয়েক সপ্তাহ চুলে কোনওরকম কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট বা কালার করাবেন না। চুলকে সুস্থ হয়ে ওঠার সময় দিন।