দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ২০২২ সালের উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভারতের ১৪তম উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। শনিবার উপরাষ্ট্রপতি পক্ষের মনোনীত প্রার্থী মার্গারেট আলভাকে হারিয়ে নয়া উপরাষ্ট্রপতি হলেন তিনি।
এ বছর উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ সমর্থিত প্রার্থী ছিলেন তিনি। উপরাষ্ট্রপতি পদে তাঁর নাম ঘোষণা পর পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে বিরোধীদের প্রার্থী ছিলেন মার্গারেট আলভা। আলভাকে ৩৪৬ ভোটে হারিয়েছেন ধনখড়। ৭২৫ জন সাংসদ ভোট দিয়েছিলেন শনিবার। তার মধ্যে ১৫টি ভোট বাতিল হয়েছে। বৈধ ভোটের মধ্যে ধনখড় পেয়েছেন ৫২৮টি ভোট। বিরোধী প্রার্থী মার্গারেট আলভা পেয়েছেন ১৮২টি ভোট।
৬ অগস্ট শনিবার হয়েছে দেশের উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন। সকাল ১০টা থেকে বিকাল পাঁচটা অবধি চলেছে ভোটগ্রহণ। সাংসদের দুই কক্ষের সাংসদরা ভোট দিয়েছেন। দুই কক্ষ মিলিয়ে দেশে সাংসদ সংখ্যা ৭৮৮ জন। এর মধ্যে রাজ্যসভায় ৮ জন সাংসদের পদ খালি রয়েছে। ৭৮০ জন সাংসদের মধ্যে ৭২৫ জন সাংসদ ভোট দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এর মধ্যে তৃণমূলের সাংসদরা ভোট দান থেকে নিজেকে বিরত রেখেছিলেন। যদিও তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারী দলের নির্দেশ অমান্য করেই সংসদে গিয়ে ভোট দিয়েছেন। অসুস্থতার কারণে বিজেপি সাংসদ সানি দেওল এবং সঞ্জয় ধোত্রে ভোট দিতে আসেননি বলে জানা গিয়েছে।
এনডিএ-র জোট সঙ্গী ছাড়াও একাধিক আঞ্চলিক দলের ভোট গিয়েছে জগদীপ ধনখড়ের ঝুলিতে। নবীন পট্টনায়েকের বিজু জনতা দল, জগনমোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেস, মায়াবতীর বহুজন সমাজবাদী পার্টি, চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টি, পঞ্জাবের অকালি দল এবং শিবসেনার একনাথ শিণ্ডে শিবিরের সাংসদরা ভোট দিয়েছেন জগদীপ ধনখড়কে।
অন্য দিকে মার্গারেট আলভাকে সরাসরি সমর্থন করে কংগ্রেস, এমকে স্টালিনের ডিএমকে, লালুপ্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দল, শরদ পওয়ারের এনসিপি, অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি এবং বাম দলগুলি। আম আদমি পার্টির সাংসদরা মার্গারেট আলভাকে ভোট দেবেন বলে জানিয়েছিলেন।
বর্তমানে দেশের উপরাষ্ট্রপতির পদে রয়েছেন বেঙ্কাইয়া নাইডু। রাজস্থানের কিথানার বাসিন্দা ধনখড় এবার বেঙ্কাইয়া নাইডুর উত্তরসূরী হলেন। ১০ অগস্ট তাঁর মেয়াদ শেষ হবে। ১১ অগস্ট দেশের ১৪ তম উপরাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নেবেন জগদীপ ধনখড়।
১৯৫১-র ১৮ মে রাজস্থানের কিথানায় জন্ম জগদীপ ধনখড়ের। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত গ্রামের স্কুলেই পড়াশুনা করেন তিনি। ষষ্ঠ শ্রেণিতে সরকারি স্কুলে ভর্তি হন ধনখড়। সেসময় গ্রামের অন্যান্য ছেলেদের সঙ্গে চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার হেঁটে স্কুলে যেতে হত তাঁকে। পরবর্তীকালে ভর্তি হন চিতোরগড়ের সৈনিক স্কুলে। ১৯৬২-তে এখান থেকেই স্কুল জীবন শেষ করেন তিনি।
এরপর জয়পুরের মহারাজা কলেজ থেকে পদার্থ বিদ্যায় স্নাতকের ডিগ্রি লাভ করেন ধনখড়। ১৯৭৯-তে রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পান আইনের ডিগ্রিও। এরপর রাজস্থান হাইকোর্টে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। নয়ের দশকে সুপ্রিম কোর্টে চলে আসেন তিনি। এখানেও আইনজীবী হিসেবে সুনাম অর্জন করেন জগদীপ ধনখড়।