দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর সাতদিনের মধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজারের বেশি সাধারণ মানুষ।
বুধবার ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা এই তথ্যটি জানায়। একটি বিবৃতি প্রকাশ করে ইউক্রেন কর্তৃপক্ষের তরফে ঘোষণা করা হয়, রাশিয়ার হামলায় এখনও পর্যন্ত ইউক্রেনীয় সেনা ছাড়াই দুই হাজারের বেশি সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
রুশ সেনাদের আক্রমণে ১০ জন উদ্ধারকর্মীও নিহত বলে জানানো হয়েছে। বিবৃতি দিয়ে কর্তপক্ষের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়ার হামলায় শতাধিক বাড়ি, পরিবহন কেন্দ্র ধ্বংস হয়েছে। এমনকী হাসপাতালেও হামলা চালিয়েছে তারা। অন্যদিকে ইউক্রেনের দাবি, সংঘর্ষ শুরুর পর থেকে তাদের যোদ্ধাদের আক্রমণে হাজার হাজার রুশ সেনা নিহত হয়েছে।
শিশুদের নার্সারি স্কুল থেকে হাসপাতাল, বসত বাড়ি থেকে অফিস বিল্ডিং। রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না ইউক্রেনের কোনও অট্টালিকাই। ইউক্রেন সরকারের কাছ থেকে শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া রুশ আগ্রাসনের বলি হয়েছেন অন্তত দু’হাজার সাধারণ মানুষ। এর মধ্যেই অন্তত ন’লক্ষ মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে অন্যত্র পাড়ি দিয়েছেন। যাকে সাম্প্রতিক কালে ইউরোপে সবচেয়ে দ্রুতগতির গণনিষ্ক্রমণ হিসেবে অভিহিত করছেন কেউ কেউ।
বুধবার খারকিভে আটকে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের জন্য জরুরি নির্দেশ জারি করা হয়েছে। খারকিভে চলছে একের পর এক বিস্ফোরণ। তাই সেখানে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের সুরক্ষার্থে এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে ইউক্রেনে ভারতের দূতাবাসের তরফে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, নিজেদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার কারণে তাঁদের অবিলম্বে খারকিভ ছাড়তে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পেসোচিন, বাবায়ে এবং বেজ়লিউদোবকার উদ্দেশে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। বুধবার রাতের মধ্যেই ভারতীয়দের খারকিভ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইউক্রেন সরকার বিভিন্ন সূত্রে মারফত দাবি করছে, এখনও অক্ষত দেশের দুই প্রধান শহর, রাজধানী কিভ ও দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী খারকিভ। পাল্টা মস্কো থেকে দাবি করা হয়েছে, খেরসন দখল করে ফেলেছে রুশ সেনা। যদিও এই খবর স্বীকার করেনি ইউক্রেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্ক্সির পরামর্শদাতার দাবি, আড়াই লক্ষ জনসংখ্যার খেরসনে এখনও প্রতিরোধ জারি রয়েছে। তা মোটেই রুশ বাহিনীর কব্জায় চলে যায়নি।
বুধবার সকাল থেকেই খারকিভে বিমান হামলা চালাতে থাকে পুতিনের বাহিনী। রুশ প্যারা ট্রুপার নামতে থাকে। রাস্তায় রাস্তায় শুরু হয়ে যায় মুখোমুখি লড়াই। একই সঙ্গে চলতে থাকে বিমান থেকে লক্ষ্য নির্দিষ্ট করে হামলাও। গোটা দেশেই রুশ হামলার ক্রমশ বিস্তার ঘটছে। কিভে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে মুহুমুর্হু বিস্ফোরণের বিকট আওয়াজ। কিভের টেলিভিশন টাওয়ারও উড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া।
হামলা অব্যাহত। ক্রেমলিন সূত্রে খবর, এরই মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ের শান্তি আলোচনার জন্য বেলারুশে প্রতিনিধিদের পাঠিয়ে দিয়েছে রাশিয়া। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, রাশিয়া যদি সত্যিই আলোচনা চায়, তাহলে আগে বোমা বর্ষণ থামাতে হবে।