দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ প্রয়াত নারায়ণ দেবনাথ।
মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। বেলভিউ নার্সিংহোমে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ প্রখ্যাত কার্টুনিস্টের। কয়েক প্রজন্মের বাঙালি শৈশবের সঙ্গী তাঁর সৃষ্টি করা একের পর এক চরিত্রকে রেখে চলে গেলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বাংলার সাহিত্য ও শিল্পজগত।
বাংলা চিত্রকাহিনি বা কমিকসের প্রাণপুরুষ নারায়ণ দেবনাথের জীবনাবসান। কয়েক প্রজন্মের বাঙালি কিশোরবেলার সঙ্গী তাঁর সৃষ্টি করা একের পর এক চরিত্রকে রেখে চলে গেলেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর।
গত ২৪ ডিসেম্বর দক্ষিণ কলকাতায় বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। ফুসফুস এবং কিডনির সমস্যা বাড়ছিল তাঁর, রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমছিল। অবস্থার বিপজ্জনক অবনতি হওয়ায় ১৬ জানুয়ারি তাঁকে বাইপ্যাপে এবং পরে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছিলেন না তিনি। আজ, মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১৫ নাগাদ প্রয়াত হন তিনি।
নারায়ণ দেবনাথের জন্ম ১৯২৫ সালের ২৫ নভেম্বর, হাওড়ার শিবপুরে। ১৯৬২ সালে তিনি সৃষ্টি করেন কমিক চরিত্র ‘হাঁদাভোঁদা’। ১৯৬৫ সালে তাঁর অমর সৃষ্টি ‘বাঁটুল দ্য গ্রেট’ প্রথম প্রকাশিত হয়। এর পরে ১৯৬৯ সালে প্রকাশিত হয় ‘নন্টেফন্টে’। ১৯৮২ সালে আসে ‘বাহাদুর বেড়াল’। সব মিলিয়ে বাংলা কমিক্সের প্রাণপুরুষ হয়ে ওঠেন তিনি।
বয়সজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন কয়েক বছর ধরেই। এর আগেও একাধিক বার হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছিল শিল্পীকে। চিকিৎসার ভার নিয়েছিল রাজ্য সরকার। তৈরি হয়েছিল চিকিৎসকদের একটি আলাদা দল। কিন্তু এ বার আর তাঁকে বাড়ি পাঠাতে পারলেন না চিকিৎসকরা।
১৯২৫ সালে হাওড়ার শিবপুরে জন্ম নারায়ণ দেবনাথের। অল্প বয়স থেকেই শিল্পের প্রতি তাঁর ঝোঁক ছিল দেখার মতো। বাড়িতে অলঙ্কার তৈরির চল ছিল। ফলে শুরু থেকেই গয়নার নকশা তৈরি করতেন নারায়ণ দেবনাথ। স্কুলের পাঠ চুকিয়ে তিনি আর্ট কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ডামাডোলে বন্ধ হয়ে যায় আর্ট কলেজে পড়া। তার পর কয়েকটি বিজ্ঞাপন সংস্থার হয়ে কাজ করেন।
নারায়ণ দেবনাথের অমর সৃষ্টি ‘বাটুল দি গ্রেট’, ‘হাঁদা ভোঁদা’, ‘নন্টে ফন্টে’, ‘বাহাদুর বেড়াল’ প্রভৃতি। ২০১৩-য় তাঁকে সাহিত্য আকাদেমি পুরষ্কার এবং বঙ্গবিভূষণ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। ২০২১ সালে পান পদ্মশ্রী।