হাইকোর্টে বহাল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, কালীপুজোর রাতে দু’ঘণ্টা বাজি পোড়ানোর অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট

0
307

দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ অবশেষে কাটল জট। এবার দীপাবলি-সহ বছরের অন্য উৎসবগুলিতে কি বাজির ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে বাংলায় , এই প্রশ্নের উত্তর পেতে মুখিয়ে ছিলেন বাজিপ্রেমীরা। এতদিন আইনের আবর্তে ঘুরেই চলছিল এই ফয়সালা ৷ এই নিয়ে মঙ্গলবার ফের কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মামলাকারী ৷ সেই মামলাতেই বুধবার বাজিপ্রেমীদের স্বস্তি দিল কলকাতা হাইকোর্ট।

কালীপুজোর রাতে বাজি পোড়ানোর অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে আদালত জানিয়েছে, জনবহুল জায়গায়, রাস্তাঘাটে বাজি পোড়ানো যাবে না।  হাইকোর্টের অনুমতির পরে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, কালীপুজোর রাতে ২ ঘণ্টা রাত ৮টা থেকে ১০টা এবং ছটপুজোর সকালে ৬টা থেকে ৮টা অবধি বাজি পোড়ানো যাবে।

সমস্ত রকম বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এরপরে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, সব ধরনের বাজি পোড়ানো বা বিক্রি বন্ধ করা যাবে না। শীর্ষ আদালতের রায়ের পরে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা দায়ের হয়। বুধবার বেলা ২টো নাগাদ সেই মামলার শুনানিতে হাইকোর্ট জানায়, বাজি পোড়ানো যাবে তবে জনবহুল জায়গায় বা রাস্তাঘাটে ভিড়ের মধ্যে নয়। এর জন্য কোনও ফাঁকা এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে বাজি পোড়ানো যাবে। কোনও আবাসনের ছাদেও বাজি পোড়ানো যাবে না বলেই জানিয়েছে আদালত।

বাজি মামলায় সওয়াল জবাব চলার সময় রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেছেন, বৃহত্তর মানুষের স্বার্থের কথা ভেবে পুলিশ প্রশাসন তৎপর হয়েছে। জনবহুল জায়গায় যাতে বাজি পোড়ানো না হয় তার জন্য ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। ইতিমধ্যেই অনেক জায়গায় তল্লাশি জানিয়ে নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে অনেকে। আইনজীবীর বক্তব্য সরকার মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন। তবে কেউ যদি গোপনে নিষিদ্ধ বাজি পোড়ায় তা চিহ্নিত করা সম্ভব নয়।

সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে শুধুমাত্র পরিবেশবান্ধব সবুজ বাজি বা গ্রিন ক্র্যাকারই পোড়ানো বা বিক্রি করা যাবে। বেরিয়াম লবণের আধিক্য আছে এমন বাজি পোড়ানো বা বিক্রি করা যাবে না। আইনজীবী সৌমেন্দ্রনাথবাবু আদালতে বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের কপি পুলিশ কমিশনার, রাজ্য পুলিশের ডিজি ও স্থানীয় থানাগুলোকে পাঠানো হয়েছে। বেআইনি বাজি পোড়াতে বা বিক্রি করতে দেখলেই কড়া পদক্ষেপ নেবে পুলিশ।

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আইনজীবী নয়নচাঁদ বিহানির বক্তব্য, হাইকোর্টে মামলা রুজু হওয়ার আগেই রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্ট ও জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে বাজি পোড়ানোর একটা সময় ঠিক করা হয়েছিল। বাতাসের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স দেখে ঠিক কোন সময়ে বাজি পোড়ালে দূষণের মাত্রা বাড়বে না এবং মানুষের ক্ষতি কম হবে, তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করেই নির্দিষ্ট সময় ঠিক করা হয়েছিল। বাতাসে ভাসমান কণার পরিমাণ দেখে কালীপুজোর রাতে দু’ঘণ্টা ৮টা থেকে ১০টা অবধি বাজি পোড়ানোর সময় ঠিক করা হয়েছে। আর ছট পুজোর সকালে ৬টা থেকে ৮টা অবধি বাজি পোড়ানোর সময় রাখা হয়েছে।

এদিনের শুনানি চলার সময় বাজি শিল্প উন্নয়ন সমিতির তরফে আইনজীবী সৃজিব চক্রবর্তী পরিবেশ কর্মী রোশনি আলির আইনজীবী কুশল লাখমানিয়াকে তীব্র ভর্ৎসনা করে বলেন, বৃহত্তর মানুষের স্বার্থে কি মামলা করেছেন আপনারা, নাকি শুধুমাত্র সেলিব্রিটি হওয়ার জন্য? সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগও তোলেন তিনি। আইনজীবী সৃজিবের বক্তব্য, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে যে ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন রোশনি আলি তাতে মনে হয়েছে তিনি জনস্বার্থের জন্য মামলা করেননি, নিজের পরিচয় বাড়ানোর জন্য় করেছেন। আগামী ৬ সপ্তাহ পরে এই মামলার শুনানি হবে বিচারপতি রাজশেখর মান্থার বেঞ্চে।

Previous articleবিধাননগর বাদে ডিসেম্বরেই কলকাতা, হাওড়ায় পুরভোট!
Next articleCalcutta High Court Bans Entry in Kali Puja Pandals: মাস্ক পরলে বা কোভিডের দু’টি টিকা নেওয়া থাকলেও কালীপুজোর মণ্ডপে নো এন্ট্রি, নির্দেশ হাই কোর্টের

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here