দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃউপনির্বাচনে চার কেন্দ্রেই বিপুল ব্যবধানে জয়ের পথে তৃণমূল প্রার্থীরা।এই পরিস্থিতিতে জয় ঘোষণার আগেই টুইটে এল মমতার শুভেচ্ছা।
অভিনন্দন জানালেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটে মমতা লিখেছেন, “এই জয় মানুষের জয়। এবং এটা দেখিয়ে দিল বাংলা ঘৃণার রাজনীতির বিরুদ্ধে উন্নয়ন ও ঐক্যকেই পছন্দ করে। আমরা কথা দিচ্ছি, মানুষের আশীর্বাদে আমরা বাংলাকে সর্বোচ্চ উচ্চতায় নিয়ে যাব।”
দিনহাটা মানে নিশীথ প্রামাণিকের পাড়া।
চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনের মোট ফলাফল হয়তো অবাক করা নয়। কিন্তু যে মার্জিন নিয়ে তৃণমূল প্রার্থীরা জিতলেন বা জিতছেন তাতে বলাই যায় বিজেপিকে কার্যত শূন্যস্থানে পৌঁছে দিয়েছে শাসকদল।
একুশের ভোটে দিনহাটা ও শান্তিপুর জিতেছিল বিজেপি। ওই দুই কেন্দ্রেই এবার গেরুয়া শিবিরের ভরাডুবি হয়েছে। অমিত শাহের ডেপুটি নিশীথ প্রামাণিক জিতেছিলেন ৫৭ ভোটে। যা হয়তো গ্রামসভার মার্জিনের থেকেও কম। তবু খাতায় কলমে ছিল পদ্মের আসন। কিন্তু সেই আসনে এবার ফুটল জোড়াফুল। তৃণমূলের উদয়ন গুহ জিতলেন এক লক্ষ ৬৩ হাজারের বেশি ভোটে। গোসাবায় সুব্রত মণ্ডলের ব্যবধান এক লক্ষ ৫১ হাজার। যা কার্যত বাংলার বিধানসভার ইতিহাসে রেকর্ড।
এর মধ্যে গোসাবা ও দিনহাটার ফলাফল ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। বাকি দুই কেন্দ্রে আরও কয়েক রাউন্ড গণনা বাকি। তার মধ্যেই টুইট করে চার জয়ী প্রার্থীকে
My heartiest congratulations to all the four winning candidates!
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) November 2, 2021
This victory is people's victory, as it shows how Bengal will always choose development and unity over propaganda and hate politics. With people's blessings, we promise to continue taking Bengal to greater heights!
কিন্তু সেখানে বিজেপি যে ভাবে হেরেছে তা বেশ লজ্জাজনক বলেই মত অনেকের। নিশীথ যে বুথের ভোটার সেখানে বিজেপি প্রার্থী সাকুল্যে ভোট পেয়েছেন ৯৫টি। শান্তিপুরে জগন্নাথ সরকার জেতার পরে অনেকে মনে করছিলেন, মতুয়া ভোটের মেরুকরণ হয়েছে বিজেপির বাক্সে। কিন্তু ছ’মাসের মধ্যেই সেসব ঘুচে গেল। হইহই করে জিতছেন তৃণমূল প্রার্থী। খড়দহে বেলা সওয়া ১১টা পর্যন্ত মোট ১২ রাউন্ড গণনা হয়েছে। তাতে কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ৬৫ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। তবে দুই আর তিন নম্বর স্থান নিয়ে সিপিএম ও বিজেপি প্রার্থীর মধ্যে লড়াই চলছে।
উপনির্বাচনে চার কেন্দ্রে বিপুল ব্যবধানে জয়ের পর টুইটে বিজেপি-কে পাল্টা কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখলেন, ‘প্রকৃত অর্থে শব্দবাজিবিহীন দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাচ্ছে বিজেপি-র কর্মী সমর্থকদের।’ অভিষেকের এই বার্তার কিছু আগে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। জয়ী চার কেন্দ্রের প্রার্থীকে অভিনন্দন জানিয়ে মমতা টুইট করেন, ‘আমি চার জয়ী প্রার্থীকেই অভিনন্দন জানাচ্ছি। এটা মানুষের জয়। কারণ বাংলার মানুষ ঘৃণা এবং মিথ্যার রাজনীতির বিরুদ্ধে উন্নয়ন ও একতাকে বেছে নিয়েছেন। আমরা বাংলাকে ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
A cracker free Diwali in true sense. Wishing folks at @BJP4India a very Happy Diwali!💥
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) November 2, 2021
খড়দহের বিজয়ী প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, কোনও রকম বিজয়মিছিল করতে চায় না দল। তিনি এই নিয়ে হাইকমান্ডের নির্দেশও পেয়েছেন।
শুধু তৃণমূলই নয়। উদ্বেগে রয়েছে নবান্নও। কারণ কিছু কিছু জায়গায় বিজয়মিছিল বেরোতে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। সব জেলার জেলাশাসককে কমিশনের কড়া নির্দেশ, কমিশনের যাতে কোনও রকম বিজয়মিছিল না বেরোয়। আগেই সিইও বিভিন্ন জেলার জেলাশাসকদের ফোন করে সতর্ক করেছেন।
কমিশনের নির্দেশ কোনও বিজয় মিছিল করা যাবে না।কমিশন জানাচ্ছে, দুজনের বেশি যেতে পারবে না জয়ের সার্টিফিকেট নিতে।
উল্লেখ্যে এই উপনির্বাচনে চার আসনেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল। খড়দহ কেন্দ্রে জয়ী প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় পেয়েছেন এক লক্ষ ১৩ হাজার ৬৪৭ ভোট। ৯৩ হাজার ৮৩২ ভোটে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন বিজেপি প্রার্থী জয় সাহা। তৃতীয় সিপিআইএম প্রার্থী দেবজ্যোতি দাস। অন্য দিকে দিনহাটায় রেকর্ড মার্জিনে জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন ঘোষ। তৃণমূলের সহজ জয় এসেছে গোসাবাতেও। এখনও গণনা চলছে শান্তিপুর কেন্দ্রে। তবে সেখানেও তৃণমূল প্রার্থী ব্রজকিশোর গোস্বামী জয় নিশ্চিত করে অন্তত ৫০ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন।
ঠিক এই সময়েই দলীয় কর্মীদের কোনও রকম বিজয়মিছিলে যোগ দিতে নিষেধ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।