পার্থ সারথি নন্দী, পেট্রাপোল: কোভিড বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক ৷ অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে সেদেশে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াল ভারত৷ দেখুন ভিডিও:
করোনা মোকাবিলায় এবং করোনা আক্রান্তদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য গত জুলাই মাসে ভারত থেকে আগেই অক্সিজেন এক্সপ্রেসে ২০০ মেট্রিক টন অক্সিজেন পাঠানো হয় প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে এবং দেশের সব রাজ্যে অক্সিজেনের সরবরাহ অটুট রাখতে এই এক্সপ্রেস চালু হয়েছে অনেক আগেই, যার সুফল পেয়েছে গোটা ভারত।
এবার, করোনা পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব আরো সুদৃঢ় করতে উদ্যোগী হলো ভারত। বাংলাদেশকে উপহার স্বরূপ ১o৯টি অ্যাম্বুলেন্স দিল ভারত সরকার। শনিবার সকালে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে প্রাথমিকভাবে ৩০টি অ্যাম্বুল্যান্স পৌঁছাল বাংলাদেশ।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ করো না পরিস্থিতি ভয়াবহ। অক্সিজেনের ঘাটতি মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের কাছে অক্সিজেন চেয়ে আবেদন জানানো হয়। প্রতিবেশী দেশের আবেদনে সাড়া দিয়ে ভারত সরকার অক্সিজেন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। গত জুলাই মাসে ১০ টি কন্টেনারে ২০০ মেট্রিক টন তরল অক্সিজেন নিয়ে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এই অক্সিজেন এক্সপ্রেস। বেনাপোল সীমান্তে ওই ট্রেন পৌঁছতেই ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা উজাড় করে দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রশাসনিক কর্তা থেকে আমজনতা। বাংলাদেশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
সাম্প্রতিক দুই দেশের সম্পর্ক মজবুত করতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী,পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর জন্য বাংলাদেশের বিখ্যাত হাড়িভাঙ্গা আম পাঠিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।এবার করোনাকালে বন্ধুত্বের টানে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠিয়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ালো ভারত ।
এই ঘটনায় উৎসাহিত ব্যবসায়ীসহ পেট্রাপোলের স্থানীয় বাসিন্দারা৷ ব্যাবসায়ী আশিষ দে বলেন, দু’দেশের বন্ধুত্ব অটুট থাকুক এভাবেই, কোভিড আবহে আমাদের সরকার বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোয় আমরা গর্ববোধ করছি।
পাশাপাশি সহযোগিতার হাত বাড়িয়েদিল বনগাঁ পুরসভা, বাংলাদেশ গামী অ্যাম্বুল্যান্স গুলি থেকে কোন পার্কিং চার্জ না নিয়ে পেট্রাপোল সীমান্তে দ্রুত পৌঁছেদেওয়ার ব্যাবস্থা করা হয় পুরসভার তরফে । এবিষয়ে বনগাঁ পুরসভার প্রশাসক গোপাল শেঠ বলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় আমরা অনুপ্রাণিত, মৈত্রী বন্ধনে আমরা বিশ্বাসী দেশের প্রধানমন্ত্রীর এই কাজে যাতে কোন রকম সমস্যা না হয় তার দিকে নজর রাখাটাই আমাদের কর্তব্যছিল।এর মধ্যদিয়ে দু’দেশের মৈত্রী বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশা করি৷ আমাদের নেত্রী সব সময় মানুষের পাশে থাকতে শিখিয়েছেন।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, করোনা মোকাবিলায় এবং করোনা আক্রান্তদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য গত জুলাই মাসে ভারত থেকে আগেই পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অক্সিজেন এক্সপ্রেসে ২০০ মেট্রিক টন অক্সিজেন পাঠিয়ে ছিল ভারত সরকার৷ এবার ১০৯টি অ্যাম্বুল্যান্স যাচ্ছে সে দেশে এটা খুবই ভাল উদ্যোগ। তবে বনগাঁ পুরসভার মতো যদি সিডব্লুসি পার্কিং চার্জ কর মুক্ত করা হত তাহলে আরও বেশি ভাল লাগত, বাংলাদেশের সঙ্গে অটুট বন্ধ রাখতে প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনের ভূমিকা এইক্ষেত্রে যথেষ্ঠ প্রশংসনীয়।