দেশের সময় ওয়েব ডেস্ক: শনিবার ৮ ঘণ্টা এবং রবিবার সাড়ে ১১ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পরেও শেষ হল না জেরা-পর্ব। সোমবারও সিবিআই জেরার মুখোমুখি হবেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার এবং কুণাল ঘোষ।পরপর দু’দিন এত লম্বা সময়ের জেরার পরে ফের তৃতীয় দিন জেরা করার সিদ্ধান্তে মনে করা হচ্ছে, দীর্ঘ প্রশ্নমালা হাতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে বসেছেন সিবিআই কর্তারা। তা ছাড়া বার বার একই প্রশ্ন করেও জবাবে অসঙ্গতি ধরার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।রবিবার ছিল জেরার দ্বিতীয় দিন। এ দিন সকাল সওয়া ১০টা নাগাদ শিলংয়ে সিবিআই দফতরে পৌঁছন রাজীব কুমার। তাঁর যাওয়ার কিছুক্ষণ আগেই সকাল ১০টা নাগাদ সিবিআই দফতরে আসেন চিটফান্ড কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত তথা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ। তারপর থেকেই শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। সিবিআই সূত্রে খবর, দিনের বেলা দু’জনকে পৃথক ঘরে বসিয়ে জেরা করেন সিবিআই কর্তারা। পরে সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। রাত পৌনে দশটা বাজার পরে ছাড়া হয় তাঁদের।স্থানীয় সূত্রের খবর, শিলংয়ে এ দিন ফের জাঁকিয়ে পড়েছে ঠান্ডা। আট-ন’ডিগ্রি সেলসিয়াস ঠান্ডায় বেশ জবুথবু শৈল শহর। কিন্তু এই জেরাকে কেন্দ্র করে সিবিআই দফতরের আশপাশে যা পরিস্থিতি, তাতে উত্তেজনার পারদ চড়ছে হু হু করে। যত সময় পেরোচ্ছে, তত যেন বাড়ছে টেনশনের আঁচ।শনিবার সিবিআই দফতরে পৌঁছেই কলকাতার পুলিশ কমিশনার কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সির কর্তাদের বলেছিলেন, যা জিজ্ঞাসা করার তা যেন রবিবারের মধ্যে শেষ করে ফেলা হয়। কারণ, সোমবার থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার হিসাবে তাঁর শহরে উপস্থিত থাকাটা জরুরি। সিবিআই রাজীব কুমারের সেই আর্জি যে শুনতে চাইল না, তা সোমবারও জেরা অব্যহত রাখার সিদ্ধান্তেই স্পষ্ট।বরং রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা আর কেবল সারদা চিটফান্ড প্রসঙ্গেই থামিয়ে রাখছে না সিবিআই। রোজভ্যালি চিটফান্ডের ব্যাপারও টেনে আনছে। তা এ দিন একটি ঘটনায় পরিষ্কার হয়ে যায়। রবিবার সন্ধ্যেয় শিলংয়ের সিবিআই দফতরে গিয়ে পৌঁছেছেন রোজ় ভ্যালি কাণ্ডের তদন্তকারী অফিসার চোজম শেরপাও। বেশ কিছু ফাইল সঙ্গে নিয়ে আসেন চোজম। সিবিআই সূত্রে খবর, রোজ় ভ্যালি সংক্রান্ত ফাইলই নিয়ে এসেছেন তিনি। মনে করা হচ্ছে, সারদার পাশাপাশি রোজ় ভ্যালি চিটফান্ড নিয়েও জেরা করা হতে পারে পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে।শনিবার জেরা শুরু হওয়ার পরে, সিবিআইয়ের আরও একটি দল রাতে শিলংয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। রবিবার তাঁরা সেখানে গিয়ে অন্য অফিসারদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। অনেকের মতে, জেরার জন্য যে প্রস্তুতি প্রাথমিক ভাবে সিবিআই নিয়েছিল, জেরা শুরু করার পরে হয়তো মনে হয়েছে, তা যথেষ্ট নয়। হয়তো পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোচ্ছেন সিবিআই কর্তারা।টান টান উত্তেজনা রয়েই গেল,অপেক্ষার প্রহড় গুনছেন গোটা দেশের মানুষ৷