দেশের সময় , ওয়েবডেস্কঃ প্রাণহানি দিয়ে দিন শুরু হয়েছিল। বেলা বাড়তে সেই শীতলকুচিতেই বাড়ল মৃতের সংখ্যা। এ বার কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে সেখানে আরও ৪ ব্যক্তির প্রাণ গেল। মাথাভাঙা হাসপাতালে তাঁদের ময়নাতদন্ত চলছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে আরও ৪ ব্যক্তি জখম হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। নিহতরা সকলেই তাঁদের সমর্থক বলে দাবি তৃণমূলের। এলাকায় তুমুল উত্তেজনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাথাভাঙা ১ ব্লকের এই এলাকাটি শীতলকুচি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। শনিবার সকাল থেকেই বিচ্ছিন্ন গন্ডগোলে তেতে রয়েছে শীতলকুচি। বেলা দশটা নাগাদ এখানেই একটি বুথে গন্ডগোলের খবর পেয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়, তখন তাদের ঘিরে ধরে প্রায় চার পাঁচশো লোক। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ। তখনই গুলি চালায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় চারজনের। বাহিনী গুলি চালাতে শুরু করায় নিমেষে ফাঁকা হয়ে হয়ে যায় গোটা এলাকা।
ভোট শুরু হতেই শীতলকুচির পাঠানটুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ১৮ বছরের এক যুবকের। বেলা গড়াতেই ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। এরপর উত্তেজনা ছড়ায় জোরপাটকি এলাকায়। ১২৬ নম্বর বুথের বাইরে এলোপাথারি গুলি চলার অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় আরও তিনজনের। নির্বাচন কমিশন জানায় সিআরপিএফ জওয়ানদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। মৃতেরা প্রত্যেকেই তৃণমূলের সমর্থক বলে খবর। গোটা ঘটনায় রিপোর্ট তলব করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন৷
কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চারজনের মৃত্যুর খবর আসতেই তুমুল উত্তেজনা সৃষ্টি হয় জোড়পাটকি এলাকায়। কান্নার রোল ওঠে নিহতদের ঘরে ঘরে। দিনকয়েক আগেই কোচবিহারে নির্বাচনী সভা করতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে ফেলতে। উস্কানিমূলক কথা বলার জন্য নির্বাচন কমিশন শো-কজও করেছিল তাঁকে। আজ ভোটের দিন সেই ছবিই দেখা গেল জোড়পাটকিতে।
সকাল থেকেই বেশ কয়েকটি বুথে রিগিং এর অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে যাচ্ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। আচমকাই তাদের ঘিরে ফেলে তিন চারশো লোক। আত্মরক্ষার জন্যই তখন বাহিনী গুলি চালায় বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে।
এদিকে, বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের অভিযোগের তিরে শাসকদল। তাঁর কথায়, ‘দিনের পর দিন উত্তরবঙ্গে নির্বাচনী সভায় এসে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে সাধারণ ভোটাদের উস্কানি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের ঘেরাও করা, জিভ টেনে ছিঁড়ে নেওয়ার নিদান দেন মুখ্যমন্ত্রী। এখানেও জওয়ানদের প্ররোচনা দেওয়া হয়ে থাকতে পারে।’
যদিও শাসকদলের সমর্থকদের অভিযোগ, বিনা প্ররোচনাতেই গুলি চালিয়ে খুন করা হয়েছে সাধারণ ভোটারদের।
প্রসঙ্গত, প্রথম দফা ভোটের পরই আত্মরক্ষার স্বার্থে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে গুলি চালানোর অনুমতি দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। শীতলকুচিতেও সেই কারণেই তাঁরা গুলি চালিয়েছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে।