দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ জোড়াবাগানের নৃশংস ভাবে ধর্ষণ করে নাবালিকাকে খুন করার ঘটনায় একজন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে ধৃতের যোগ নিশ্চিত করতে তার ডিএনএ এবং হাতের ছাপ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেরা করা হচ্ছে তাকে। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ তদন্ত করছে খুঁটিয়ে।
গতকাল, বৃহস্পতিবার ৯ বছরের এক নাবালিকার গলা কাটা দেহ উদ্ধার হয় জোড়াবাগানে। বাচ্চাটি দিন তিনেক আগে শোভাবাজার থেকে এসেছিল, মামারবাড়িতে। বুধবার বিকেল থেকে নিখোঁজ থাকার পরে গতকাল সকালে মামারবাড়ির পাশেই একটি পরিত্যক্ত বহুতলের ছাদের সিঁড়িতে তাকে দেখতে পান এক এলাকাবাসী। তাঁর চিৎকার শুনেই সকলে ছুটে যান। দেখা যায়, নিখোঁজ বালিকা ওভাবে পড়ে রয়েছে। ঘনসন্নিবিষ্ট বসতি এলাকায় কী করে এমন খুন হল, কেন কেউ টেরটুকু পেলেন না, ভেবে পাচ্ছে না কেউ।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে মেয়েটির উপর পৈশাচিক নির্যাচন চালানো হয়েছে। বীভৎসতার প্রমাণ হাতে পেয়ে শিউরে ওঠছেন তদন্তকারীরাই। আততায়ীর মারধরে ভেঙে যায় বাচ্চা মেয়েটির চারটি দাঁত। মাথার পিছন থেকে টেনে উপড়ে তুলে ফেলা হয় চুল। এর পরে তাকে ধর্ষণ করা হয়। শেষে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে ফেলা হয় গলা। ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখার সময় ওই বাড়ির নীচের নর্দমা থেকে রক্তমাখা একটি ছুরিও উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। সেটিকেও পরীক্ষা করছে ফরেনসিক বিভাগ।
লালবাজার সূত্রের খবর, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে যৌন নির্যাতন এবং শ্বাসরোধের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এবার ধৃতের ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখা হবে নাবালিকার দেহে পাওয়া ডিএনএ–র সঙ্গে তার মিল রয়েছে কিনা।
তৃতীয় শ্রেণির ওই নিহত ছাত্রীর এক দিদি ও দাদা আছে। দিদির সঙ্গেই শোভাবাজার থেকে জোড়াবাগানের মামারবাড়িতে এসেছিল সে। খেলতে কেলতে হঠাতই হারিয়ে যায় মেয়েটি। কিন্তু ওই বহুতলে মেয়েটি কী করে ঢুকল, সেটাই অবাক করছে সকলকে। তাহলে কি তার পরিচিত কেউই তাকে নিয়ে গেছিল বাড়িটিতে? ফেলে দেওয়া যাচ্ছে না সে সম্ভাবনাও।
ঘটনার খবর পেয়েই পৌঁছন কলকাতার যুগ্ম কমিশনার মুরলীধর শর্মা, ডিসি উত্তর জয়িতা বসু এবং গোয়েন্দা বিভাগের ডিসি দেবস্মিতা দাস। হোমিসাইড বিভাগের কর্তারাও হাজির ঘটনাস্থলে। আসে ফরেনসিক ও কলকাতা পুলিশের সায়েন্টিফিক উইং। আনা হয় স্নিফার ডগও।২৪ ঘণ্টা পরে সন্দেহভাজন এক অভিযুক্ত ধরা পড়েছে। জেরা ও তদন্তে কী বেরোয়, সেটাই এখন দেখার।