বঙ্গে পাঁচটি রথযাত্রারপরিকল্পনা বিজেপির

0
828

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সেটা আটের দশকের শেষের দিক। রামজন্মভূমি আন্দোলনে দেশজুড়ে রথযাত্রা বের করেছিল বিজেপি। বলা হয়, ওই একটা কর্মসূচিই দেশের কোণায় কোণায় পৌঁছে দিয়েছিল বিজেপির নাম।
বাংলায় বিধানসভা ভোটের আগে সেই রথযাত্রারই পরিকল্পনা নিচ্ছে বিজেপি। গত শুক্রবার অমিত শাহের সঙ্গে রাজ্য বিজেপির নেতাদের বৈঠকে এ ব্যাপারে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে বলেও খবর।

বিজেপি সূত্রে জানা গেছে, পাঁচটি রথযাত্রা বেরোবে সারা রাজ্যে। যা ছুঁয়ে যাবে ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্র। ফেব্রুয়ারির দ্বিতী সপ্তাহে এই কর্মসূচি শুরু হতে পারে বলে খবর। চলতে পারে এক মাস।

রাজ্য বিজেপিতে ৫টি সাংগঠনিক জোন রয়েছে। উত্তরবঙ্গ, রাঢ়বঙ্গ, নবদ্বীপ, মেদিনীপুর ও কলকাতা। প্রাথমিক পরিকল্পনায় যা ঠিক হয়েছে তাতে প্রতিটি জোনে একটি করে রথ বার হবে। রবিবার কলকাতায় আইসিসিআর-এ রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে হাজির এক রাজ্য নেতা বলেছেন, ‘‘আলাদা আলাদা জায়গায় হলেও সবক’টির সূচনা হবে একই দিনে। রাজ্য নেতৃত্ব চাইছেন ফেব্রুয়ারি মাসে সেই রথের সূচনা করুন কোনও কেন্দ্রীয় নেতা। সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা বা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে রথযাত্রার সূচনায় হাজির করার উদ্যোগও শুরু হয়েছে। এমন ভাবনাও রয়েছে যে রাজ্যের কোথাও একই দিনে পাঁচটি রথ মিলিত হবে। আর সেই দিনও হবে বড় কোনও সমাবেশ। সেই সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থাকতে পারেন কি না, তাও ভাবনার মধ্যে রয়েছে।’’

ইতিমধ্যেই বিজেপি রাজ্যকে পাঁচটি জোনে ভাগ করে সাংগঠনিক দায়িত্ব বণ্টন সম্পন্ন করেছে। মনে করা হচ্ছে সেই জোন ভিত্তিতেই এই রথযাত্রার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

এর আগে লোকসভা ভোটের প্রাক্কালেও জায়গায় রথযাত্রা করার পরিকল্পনা করেছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু পুলিশ অনুমতি দেয়নি। আদালতে গড়িয়েছিল রথযাত্রা মামলা। রাজ্যের তরফে সেই সময়ে আদালতে বলা হয়েছিল, রথযাত্রা যে যে পথ দিয়ে যাবে সে পথে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি হতে পারে। রাজ্যের গোয়েন্দা রিপোর্টে তেমনই তথ্য উঠে এসেছিল বলে আদালতে জানিয়েছিল নবান্ন।

শেষপর্যন্ত সেই রথযাত্রা হয়নি। জায়গায় জায়গায় সমাবেশ করেছিল বিজেপি। এবার এই রথযাত্রা নিয়ে নবান্ন কী ভূমিকা নেয় এখন সেটাই দেখার।
ইতিমধ্যেই লিখিত বা অলিখিত সমন্বয় কমিটির তৈরি করে ফেলেছে বিজেপি। তাতে রয়েছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শিবপ্রকাশ, দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, সংগঠন সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী এবং শুভেন্দু অধিকারী। এঁদের মাথায় থাকবেন জেপি নাড্ডা এবং অমিত শাহ।
জানুয়ারির শেষে বাংলায় আসতে পারেন অমিত শাহ। ফেব্রুয়ারিতে রাজ্য দুবার আসতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তারপর মার্চে এসে ১৫ দিন থাকতে পারেন বলে খবর।

রবিবারের বৈঠকে রথ যে বের করা হবে তা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। সূত্রের খবর, রথের নাম কী হবে তা নিয়েও সকলকে মত জানাতে বলা হয়েছে। দলের একাংশ চায়, ‘পরিবর্তন যাত্রা’ নাম দেওয়া হোক। তবে একটাই নাম না দিয়ে জোন অনুযায়ী সাধারণ মানুষের আবেগকে গুরুত্ব দিয়ে রথের আলাদা আলাদা নাম দেওয়া যায় কি না সেই ভাবনাও রয়েছে। আবার জোনের মধ্যেও এলাকা অনুযায়ী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের আবেগকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রস্তাবও বৈঠকে রাখা হয়েছে। সূত্রের খবর, রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব বৈঠকে বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রের, বিভিন্ন জীবিকার মানুষের আবেগকেও রথযাত্রায় গুরুত্ব দেওয়া যায় কি না, তা জোন স্তরে আলোচনা করে জানাতে হবে। রথযাত্রার পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে না চাইলেও না চাইলেও রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূল সরকারকে বঙ্গোপসাগরে ফেলার জন্য যা যা করার দরকার সব করা হবে। নানা রকম পরিকল্পনা চলছে। রথযাত্রাও হবে।।’’

Previous articleসোমবার দিদির গড়ে শুভেন্দু, ‘‌দাদা’র গড়ে পাল্টা মমতা
Next articleবিধানসভা ভোটে বাংলায় প্রার্থী দেবে শিবসেনা, কিছুদিনের মধ্যেই কলকাতায় আসার ঘোষণা! তৃণমূলের পাশে দাঁড়াতেই সিদ্ধান্ত উদ্ধবের!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here