দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ : তৃণমূলের হাত ধরতেই পাহাড়ে ধীরে ধীরে নিঃসঙ্গ হতে শুরু করলেন বিমল গুরুং। অন্যদিকে গুরুং অনুগামীদের ক্ষোভ কাজে লাগিয়ে নিজেদের সংগঠন চাঙ্গা করতে মাঠে নেমে পড়ল বিজেপি। ঘরে-বাইরে এহেন চাপের মুখে কলকাতায় পাড়ি দিয়েছেন বিমল। তবে ঠিক কী কারণে তাঁর হঠাৎ কলকাতা যাত্রা তা অবশ্য জানা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিমল ঘনিষ্ঠ নেতা রোশন গিরি।
দীর্ঘ আত্মগোপনের পর সম্প্রতি রাজ্যের সঙ্গে বোঝাপড়া করে ফের প্রকাশ্যে আসেন বিমল গুরুং। বিজেপির হাত ছেড়ে তৃণমূলের হাত ধরে পাহাড়েও ফেরেন। তাঁর এই অবস্থান বদলে অনুগামীদের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দেয়। দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর আত্মগোপন করে থাকাকালীন যে নেতারা হাজারো চাপ, পুলিশি অত্যাচার সহ্য করেও গুরুংয়ের সঙ্গ ছাড়েননি সেই নেতারাও দোলাচলে পড়ে গিয়েছেন। আর এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগাতে সক্রিয় হয়ে ওঠে বিজেপি।
মঙ্গলবার শিলিগুড়ির কাছে মিলনমোড়ে এক সভায় বিজেপিতে যোগদান করলেন বিমল পন্থী মোর্চার মুখপাত্র বিপি বাজগাইন, দলের রাজনৈতিক উপদেষ্টা সরোজ থাপা, তরাইয়ের নেতা শঙ্কর অধিকারী, নারী মোর্চার নেত্রী সুষমা গুরুং প্রমূখ। যে ১০০ জন দলবদল করেছেন তাঁদের মধ্যে অন্তত ২৫ জন মোর্চার প্রথম সারির নেতা। হাজার প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এতদিন এঁরা গুরুংয়ের সঙ্গ ছাড়েননি। তাঁরা দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় বিমল যে পাহাড়ে অনেকটাই চাপে পড়লেন তা বলাই বাহুল্য। বিজেপির দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্ত বলেন, ‘‘পাহাড় সমস্যার সমাধান ও পাহাড়ের উন্নয়ন যে বিজেপি করতে পারে তা বুঝতে পারছেন অনেকেই। তাই তাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।’’
শিলিগুড়িতে তৃণমূল এবং সিপিএম এও বড় ভাঙনের ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। তবে পাহাড়ের দলবদল এর খেলা আলাদা মাত্রা পেয়েছে গুরুং ঘনিষ্ঠ আর এক নেতা লোপসাং লামার দলবদল এর জল্পনায়। ২০০৭ সাল থেকে বিমলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এই নেতা রাজু বিস্তের সঙ্গে দেখা করেছেন বলে জানা গেছে। বিমল সঙ্গ ছেড়ে তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে জল্পনা ছড়িয়েছে।
সর্বসমক্ষে আসার পর শিলিগুড়ি, দার্জিলিং, কালিম্পং এর জনসভায় গুরুংয়ের সঙ্গেই ছিলেন লোপসাং লামা। এহেন ঘনিষ্ঠ অনুগামীর দলত্যাগের জল্পনায় স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা দিশাহীন বিমল শিবির। এরইমধ্যে কালিম্পং এর যাবতীয় কর্মসূচি বাতিল করে গোপনে কলকাতা চলে গিয়েছেন বিমল গুরুং। সূত্রের খবর, কালিম্পং এ থাকাকালীন সংগঠনে তাঁর ঘনিষ্ঠ অনেকেই বিমলকে তৃণমূলের সঙ্গ ত্যাগ করতে অনুরোধ করেন। না হলে তাদের পক্ষে বিজেপিতে যোগদান ছাড়া অন্য কোনও পথ খোলা থাকবে না বলেও জানিয়ে দেন গুরুংয়ের বেশকিছু অনুগামী।
এরপরই নিজের যাবতীয় কর্মসূচি বাতিল করে কলকাতা পাড়ি দেন গুরুং। আপাতত তিনি কি করেন সে দিকেই নজর রয়েছে সকলের। তবে বসে নেই বিজেপিও। শরিকদের ওপর নির্ভর না করে পাহাড়ে নিজের পায়ে সংগঠন কে দাঁড় করাতে চাইছে বিজেপি। সেইমতো সক্রিয় হয়েছেন রাজু বিস্ত। সেই কাজে তিনি ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক কদম এগিয়ে গেছেন বলেই খবর।