দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বিহারে ভোটের পর কংগ্রেসের মধ্যে ক্রমশ দানা বাঁধছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। সোমবারই দলের প্রবীণ নেতা কপিল সিব্বল নেতৃত্ব নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন। বুধবার দলের অপর শীর্ষস্থানীয় নেতা পি চিদম্বরমও মুখ খুললেন। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে বিহারে বিধানসভা ভোট ও কয়েকটি রাজ্যের উপনির্বাচনে দেখা গেল, হয় কংগ্রেসের কোনও সংগঠন নেই অথবা থাকলেও তা রীতিমতো দুর্বল হয়ে পড়েছে।
কপিল সিবলের পর দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দেগে এবার সংবাদমাধ্যমে মুখ খুললেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম। বিহারে লজ্জাজনক ফলাফলের পর দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব ক্রমশ প্রকট হয়ে উঠছে। দৈনিক ভাস্কর–কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, রাজনীতির ময়দানে কংগ্রেস হয় সাংগঠনিক ভিত্তি হারিয়েছে, নয় ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়েছে! দু’দিন আগেই সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সিবল বলেছিলেন, ‘অন্তর্তদন্তের সময় শেষ। সংগঠনের প্রতিটি স্তরে বদল প্রয়োজন।
এমন নেতাদের সামনে নিয়ে আসা জরুরি, যাঁদের কথা লোকে শুনতে চায়। এমন একজন চিন্তক নেতার প্রয়োজন, যিনি দলীয় সংস্কারের জন্য বড় ঝুঁকি নিতেও রাজি। কংগ্রেসের পুনরুত্থানের জন্য দলের দায়িত্বভার এমন একজনের হাতে তুলে দেওয়া প্রয়োজন, যিনি অভিজ্ঞ এবং বাস্তব রাজনীতি সম্পর্কে সচেতন।’
চিদাম্বরম বলেন, ‘গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ এবং কর্নাটকে উপনির্বাচনের ফলাফল দেখে আরও বেশি উদ্বিগ্ন আমি।’ অতিমারী সঙ্কট এবং অর্থনৈতিক মন্দার দিনেও মানুষ কংগ্রেসকে ভরসা করতে পারছে না ভেবে চিন্তিত প্রবীণ কংগ্রেস নেতা। বলেন, ‘বিহারে মহাজোটের জেতার অনেক সম্ভাবনা ছিল। কেন হারলাম, তা নিয়ে দলের অন্দরে তদন্ত প্রয়োজন। ভুলে গেলে চলবে না, কয়েকদিন আগেও মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড় এবং ঝাড়খণ্ড জিতেছিল কংগ্রেস।’
একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে সংগঠনে জোর দিলে যে জেতা যায়, বিহারে তাই প্রমাণ করে দিল সিপিআইএমএল এবং মিমের মতো ছোটদলগুলি, বলছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, বিহারে অনেক বেশি আসনে লড়েছে কংগ্রেস। ২৫টা এরকম আসন যেখানে গত বিশ বছর ধরে বিজেপি কিংবা তাদের শরিকেরা জিতে আসছে। ওই আসনে লড়াই উচিত হয়নি কংগ্রেস। ৪৫টি আসনই যথেষ্ট ছিল।’
কংগ্রেসের দায়িত্ব গান্ধী পরিবারের বাইরে কোনও ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া উচিত কিনা, সে বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে সংযত চিদাম্বরম। বলেন, ‘সভাপতি কে হবেন, তা বৈঠকে ঠিক হবে। যে কেউ ভোটে লড়তে পারে।’ এবার আসন্ন তামিলনাড়ু, কেরল, পুডুচেরি, বাংলা এবং অসমের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে তিনি।