দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু তদন্তে মাদক-যোগ ক্রমেই ঘনীভূত হয়ে উঠছে। একের পর এক নাম জড়াচ্ছে বি-টাউন সেলিব্রিটিদের।
সোমবার রাতে একটি ইংরাজি সংবাদমাধ্যম সূত্রে দাবি করা হয়েছে, সুশান্ত মৃত্যু তদন্তে মাদক মামলায় বলিউড অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনকে ডেকে পাঠাতে পারে নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)। যদিও এই বিষয়ে দীপিকার কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি। প্রয়াত অভিনেতাকে মাদক সরবরাহের অভিযোগে ইতিমধ্যেই তাঁর বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করেছে এনসিবি। ধরা পড়েছে রিয়ার ভাই শৌভিক চক্রবর্তী ও অভিনেতার বান্দ্রার ফ্ল্যাটের ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডাও। সুশান্ত কাণ্ডে ইতিমধ্যেই ডাক পাঠানো হয়েছে বি-টাউনের আরও দুই অভিনেত্রী সারা আলি খান ও শ্রদ্ধা কাপুরকেও।
সূত্রের খবর, দীপিকার নাম জড়িয়েছে করিশ্মা নামে একজনের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের সূত্র ধরে। করিশ্মা কাওয়ান নামে এক ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির কর্মী। নিষিদ্ধ মাদক সরবরাহের জন্য এনসিবি-র তালিকার নাম উঠেছে করিশ্মার। আবার করিশ্মার সূত্র ধরেই বলিউডের আরও এক বিখ্যাত প্রযোজক মধু মন্টেনার নামও সামনে এসেছে। এই মন্টেনার ট্যালেন্ট হান্ট এজেন্সিতেই কাজ করে করিশ্মা।
বলিউডে একাধিক হিট ছবির প্রযোজনা করেছেন মন্টেনা। ‘গজনি’, ‘কুইন’, ‘উড়তা পঞ্জাব’, ‘সুপার থার্টি’-এর মতো প্রায় ২৫টি সুপারহিট ছবির প্রযোজনা করেছেন মন্টেনা। ভিভ রিচার্ডস ও নীনা গুপ্তার মেয়ে মাসাবার প্রাক্তন স্বামীও ছিলেন তিনি। আগামীকাল ২৩ সেপ্টেম্বর মন্টেনাকে তলব করেছে এনসিবি।
সুশান্ত সিংয়ের মৃত্যুর তদন্ত করতে গিয়েই কয়েকজন বলি তারকার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট হাতে আসে এনসিবির। তার মধ্যে ‘ডি’ ও ‘কে’ নামে দুটি অ্যাকাউন্ট থেকে সন্দেহজনক কিছু কথা চালাচালি হতে দেখেন এনসিবির তদন্তকারীরা। অনুমান মাদক সংক্রান্ত বিষয়েই কথা চলছিল দুটো প্রোফাইল থেকে। ২০১৭ সালের একটি হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট সামনে এসেছে এনসিবি-র যেখানে, ডি নামক অ্যাকাউন্ট থেকে কে অ্যাকাউন্টে মেসেজ গেছে ‘..মাল আছে কি?’
কে উত্তর দিয়েছে ‘আছে কিন্তু বাড়িতে। আমি এখন বান্দ্রার…’ কে ফের বলেছে ‘আমি অমিতকে জিজ্ঞেস করতে পারি যদি তুমি চাও’ এর উত্তরে ডি বলেছে, ‘হ্যাঁ দয়া করে বলো’ । এনসিবি-র অনুমান এই ডি আসলে দীপিকা এবং কে হল করিশ্মা।
গত মাসে এক রবিবাসরীয় সকালে সুশান্ত সিংয়ের ফ্ল্যাট থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। সেদিন থেকেই গোটা দেশ জুড়ে তরুণ এই অভিনেতাকে নিয়ে আবেগের স্রোত বয়ে গিয়েছিল। বলিউডের একাংশের পরিচালক-প্রযোজককে খলনায়ক সাব্যস্ত করার হিড়িক পড়ে গিয়েছিল সোশাল মিডিয়া। অভিযোগ উঠেছিল, সুশান্তের অবসাদের নেপথ্যে ছিলেন তাঁরাই। এই পরিস্থিতিতে সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি উঠেছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শেষ পর্যন্ত তা শুরু হয়। শুধু সিবিআই নয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ও পরে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোও তদন্তে নামে।
সুশান্ত মামলায় মাদক যোগে এর আগেও মুম্বই থেকে ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে এনসিবি। তারা হল করমজিৎ সিং আনন্দ, ডয়েন ফার্নান্ডেজ, সঙ্কেত পটেল, অঙ্কুশ আনরেজা, সন্দীপ গুপ্তা এবং আফতাব ফতেহ আনসারি। এদের সকলের বিরুদ্ধেই এনডিপিএস অ্যাক্টে মামলা রুজু হয়েছে। এদের মধ্যে করমজিৎ সিং আনন্দ মূলত ড্রাগের যোগান দিত বলে এনসিবি সূত্রে জানা গিয়েছে। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গেও বেশ ভালই যোগাযোগ ছিল করমজিতের।
অন্যদিকে ডয়েন ফার্নান্ডেজ কিউরেটেড মারিজুয়ানা এবং হাসিসের কারবার করত। রিয়া চক্রবর্তীর ভাই শৌভিকের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ফার্নান্ডেজের। এনসিবির তদন্তকারী আধিকারিকদের অনুমান, সম্ভবত সুশান্তের জন্য মাদকের যোগান দিত এই ডয়েন ফার্নান্ডেজ। এছাড়াও সঙ্কেত পটেল কাজ করত করমজিতের সঙ্গে। বলিউড সেলেবদের মাদকের যোগান দেওয়াই ছিল তার মূল কাজ।