দেশের সময়, পেট্রাপোল: দুর্গাপুজোর শুভেচ্ছা স্বরূপ ভারতে ১৪৫০ টন ইলিশ রপ্তানি করবে বাংলাদেশ, জানিয়েছে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রক। বাণিজ্য মন্ত্রক সূত্রের জানাগিয়েছে, বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই অন্তত দুই ট্রাকে ১২টন ইলিশ ঢুকবে এপার বাংলায়৷
এই বর্ষার মরশুম আর বৃথা যাবে না। রান্নাঘর থেকে ভেসে আসবে পদ্মার ইলিশের মন মাতানো সুগন্ধ। পশ্চিমবঙ্গে পদ্মার ইলিশ রফতানি করার ওপর থেকে সাময়িক ভাবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বাংলাদেশের মুখ্যমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তার জেরেই আজ সোমবার দুপুরে বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত পেরিয়ে এ রাজ্য ঢুকছে ১৪৫০ টন বাংলাদেশের ইলিশ। ২০১১-র পর থেকে এই বিপুল পরিমাণ বাংলাদেশের ইলিশ আর পশ্চিমবঙ্গে আসেনি। কারণ ২০১২-র জুলাই মাস থেকে ভারতে ইলিশ রফতানি করার ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকার। যে কয়েকটি বাংলাদেশি সংস্থা ভারতে ইলিশ মাছ রফতানি করার অনুমতি পেয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল সেভেন স্টার ফিশিং প্রসেসিং লিমিটেড। এই সংস্থার ডিরেক্টর কাজি আবদুল মান্নান জানান, ‘বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী মোট ৯টি কোম্পানিকে পশ্চিমবঙ্গে ১৪৫০ টন ইলিশ রফতানি করার অনুমতি দিয়েছেন। ১০ অক্টোবরের মধ্যে পুরো রফতানির প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে ফেলতে হবে। কারণ ১২ অক্টোবর থেকে আবার পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের ইলিশ রফতানির ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে যাচ্ছে।’
বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আমদানিতে অনুমতি দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাওড়া হোলসেল ফিশ মার্কেট অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সৈয়দ মাকসুদ আনওয়ার।ইতি মধ্যেই ইলিশ রফতানিতে কেন্দ্রীয় সরকারের সম্মতি চলে এসেছে বলে পেট্রাপোল শুল্ক দফতর সূত্রে জানাগিয়েছে।
দুর্গাপুজোর শুভেচ্ছা স্বরূপ ভারতে এই ইলিশ রপ্তানি করছে বাংলাদেশ, জানিয়েছে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রক। বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে সূত্রের খবর।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং স্টাফ ওয়েলফেয়ারের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন,এদিন ছয় টন ইলিশের প্রথম ট্রাক সীমান্ত পেরিয়ে এ দেশে ঢুকবে বলে জানা গিয়েছে, সেই মত কাগজ তৈরী রাখা হয়েছে সরকারি নিয়ম মেনে , এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা,দুদেশের শুল্ক বিভাগের কাগজ পত্রের কাজ সম্পূর্ণ হলেই পদ্মার ইলিশ এপার বাংলার বাঙালির হাতে আসতে আর কোন সমস্যা থাকবে না৷এই বছর পশ্চিমবঙ্গের বাজারে ইলিশের দেখা প্রায় নেই। এই রাজ্যের মত্স্যজীবীদের জালে এই বছর ইলিশ প্রায় ধরা পড়েনি বললেই চলে। ঠিক এর উল্টো ছবিটাই বাংলাদেশে। সেখানে এই বছর ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ জালে ধরা পড়ায় দাম কমেছে অনেকটাই। সেই কারণেই পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে শেখ হাসিনা সরকারের কাছে আবেদন করেছিলেন বাংলাদেশের মত্স্য ব্যবসায়ীরা। সেই আবেদনেই সাড়া দিয়ে নিষেধাজ্ঞা সাময়িক ভাবে প্রত্যাহার করে নিল বাংলাদেশ।
গত বছরও পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ রফতানিতে সামান্য ছাড় দিয়েছিল ঢাকা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় যোগ দিতে গত বছর এ দেশে আসার আগে ৫০০ টন ইলিশ পাঠানো হয়েছিল। এই বিষয়টিকে ‘ইলিশ-কূটনীতি’ আখ্যা দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা।