প্রতিরক্ষায় নজির গড়ল ভারত দেশের তৈরি হাইপারসনিক ক্রুজ ভেহিকলের সফল উৎক্ষেপণ

0
916

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ প্রতিরক্ষায় দেশীয় প্রযুক্তির জয়জয়কার। আত্মনির্ভর ভারত গড়ার লক্ষ্যে আরও এক ধাপ অগ্রগতি। ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের আরও একটি বড় সাফল্য হাতের মুঠোয় এল। আমেরিকা, চিন, রাশিয়ার মতোই হাইপারসনিক প্রযুক্তিতে দৃষ্টান্ত তৈরি করল ভারত। দেখিয়ে দিল সামরিক অস্ত্র তৈরির যে কোনও জটিল প্রক্রিয়া ও প্রযুক্তিতে ভারত কোনও অংশেই কম নয়।

প্রথমবারে সাফল্য তেমন মেলেনি। কিন্তু এবারে সব খামতি পুষিয়ে গেল। ওড়িশার উপকূলে ডক্টর আবদুল কালাম আইল্যান্ডের লঞ্চপ্যাড থেকে শব্দের চেয়েও দ্রুতগতিতে উড়ে গেল ‘হাইপারসনিক টেকনোলজি ডেমনস্ট্রেটর ভেহিকল’ (HSTDV) । শব্দের চেয়েও দ্রুতগামী সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বহনকারী এই ভেহিকলের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সফল হয়েছে বলেই জানা গেছে। ২০ সেকেন্ডে ৩০ কিলোমিটারের বেশি উচ্চতায় উড়ে গেছে হাইপারসনিক ক্রুজ ভেহিকল। এই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের নেতৃত্বে ছিলেন ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)-এর প্রধান সতীশ রেড্ডি ও হাইপারসনিক প্রযুক্তি সংক্রান্ত গবেষণার সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানীরা।

দেশীয় প্রযুক্তিতে অস্ত্র পরীক্ষার সাফল্যের কথা টুইট করে জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রীর আত্মনির্ভর ভারত গড়ার লক্ষ্যে আরও একধাপ এগিয়ে গেলাম আমরা। এই লক্ষ্যপূরণের জন্য ডিআরডিও-কে বিশেষ ধন্যবাদ। হাইপারসনিক প্রজেক্টের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। এই সাফল্যের জন্য তাঁদের অভিনন্দন জানাই। ভারত তাঁদের জন্য গর্বিত।”

হাইপারসনিক টেকনোলজি ডেমনস্ট্রেটর ভেহিকল’ হল একধরনের কেরিয়ার যা দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপাস্ত্রকে উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে। একধরনের স্ক্র্যামজেট এয়ারক্রাফ্ট যার কাজ শব্দের চেয়ে দ্রুতগামী ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রকে তার লক্ষ্যে পৌঁছে দেওয়া। ছোটখাটো স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের কাজেও লাগে এই ধরনের হাইপারসনিক কেরিয়ার। ডিআরডিও এই প্রযুক্তিতে কাজ করছিল কয়েক বছর ধরে।

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের স্ক্র্যামজেট এয়ারক্রাফ্টের উৎক্ষেপণের জন্য লাগে রকেট লঞ্চ বুস্টার। ওড়িশা উপকূল থেকে অগ্নি মিসাইল বুস্টার ব্যবহার করেই এই হাইপারসনিক ভেহিকলের উৎক্ষেপণ হয়েছিল।

ডিআরডিও জানাচ্ছে, এই ভেহিকলের স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার উচ্চতা অবধি অনায়াসে উড়ে যেতে পারে। ১ মেট্রিক টন ওজনের ভেহিকল প্রায় ১৮ ফুট লম্বা। স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন থাকে এর পেটের ভেতরে। ভেহিকলের বাইরের খোলস, তার ডানা সবই টাইটানিয়ামের তৈরি। এই ভেহিকলের সঙ্গে ক্রুজ মিসাইল যুক্ত করে উড়িয়ে দিলে মাঝপথে স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন চালু হয়ে যায়। 

মিসাইল সমেত বহু দূর অবধি পলকে উড়ে যেতে পারে এই ভেহিকল। গত বছর অগ্নি-১ রকেট মোটরের সাহায্যে হাইপারসনিক ভেহিকলের উৎক্ষেপণ হয়েছিল। কিন্তু স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিনের কিছু গাফিলতির জন্য পরীক্ষা সফল হয়নি। তাই এবার সেই ঘাটতি পূরণ করে নতুন করে পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করে ডিআরডিও। একবারেই সাফল্য মিলেছে বলে জানিয়েছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।

Previous articleজাতীয় শিক্ষানীতিতে অতিরিক্ত সরকারি হস্তক্ষেপ নয়, সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান মোদীর
Next articleদিল্লিতে ধৃত দুই খলিস্তানি জঙ্গি, উদ্ধার অস্ত্রশস্ত্র

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here