দেবস্মিতা মন্ডল,দেশের সময়: উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় প্রবল ঘূর্ণিঝড় আমপানের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২২ টি ব্লকের মধ্যে ১৯ টি ব্লক। সুন্দরবন লাগোয়া ব্লক সহ বনগাঁ,গাইঘাটা, বাগদা, হাবড়া ,আমডাঙার একাধিক এলাকায় কৃষকের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় ৪ লক্ষ ৯৫ হাজার কৃষিজীবী মানুষ রয়েছে। পরিবারের সংখ্যা প্রায় এক লক্ষ। ১ লক্ষ ৪০ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। গড় হিসাবে ৬o শতাংশ। ৮ লক্ষ ৫০ হাজার মেট্রিকটন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে বোরো ধান,তিল,পাট,পটল সহ বিভিন্ন ধরনের সবজি। বিশেষ করে পেঁপে ও কলা চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রধান ডক্টর বাবুলাল টুডু বলেন কৃষকদের অপূরণীয় ক্ষতি সত্বেও আগামীদিনে কিভাবে তাঁরা চাষাবাদ করবেন সে সম্পর্কে একটি রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে।। জেলা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র সুত্রে জানা গেছে আগামী দিনে কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি নতুন ধরনের ফসলের বীজ বিতরন করা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা দ্রুত ফসল ফলিয়ে আবার অর্থনৈতিক ভাবে সাবলম্বী হতে পারে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। গত কয়েক দিনে কৃষি বিজ্ঞানীরা বনগাঁ, গাইঘাটা, হাবড়া সহ একাধিক এলাকা পরিদর্শন করেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কৃষকদের সাথে কথা বলেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমপান–পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শনিবার বনগাঁয় আসেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধায়। ঝড়ে বিধ্বস্ত বনগাঁ মহকুমার ক্ষত সারিয়ে তুলতে সরকারি দপ্তরের পদক্ষেপের বিষয়ে খোঁজ খবর করেন তিনি।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহকুমা এবং ব্লক প্রশাসনের মাধ্যমে পুরসভা এবং পঞ্চায়েতগুলিতে পর্যাপ্ত ত্রিপল–সহ অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে ক্ষতিগ্রস্ত মানু্ষের হাতে ত্রাণ পৌঁছে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি যে সব বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং যে সব কৃষকের ফসলের ক্ষতি হয়েছে, সরকারি নির্দেশে পঞ্চায়েত ধরে ধরে তার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে, যাতে পরে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরকারি অর্থসাহায্য পেতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী মৎস্যসম্পদ যোজনার মাধ্যমে মৎস্য চাষীদের সংকট মোচনের জন্য একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জেলা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের মৎস্যবিজ্ঞানী অনিন্দ্য নায়েক জানিয়েছেন।
ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে মাছ চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে জলাশয় গুলিতে গাছপালার পাতা পড়ে জল নষ্ট হয়ে গেছে সুন্দরবন লাগোয়া ব্লগগুলিতে নোনা জল ঢুকে পুকুরের জল নষ্ট হতে শুরু করেছে৷ প্রচুর মাছ ইতিমধ্যে নষ্ট হতে শুরু করেছে৷ এমনিতেই লকডাউন এর ফলে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাস মাছের কৃত্রিম ডিম পোনা উৎপাদন করা যায়নি তারপর পরপর দুটি ঝড়ে ক্ষতির পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে বহু গুণ।অর্থনৈতিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন মৎস্যজীবীরা।