দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: গোটা এলাকার অভিযোগ ছিল ওই কারখানা ঘিরে। এক বছর আগেও একটি বিস্ফোরণ প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল পাঁচ জনের। এবার যেন ফের সেই ঘটনাই আরও এক বার ঘটে গেল। তবে তীব্রতা ও প্রাবল্য কয়েক গুণ বেশি। এখনও পর্যন্ত চার জন ঝলসে মারা গেছেন বলে জানা গেছে নৈহাটির বাজি কারখানার বিস্ফোরণে। লাফিয়ে বাড়ছে আহতের সংখ্যা।
তবে অভিযোগ থাকলেও, এলাকার বহু মানুষের অন্ন সংস্থানও হতো ওই কারখানা থেকেই। বিশেষ করে নিম্নবিত্ত পরিবারের মহিলা ও শিশুরা কাজ করত ওই কারখানায়। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ যখন এলাকা কাঁপিয়ে দেওয়া বিস্ফোরণটি ঘটে, তখন চালুই ছিল কারখানা। কাজ করছিলেন বহু শ্রমিক। ফলে হতাহতের সংখ্যা যে নেহাৎ কম হবে না, তা সহজেই অনুমেয়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার অঞ্চলজুড়ে মৃদু ভূকম্পন অনুভূত হয়। শুধু তাই নয়, গঙ্গার অন্য পারের হুগলির বাসিন্দারাও কেঁপে ওঠেন বিস্ফোরণে। চুঁচুড়ার প্রেমনগর, আখনবাজার-সহ একাধিক এলাকার মানুষ জানিয়েছেন, তাঁরাও কম্পন অনুভব করেছেন। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন দু’পাড়ের বাসিন্দা।
হুগলির এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, দুপুর তখন সাড়ে ১২টা হবে। পরপর তিনটে বড় বিস্ফোরণের শব্দ শুনলাম, তার পরেই সিরিয়ালি চলল পরপর শব্দ। শুনে মনে হচ্ছিল যেন মেশিনগান চলছে। প্রায় ১৫ মিনিট ধরে চলছিল বিস্ফোরণ। বাড়ি কেঁপে ওঠে, রাস্তায় বেরিয়ে আসি আমরা। পাড়ার সবাই আমাদের মতোই ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসে। এত জোরে ব্লাস্ট, আমরা বলাবলি করছিলাম প্লেন ভেঙে পড়ল নাকি। তার পরে আলোচনা হচ্ছিল, ভাটপাড়ার জন্য নৈহাটিতে প্রায়ই গোলমাল লেগে থাকে। সেরকমই গোলাগুলি চলছে বুঝি। বাজি কারখানার বিস্ফোরণ বলে বুঝিইনি আমরা। কত বারুদ থাকে যে এমন শব্দ হবে! এ তো যেন খাগড়াগড় টু!”
ঘটনাস্থলের রয়েছে নৈহাটি থানার পুলিশ ও দমকল। পুলিশ গোটা এলাকা ঘিরে রেখেছে, ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না কাউকে। অভিযোগ উঠেছে, ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির খবর চাপা দিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে এলাকার শাসক দল আশ্রিত নেতারাও। তবে প্রশাসন সুত্রে এখনও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।