দেশের সময়:পেট্রাপোল : পুজোর মরশুমেই ৭ দিনে মোট ৫০০ টন বাংলার ইলিশ এসেছে এই রাজ্যে। গত বুধবার ৩০টি ট্রাকে মোট ১৫০ টন বাংলার ইলিশ সীমান্ত পেরিয়ে এরাজ্যে আসে।
দুর্গাপুজোর প্রাককালে সরকারিভাবে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করেছিল, শারদোৎসব উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ৫০০ টন ইলিশ রপ্তানি করার অনুমতি দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশ ভরা ট্রাক এসে পৌঁছয় বেনাপোল সীমান্তে। সরকারি নিয়মের কাজ শেষ করে দীর্ঘ ৭ বছর অপেক্ষার পর অবশেষে বাঙালির চির আকাঙ্ক্ষিত বাংলার ইলিশ ভরা ট্রাক সেদিনই বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের পেট্রাপোল সীমান্তে এসে পৌঁছয়।
সেখান থেকে ট্রাক বদল করে রাতেই সেই ইলিশ মাছ পৌঁছে যায় কলকাতা এবং হাওড়ার পাইকারি বাজারে। পশ্চিমবঙ্গের হিলসা ফিশ ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদের কথায়, ‘বাংলাদেশ থেকে আসা এই ইলিশের গড় ওজন ৮০০ গ্রাম থেকে ১ কিলোগ্রাম। কলকাতা, হাওড়া এবং শিলিগুড়ির পাইকারি বাজার থেকে এই মাছ রাজ্যের বিভিন্ন খুচরো বাজারে পৌঁছে যাচ্ছে।
শারদোৎসব উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী প্রথম দিন পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ৮টি ট্রাকে মোট সাড়ে ৩০ টন পদ্মার এই রুপোলি শস্য এই রাজ্যে আসে। পুজোর মুখে ইলিশ প্রিয় বাঙালির কাছে এই খবরে মুখে হাসি ফুটেছিল।
ভারতের ইলিশ আমদানিকারি সংস্থার পক্ষে ক্লিয়ারিং এজেন্ট ফিরোজ মণ্ডল জানান, ‘অষ্টমী থেকে দশমী এই তিনদিন বাদে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত গত ৭ দিনে মোট ৫০০ টন ইলিশ বাংলাদেশ থেকে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে এসেছে।’ বছর কয়েক আগেও বাংলাদেশ থেকে নিয়মিত আসত ওপার বাংলার ইলিশ। সেই সময় বছরে গড়ে ৬ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আসত রাজ্যে। যার বেশির ভাগটাই ঢুকত পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে। ২০১২ সালের ৩০ জুলাই বাংলাদেশ থেকে ভারতে শেষ ওপার বাংলার ইলিশ ঢুকেছিল।
তার পর বাংলাদেশ সরকারের নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ হয়ে যায় বাংলার ইলিশের রমরমা কারবার। তাতে একদিকে যেমন ইলিশপ্রিয় বাঙালি পদ্মার ইলিশের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হন, অন্যদিকে বড় আর্থিক ধাক্কা নেমে আসে মৎস্য ব্যবসায়ীদের ওপর। এর পর থেকে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে অনেক চেষ্টা করেও বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আনানো সম্ভব হয়নি।
অবশেষে সাময়িকভাবে মন গলে বাংলাদেশ সরকারের। ৩০ সেপ্টেম্বর প্রথম চালানে সাড়ে ৩০ টন ইলিশ ঢোকে এরাজ্যে।আর তাতেই স্বাদ মেটান আম বাঙালি।