দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃগোটা দেশে লকডাউনের মেয়াদ আরও উনিশ দিন বাড়িয়ে দিল কেন্দ্র নরেন্দ্র মোদী সরকার। মঙ্গলবার নববর্ষের দিন সকালে জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়ে দিলেন গোটা দেশে লকডাউন চলবে ৩ মে পর্যন্ত।
গত শনিবার সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ওই বৈঠকের পরই বাংলায় লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে ৩০ এপ্রিল করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তা ৩০ এপ্রিলের থেকে আরও তিন দিন বাড়িয়ে দিয়েছেন।


এদিন জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী দিনে আরও কঠোরভাবে লকডাউনের শর্ত পালন করতে হবে। তবেই সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি কমবে। পাশাপাশি অবশ্য আরেকটি ইতিবাচক বার্তা দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, দেশের যে সব জায়গায় আগামী দিনে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি কম মনে হবে, সেখানে ২০ এপ্রিলের পর লকডাউনের শর্ত কিছুটা শিথিল করা হবে। তবে তা অবশ্যই শর্ত সাপেক্ষে। কিন্তু যদি দেখা যায়, তাতে আবার সংক্রমণ ছড়ানোর পরিস্থিতি বা আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে, তা হলে ফের কঠোরভাবে সেখানে লকডাউন মানা হবে।

প্রধানমন্ত্রী এ দিন বলেন, সারা দেশ থেকে একটাই পরামর্শ আসছে, করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় লকডাউন বাড়ানো হোক। সেই কারণেই আগামী ৩ মে পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানো হচ্ছে। ৩ মে পর্যন্ত আপনারা সবাই ঘরে থাকুন। লকডাউনের নিয়ম কঠোর ভাবে মেনে চলুন।
লকডাউনের জেরে খাদ্যসঙ্কট তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দেশে ওষুধ, খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া কোভিড-১৯ এর মোকাবিলায় দেশে ৬০০ হাসপাতাল তৈরি রয়েছে। সেই সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ছোট উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানিয়ে মোদী বলেছেন, ‘‘কাউকেই যেন এই সঙ্কটের সময় চাকরি থেকে বরখাস্ত না করা হয়।’’

অন্য দিকে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার ইঙ্গিতও মিলেছে প্রধানমন্ত্রীর কথায়। চালু হতে পারে শর্তাধীন যাতায়াত। নরেন্দ্র মোদী এ দিন বলেন, ‘‘এই সময় রবিশষ্য কাটার মরশুম চলছে। ফলে কৃষকদের যতটা সম্ভব ছাড় দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে।’’ এর থেকেই পর্যবেক্ষকদের অনুমান, কৃষিক্ষেত্রের একটা বড় অংশ ছাড় দেওয়া হতে পারে।

প্রধানমন্ত্রীর কথায় ২৪ মার্চ লকডাউন ঘোষণার জেরে রাতারাতি কর্মহীন হয়ে পড়েছেন বহু দিনমজুর, শ্রমিক। পরিযায়ী শ্রমিকরা আটকে পড়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘যাঁরা প্রতিদিন রোজগার করেন এবং সেই টাকায় তাঁদের সংসার চলে, তাঁদের জন্যই সবচেয়ে বেশি চিন্তা। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই নতুন গাইডলাইন তৈরি হয়েছে।’’ অর্থাৎ এই ক্ষেত্রেও কিছুটা ছাড় মিলতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে।

এক নজরে: কী বলছেন প্রধানমন্ত্রী :

• ৩ মে পর্যন্ত লকডাউনের নিয়মকানুন মেনে চলুন

• এগুলো নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করুন

• যাঁরা সেবার কাজে নিয়োজিত, চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী সবার সম্মান করুন, ওঁদের জন্য গর্ব করুন

• ছোট উদ্যোক্তাদের বলছি, কাউকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করবেন না

• যতটা সম্ভব গরিব পরিবারের দেখভাল করুন, তাঁদের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করুন

• করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় আরোগ্য সেতু মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করুন

• ইমিউনিটি বাড়ানোর জন্য আয়ুষ মন্ত্রকের নির্দেশিকা মেনে চলুন

• লকডাউন আর সোশ্যাল ডিসট্যান্সের লক্ষ্মণরেখা পুরো মেনে চলুন, মাস্ক পরুন

• বাড়ির প্রবীণ সদস্যদের বিশেষ খেয়াল রাখুন, বিশেষ করে যাঁদের আগে থেকে সমস্যা রয়েছে

• শেষ করার আগে আপনাদের সাহায্য চাই

• আমরা এটাই চাই

• করোনার ভ্যাকসিন বানানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ুন

• ভারতের যুব বিজ্ঞানীদের কাছে আমার আর্জি, আপনারা এগিয়ে আসুন মানবকল্যাণে

• সেই সংখ্যা আরও বাড়ানোর চেষ্টা চলছে

• দেশে ৬০০-রও বেশি হাসপাতাল তৈরি রয়েছে কোভিড-১৯ মোকাবিলার জন্য

• ২০ এপ্রিল থেকে চলাফেরা চালুর সম্ভাবনা

• ওষুধ থেকে খাদ্যশষ্য, দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত রয়েছে

• কৃষকদের যতটা সম্ভব ছাড় দেওয়ার চেষ্টা চলছে

• এই সময় রবিশষ্য কাটার কাজ চলছে

• নতুন গাইডলাইনে সেই বিষয়টি মাথায় রাখা হয়েছে

• যাঁরা দিন আনে দিন খায়, তাঁদের জন্যই সবচেয়ে বেশি চিন্তা

• কাল (মঙ্গলবার) এ বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশিকা জারি হবে

• হটস্পটগুলিতে বাইরে বেরনোর উপর কড়া নিয়ন্ত্রণ থাকবে

• নতুন হটস্পট হলে আমাদের দায়িত্ব ও পরীক্ষা আরও বেড়ে যাবে

• যে স্থানগুলি হটস্পটে পরিণত হতে পারে, সেগুলির উপরেও কড়া নজর রাখতে হবে

• হটস্পটগুলিকে নির্ধারিত করে আগের থেকেও আরও কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে

• করোনার এই ভাইরাসে মৃত্যু হলে আমাদের চিন্তা বেড়ে যায়

• ৩ মে পর্যন্ত সবাই ঘরেই থাকুন

• ৩ মে পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে লকডাউন

• সারা দেশ থেকে একটাই পরামর্শ আসছে, লকডাউন বাড়ানো হোক

• সারা বিশ্বে অনেক আলোচনা চলছে, দেশেও চলছে

• সামাজিক দূরত্ব ও লকডাউনের লাভ পেয়েছে দেশ

• আর্থিক দৃষ্টিতে দেখলে এর জন্য দেশকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে

• কিন্তু দেশবাসীর জীবনের কাছে এই ক্ষতি কিছুই নয়

• ভারত যে পথে হেঁটেছে তা নিয়ে দুনিয়ার সকলে চর্চা করছে

• রাজ্য সরকারগুলিও অনেক দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেছে

• ২৪ ঘণ্টা ধরে চেষ্টা করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গিয়েছে

• ভারত সমস্যা বাড়ার অপেক্ষা করেনি

• সমস্যা দেখেই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে ঠেকানোর চেষ্টা করেছিল

• এটা এমন সঙ্কট যে কোনও দেশের সঙ্গেই তুলনা করা যায় না

• তবুও দুনিয়ার বড় বড় দেশের সঙ্গে পরিসংখ্যান বিচার করলে ভারত তুলনামূলক ভাবে অনেক ভাল অবস্থানে রয়েছে

• করোনা পরিসংখ্যানের ক্ষেত্রে কিছু দিন আগেও যে সব দেশের সঙ্গে ভারত এক আসনে ছিল সেখানে এখন মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি

• ভারতে সারা বছরই প্রচুর উত্সব চলে। যেমন পয়লা বৈশাখ, তাও দেশবাসী ঘরে থেকে লকডাউন পালন করছেন।

• অনেকেই ঘর-পরিবার ছেড়ে দূরে রয়েছেন।

• আপনাদের ত্যাগের জোরে ক্ষতি অনেকটা সামলানো গিয়েছে।

• করোনার বিরুদ্ধে লড়াই ভারত এগিয়ে নিয়ে চলেছে।

• লকডাউনের সময় দেশের মানুষ অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন

• অনেকেই ঘর ও পরিবারের থেকে অনেক দূরে রয়েছেন

• কিন্তু আপনারা দেশের স্বার্থে এক জন সেনার মতোই কাজ করে গিয়েছেন

• আপনারা উৎসবের সময়েও সংযম দেখিয়েছেন

• এটা খুবই প্রশংসার যোগ্য

• দেশে করোনা সংক্রমিত দেশ থেকে আসা যাত্রীদের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল আগেই

• ওই সব দেশ থেকে আসা মানুষদের কোয়রান্টিনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here